ওয়ালটনের আকর্ষণীয় ডিভিডেন্ড ঘোষণা, সুদৃঢ় নেতৃত্বে মুনাফা বেড়েছে ৫৭৩.৮৫ কোটি টাকা
অপরাজেয় বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫:৫৫ পিএম, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ শনিবার
নানা প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য এযাবৎকালের সর্বোচ্চ ক্যাশ ডিভিডেন্ড বা নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে পুঁজিবাজারে প্রকৌশল খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ‘ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি’।
গত ৩০ জুন, ২০২৪ তারিখে সমাপ্ত হিসাব বছরে কোম্পানিটির মুনাফা আগের বছরের তুলনায় ৫৭৩.৮৫ কোটি টাকা বেড়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আলোচিত বছরের জন্য কোম্পানিটি সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ৩৫০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। অর্থাৎ শেয়ার প্রতি ৩৫ টাকা লভ্যাংশ পাচ্ছেন ওয়ালটনের সাধারণ বিনিয়োগকারীরা, যা এযাবৎকালে সর্বোচ্চ। এর আগে ২০২২-২৩ অর্থবছরে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য ৩০০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছিল ওয়ালটন। তবে, কোম্পানিটির উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের জন্য ২০০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়েছে। অর্থাৎ ওয়ালটনের উদ্যোক্তা ও পরিচালকরা শেয়ার প্রতি ২০ টাকা লভ্যাংশ পাবেন।
বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪) অনুষ্ঠিত কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের ৪০তম সভায় ২০২৩-২৪ হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর লভ্যাংশ প্রদানের এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
কোম্পানি সূত্রে জানা গেছে, ঘোষিত লভ্যাংশ ও অন্যান্য বিষয়াদি শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদনের লক্ষ্যে কোম্পানিটির ১৮তম বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) আগামী ২৯ অক্টোবর, ২০২৪ তারিখে হবে। এর জন্য রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪।
প্রকাশিত প্রতিবেদনের তথ্য মতে, সদ্য সমাপ্ত হিসাব বছরে কোম্পানির অপারেটিং প্রফিট মার্জিন বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি বিক্রয়ের বিপরীতে আর্থিক ব্যয় হ্রাস পেয়েছে। ফলে, ২০২৩-২৪ হিসাব বছরে কোম্পানিটির মুনাফা হয়েছে ১,৩৫৬.৫৩ কোটি টাকা। যেখানে আগের হিসাব বছরের একই সময়ে প্রতিষ্ঠানটির মুনাফা হয়েছিল ৭৮২.৬৮ কোটি টাকা। সেই হিসেবে আলোচ্য সময়ে প্রতিষ্ঠানটির মুনাফা ৫৭৩.৮৫ কোটি টাকা বেড়ে ৭৩.৩২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৩-২৪ হিসাব বছরে ওয়ালটনের শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৪৪.৭৮ টাকা, যা পূর্ববর্তী হিসাব বছরে ছিল ২৫.৮৪ টাকা।
এছাড়াও ৩০ জুন, ২০২৪ তারিখ শেষে পুনর্মূল্যায়ন ব্যতীত কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) আগের বছরের চেয়ে ১৪.৭৩ শতাংশ বেড়ে ২৭৭.৮৬ টাকায় দাঁড়িয়েছে। আলোচ্য সময়ে পুনর্মূল্যায়নসহ এনএভিপিএস-এর পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩৭৯.৩০ টাকা। এর পরিমাণ ৩০ জুন, ২০২৩ তারিখে ছিল ৩৪৩.৭৩ টাকা।
৩০ জুন, ২০২৪ তারিখে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নেট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো (এনওসিএফপিএস) দাঁড়িয়েছে ৫৬.৯৬ টাকা, যা আগের হিসাব বছর শেষে ছিল ১১১.৮৪ টাকা। মূলত, সদ্য সমাপ্ত হিসাব বছরে বিগত বছরের তুলনায় সরকারি কোষাগারের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানের সরবরাহকারীদের অর্থ প্রদানের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় এনওসিএফপিএস হ্রাস পেয়েছে। যদিও আলোচ্য সময়ে প্রচুর পরিমাণ কাঁচামাল ক্রয়ের কারণে টেকসই বিক্রয় প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে।
কোম্পানি সূত্রে জানা গেছে যে, নানা রকম প্রতিকূলতা সত্বেও কোম্পানির দক্ষ ম্যানেজমেন্ট বিভিন্ন খাতে পরিচালন ব্যয় হ্রাস করার কারণে কোম্পানির বিভিন্ন আর্থিক সূচকেও ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। এছাড়াও, দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক বাজারে ব্যবসা সম্প্রসারণের কারণেও কোম্পানির বিক্রয় বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে মুনাফাও কাঙ্ক্ষিত হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। কোম্পানির সার্বিক ব্যবসায়িক সাফল্যে পরিচালনা পর্ষদ সন্তোষ প্রকাশ করেছে এবং ম্যানেজমেন্টকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছে। এছাড়া, বিগত বছরের মতো আগামী বছরগুলোতেও কোম্পানিটি মুনাফা বৃদ্ধির ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে সক্ষম হবে বলে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেছে ওয়ালটন কর্তৃপক্ষ।