আত্মসমর্পণের পরেও গুলি করে মারা হয় ইউক্রেনীয় সেনাদের
ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯:০০ পিএম, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ শুক্রবার
তিন সেনা ধুলায় ঢাকা রাস্তার ওপর হাঁটু গেড়ে বসে আছেন, হাত মাথার পেছনে রাখা। কিছুক্ষণ পরেই তারা মাটিতে লুটিয়ে পড়েন, নিস্তেজ ও অনড়। ড্রোনে ধারণ করা একটি ভিডিওতে এই দৃশ্য ধরা পড়ে। সিএনএনের খবর।
ভিডিওটি সিএনএনের হাতে পৌঁছেছে। এই ভিডিও ধারণ করা হয়েছিল গত আগস্ট মাসের শেষ দিকে, পূর্ব ইউক্রেনের পোকরোভস্ক শহরে। সেখানে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে সংঘর্ষ চলছে। ভিডিওতে দেখা তিনজন ইউক্রেনীয় সেনা, যাদের রাশিয়ান সেনারা হত্যা করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গত নভেম্বর থেকে সিএনএনকে এমন ১৫টি ঘটনার তালিকা দিয়েছে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। বেশিরভাগ ঘটনা ড্রোনের ভিডিও বা অডিও ক্লিপ থেকে প্রাপ্ত। সূত্রগুলো জানাচ্ছে, রুশ সেনারা যুদ্ধক্ষেত্রে আত্মসমর্পণ করা ইউক্রেনীয় সেনাদের বন্দী না করে হত্যা করছেন, এবং এই ধরনের হত্যাকাণ্ডের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।
ইউক্রেনের প্রসিকিউটর জেনারেল আন্দ্রি কস্তিন জানান, যুদ্ধের শুরু থেকে তার কার্যালয় ২৮টি এমন ঘটনা তদন্ত করছে, যেখানে ৬২ জন ইউক্রেনীয় সেনা নিহত হয়েছেন। পোকরোভস্কের ঘটনায় নিহত তিনজন সেই তালিকার অংশ।
ইউক্রেনীয় সেনারা কুরস্ক অঞ্চলে অভিযানে বড় সাফল্য পেয়েছেন, তবে রুশ বাহিনী এখনো পোকরোভস্কের কৌশলগত সামরিক ঘাঁটির দিকে অগ্রসর হচ্ছে। আত্মসমর্পণ করা ইউক্রেনীয় সেনাদের হত্যাকে যুদ্ধাপরাধ হিসেবে উল্লেখ করেছেন আন্দ্রি কস্তিন। তার মতে, আত্মসমর্পণের পর নিরস্ত্র সেনাদের হত্যা করা একটি সুস্পষ্ট যুদ্ধাপরাধ।
কিয়েভের সামনে মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে এই হত্যাকাণ্ডগুলোকে তুলে ধরার সুযোগ রয়েছে। প্রসিকিউটর জেনারেল বলেন, রুশ সামরিক বাহিনীর কয়েকটি দল এসব হত্যার সঙ্গে জড়িত, এবং এর পেছনে ক্রেমলিনের নির্দেশ রয়েছে।
সিএনএনকে দেওয়া একটি ড্রোন ভিডিওতে দেখা যায়, তোরেৎস্ক শহরে তিনজন ইউক্রেনীয় সেনা আত্মসমর্পণ করার পর রুশ বাহিনী তাদের গুলি করে হত্যা করে।
একইভাবে, রোবোতিন গ্রামের একটি ভিডিওতে দেখা যায়, আত্মসমর্পণ করা তিন ইউক্রেনীয় সেনাকে মাটিতে শুয়ে থাকতে বলার পর গুলি করে হত্যা করা হয়। একটি অডিও ক্লিপে, এক রুশ সামরিক কর্মকর্তা তার অধীনস্থকে ইউক্রেনীয় সেনাদের হত্যা করতে নির্দেশ দেন।
এই হত্যাকাণ্ডগুলোকে মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে আখ্যা দিয়ে কিয়েভ আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে রাশিয়ার বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ আনার চেষ্টা করছে। ইউক্রেনে জাতিসংঘের বিশেষ র্যাপোর্টিয়ার মরিস টিডবল-বিঞ্জ যুদ্ধক্ষেত্রে বিচারবহির্ভূত হত্যার ঘটনা নিরীক্ষা করেছেন এবং এই হত্যাকাণ্ডগুলোকে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।