এমপক্স-কে ‘বৈশ্বিক জরুরি স্বাস্থ্য অবস্থা’ ঘোষণা করলো ডব্লিউএইচও
ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১:৪০ পিএম, ১৫ আগস্ট ২০২৪ বৃহস্পতিবার
আফ্রিকার কয়েকটি অংশে আশঙ্কাজনকভাবে এমপক্সের প্রাদুর্ভাব বেড়েছে। এটি বিশ্বব্যাপী উদ্বেগ তৈরি করায় ‘বৈশ্বিক জরুরি স্বাস্থ্য অবস্থা’ বা পিএইচইআইসি ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। বুধবার (১৪ আগস্ট) একটি জরুরি কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে এই ঘোষণা দেন তিনি। এক প্রতিবেদনে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এই খবর জানিয়েছে।
এ নিয়ে দুই বছরের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো এমপক্সকে বৈশ্বিক জরুরি স্বাস্থ্য অবস্থা ঘোষণা করলো ডব্লিউএইচও। পিএইচইআইসি অবস্থা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সর্বোচ্চ স্তরের সতর্কতা। কোনও একটি রোগকে নিয়ন্ত্রণের জন্য গবেষণা, তহবিল ও বিশ্বব্যাপী জনস্বাস্থ্য পদক্ষেপে গতি আনার জন্য এই সতর্কতা জারি করা হয়।
এর আগে, মাংকিপক্স হিসেবে পরিচিত অত্যন্ত সংক্রামক এই রোগের প্রাথমিক প্রাদুর্ভাব চলাকালে ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোতে (ডিআরসি)অন্তত ৪৫০ জনের মৃত্যু হয়।
ভাইরাসজনিত এ সংক্রমণ ডিআর কঙ্গোর পর এখন মধ্য ও পূর্ব আফ্রিকার বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পড়েছে। রোগটির নতুন এই ধরনে উচ্চ মৃত্যুহারের ঝুঁকি রয়েছে। তাই এটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন বিজ্ঞানীরা।
আফ্রিকার ভেতরে ও বাইরে রোগটি ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রোস আডানম গেব্রিয়াসিস। একে ‘খুবই উদ্বেগজনক’ বলে অভিহিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘এই প্রাদুর্ভাব প্রতিরোধ ও জীবন রক্ষার করতে একটি সমন্বিত আন্তর্জাতিক উদ্যোগ প্রয়োজন।’
প্রতিবেদনে বলা হয়, এমপক্স আক্রান্ত ব্যক্তির সঙ্গে যৌন সম্পর্ক, স্পর্শ ও অপর ব্যক্তির খুব কাছে গিয়ে কথা বলা বা নিঃশ্বাস নেওয়ার মতো ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শের মাধ্যমে ছড়ায়।
এই রোগের সংক্রমণে জ্বরের মতো লক্ষণ দেখা দেয় ও চামড়ায় ক্ষত তৈরি হয়। এটি প্রাণঘাতীও হতে পারে। এই রোগে আক্রান্ত প্রতি ১০০ জনের মধ্যে অন্তত চারজনের মৃত্যু হয়।
ভ্যাকসিনের মাধ্যমে সংক্রমণ প্রতিরোধ করে প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে। তবে এগুলো সাধারণত শুধু ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের জন্য বা যারা সংক্রামিত ব্যক্তির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ করেন তাদের জন্য।
এমপক্সের দু’টি ধরন রয়েছে: ক্লেইড ১ ও ক্লেইড ২।
এর আগে, ২০২২ সালে ক্লেইড ২ এর তুলনামূলক মৃদু সংক্রমণ চলাকালে জনস্বাস্থ্যের জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছিল। তবে এবারে ধরনটি আরও বেশি প্রাণঘাতী। এবার ক্লেইড ১ এর প্রাদুর্ভাব শুরু হয়েছে। এমপক্সের নতুন এই ধরনটিকে ‘এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বিপজ্জন’ বলে অভিহিত করেছেন এক বিজ্ঞানী।
চলতি বছরের শুরু থেকে ডিআর কঙ্গোতে ১৩ হাজার ৭০০ জনেরও বেশি এমপক্স রোগী শনাক্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে অন্তত ৪৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এর পর থেকে ডিআর কঙ্গোর প্রতিবেশি দেশ বুরুন্ডি, সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক, কেনিয়া ও রুয়ান্ডাতেও রোগটি ছড়িয়েছে।