খুলনায় সংঘর্ষে পুলিশ কনস্টেবল নিহত
অপরাজেয় বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১:১১ পিএম, ২ আগস্ট ২০২৪ শুক্রবার
খুলনায় ছাত্র-জনতার গণমিছিল চলাকালে সংঘর্ষে সুমন কুমার ঘরামী নামের এক পুলিশ কনস্টেবল নিহত হয়েছেন। এক এএসপি সহ আহত হয়েছেন আরও ২৫ পুলিশ সদস্য। সংঘর্ষের ঘটনায় আতঙ্কে আছেন সাধারণ মানুষ।
শুক্রবার (২ আগস্ট) রাতে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) কমিশনার মোজাম্মেল হক পুলিশ নিহত ও আহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। নিহত কনস্টেবল সুমন কুমার ঘরামী কেএমপি পুলিশ লাইন্সে কর্মরত ছিলেন।
স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার (২ আগস্ট) বিকেল ৩টার দিকে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। শিক্ষার্থীরা খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পৌঁছানোর পর পুলিশের সঙ্গে ব্যাপক সংঘর্ষ শুরু হয়। শিক্ষার্থীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে এবং পুলিশ তাদের লক্ষ্য করে টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করে। প্রায় আধাঘণ্টা ধরে চলে এই সংঘর্ষ। এসময় উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হয়। এসময় নগরীর গল্লামারী থেকে জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়ক পরিণত হয় রণক্ষেত্রে।
বিকেল ৪টার দিকে পুলিশ কিছুটা পিছু হটে। কিছু পুলিশ জিরো পয়েন্ট এলাকায় এবং কিছু পুলিশ গল্লামারী মোড়ে অবস্থান নেন। কয়েক দফা শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পুলিশ কিছুটা পেছনে সরে আসতে বাধ্য হয়। পরে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে নগরীর শিববাড়ি মোড়ের দিকে যেতে চাইলে সন্ধ্যা ৬টায় গল্লামারী মোড়ে আরেক দফা সংঘর্ষ হয়। এসময় পুলিশ মুহুর্মুহু টিয়ারগ্যাস ও রাবার বুলেট ছোড়ে। সাড়ে ৬টার দিকে পুলিশ পিছু হটলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সংঘর্ষের পর সিরাজুল ইসলাম, আবির, নীরব, নাবিল, মিজান, সৌরভ, আবদুল্লাহ, রায়েব সুলতানা রাইবা এবং রুবিনা ইয়াসমিন নামের আন্দোলনকারীদের গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের শরীরে রাবার বুলেট ও শটগানের ছররা গুলি লেগেছে।
নগরীর সোনাডাঙ্গা থানার ওসি মো. ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, শিক্ষার্থীরা থানার গেটে কিছু ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেছিল। এতে কেউ আহত হননি।
খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) ডা. সুহাস রঞ্জন বিশ্বাস জানান, খুমেক হাসপাতালে ২০ জন ভর্তি হয়েছে। আহতদের মধ্যে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, বিএল কলেজ, সুন্দরবন কলেজ, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ও আহছানউল্লাহ কলেজের ছাত্রছাত্রী রয়েছে। এদের অনেকে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মোজাম্মেল হক জানান, শান্তিপূর্ণভাবে শিক্ষার্থীদের কর্মসূচি পালন করা কথা ছিল। কিন্তু তারা পুলিশের ওপর হামলা করেছেন। এতে বহু পুলিশ আহত হয়েছেন।
সংঘর্ষে সৌমেন নামের একজন সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) আহত হওয়ারও খবর পাওয়া গেছে। তাকে খুলনা সিটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছ। অন্যদিকে রাত ৯টার দিকে নগরীর গল্লামারী এলাকায় একটি অ্যাম্বুলেন্স পুড়িয়ে দেওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
তবে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের পক্ষে আল শাহরিয়ার দাবি করেন, তাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ অহেতুক টিয়ারগ্যাস ও রাবার বুলেট ছুড়েছে। এতে অনেকে আহত হয়েছেন। গুলিবিদ্ধ কয়েকজনকে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সঠিক সংখ্যা পরে জানানো হবে।