কোটা সংস্কার আন্দোলন
তদন্তে আরও দুই বিচারপতি নিয়োগ
অপরাজেয় বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯:৫০ পিএম, ১ আগস্ট ২০২৪ বৃহস্পতিবার
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে গত ১৬ জুলাই থেকে ২১ জুলাই পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত ঘটনায় মৃত্যু, সহিংসতা, নাশকতা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা তদন্তে হাইকোর্ট বিভাগের তিন বিচারপতির সমন্বয়ে তদন্ত কমিশন গঠন করেছে সরকার।
এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন আজ বৃহস্পতিবার জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানকে সভাপতি করে গঠিত তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়। অপর দুই সদস্য হলেন হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজল ও বিচারপতি মোহাম্মদ শওকত আলী চৌধুরী। কমিশন কাজ শেষ করে আগামী ৪৫ কার্যদিবসের মধ্যে সরকারের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।
এর আগে দেশের বিভিন্ন স্থানে ১৬ জুলাই সংঘটিত ঘটনায় ৬ জন নিহত হওয়া এবং সাম্প্রতিক সময়ে সংঘটিত সহিংসতা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের ঘটনা তদন্তের জন্য হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানকে দায়িত্ব দিয়ে এক সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়। এ বিষয়ে ১৮ জুলাই প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। কমিশন তদন্ত কাজ শেষ করে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে সরকারের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।
বৃহস্পতিবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ১৮ জুলাই জারি করা প্রজ্ঞাপন রহিত করা হলো, এ স্বত্ত্বেও ওই প্রজ্ঞাপনের অধীন গৃহীত কার্যক্রম এই প্রজ্ঞাপনের অধীন গৃহীত হয়েছে বলে গণ্য হবে।
কমিশনের কার্যপরিধি অনুযায়ী, গত ১৬ জুলাই থেকে ২১ জুলাই পর্যন্ত সময়ে নিহত ব্যক্তিদের মৃত্যুর কারণ উদঘাটন ও তাদের মৃত্যুর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করবে কমিশন। ১৬ জুলাই হতে ২১ জুলাই পর্যন্ত সংঘটিত সহিংসতা, নাশকতা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করা এবং এই সময়ে সংঘটিত সহিংসতা, নাশকতা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের ঘটনায় বিভিন্ন সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত দপ্তর বা সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান, সরকারি কোম্পানি, সংবিধিবদ্ধ কর্তৃপক্ষ ও করপোরেশন এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা।
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে ১৬ জুলাই থেকে ২১ জুলাই পর্যন্ত সংঘাত-সহিংসতার ঘটনায় অনেক প্রাণহানি ঘটে। সরকারি হিসাবেই এখন পর্যন্ত ১৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের হিসাব অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত ২৬৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
৪ আগস্ট রংপুর যাচ্ছে তদন্ত কমিশন: সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্যগ্রহণ করতে আগামী রোববার রংপুর যাচ্ছে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন। ৫ আগস্ট সকাল ৯টায় রংপুর সার্কিট হাউজে সহিংসতায় নিহত মো. আবু সাঈদের বিষয়ে সাক্ষ্য গ্রহণ করা হবে।
৬ আগস্ট নিহত সাজ্জাদ হোসেন, মোসলেম উদ্দিন মিলন ও মানিক মিয়ার বিষয়ে সাক্ষ্যগ্রহণ করা হবে। এছাড়া ৭ আগস্ট নিহত মেরাজুল ইসলাম ও আবদুল্লাহ আল তাহেরের বিষয়ে সাক্ষ্য গ্রহণ করবে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন।
বৃহস্পতিবার হাইকোর্টে তদন্ত কমিশনের অস্থায়ী কার্যালয়ে কমিশনের সভাপতি বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামান সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, রংপুরে যে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশনের আসছে সে বিষয়টি সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে জানানোর জন্য আগামীকাল শুক্রবার থেকে রংপুরে মাইকিং করা হবে। তদন্ত কমিশনের কাছে যারা সাক্ষী দিতে আসবেন, তাদের কোনো প্রকার ভয়ভীতি দেখানো হলে কমিশন ছাড় দেবে না। এ সময় বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশনের সদস্য বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজল ও বিচারপতি মো. শওকত আলী চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।