ভারতে শকুন কমে যাওয়ায় অতিরিক্ত ৫ লাখ মানুষের মৃত্যু
ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৮:৪৫ পিএম, ২৭ জুলাই ২০২৪ শনিবার
ভারতে শকুনের সংখ্যা কমার ফলে মানুষের মৃত্যুর হারও বেড়েছে বলে দাবি গবেষকদের। পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে বিবেচিত এই পাখি না থাকায় মারাত্মক ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে ২০০০-২০০৫ সালের মধ্যে অতিরিক্ত পাঁচ লাখ মানুষ মারা গেছেন। তাই উপকারী এ পাখিগুলো সংরক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি বলে মত দিয়েছেন গবেষকরা।
আমেরিকান ইকোনমিক অ্যাসোসিয়েশন জার্নালে গবেষণাটি প্রকাশিত হয়। সেখানে বলা হয়, এসব পাখি কমে যাওয়ায় খুব সহজেই মারাত্মক ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ ঘটছে। ফলে এ সময় অতিরিক্ত পাঁচ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
ভারতে একসময় ৫০ মিলিয়ন শকুন ছিল। কিন্তু ১৯৯০-এর দশকের মাঝামাঝি এ সংখ্যা প্রায় শূন্যে নেমে আসে। এর কারণ গবাদিপশুর চিকিৎসায় ব্যবহৃত ডাইক্লোফেনাক নামে ব্যথানাশক একটি ওষুধ। সস্তা এই ওষুধ শকুনের জন্য প্রাণনাশক ছিল। এ ওষুধ খাওয়ানো গবাদিপশুর মৃতদেহ খেয়ে কিডনি নষ্ট হয়ে বহু শকুন মারা যায়।
স্টেট অব ইন্ডিয়াস-এর সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০০৬ সালে পশুর চিকিৎসায় ডাইক্লোফেনাক ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। ফলে কিছু এলাকায় শকুনের মৃত্যু কমতে থাকে। তবে শকুনের তিনটি প্রজাতি (সাদা শকুন, ভারতীয় শকুন, লাল মাথার শকুন) সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এদের জনসংখ্যা ৯১ থেকে ৯৮ শতাংশ পর্যন্ত কমেছে। আর শকুন কমে যাওয়ায় দেশটিতে মানুষের মৃত্যুর হারও বেড়েছে বলে জানান গবেষকরা।
গবেষণায় দেখা যায়, ভারতের যেসব জেলায় শকুনের সংখ্যা ব্যাপকভাবে কমেছে, সেসব জেলায় মানুষের মৃত্যুর হারও আগের তুলনায় চার শতাংশ বেড়েছে। এ ছাড়া যেসব শহরে মৃত গবাদিপশু ভাগাড়ে ফেলা হতো, সেখানে মানুষের মৃত্যুর হারও বেশি।
গবেষকদের ধারণা, শকুন কমে যাওয়ায় পাঁচ বছরে (২০০০-২০০৫ সাল) রোগ-জীবাণু ছড়িয়ে পড়ায় প্রতি বছর অতিরিক্ত এক লাখ মানুষ মারা গেছেন।
গবেষণার সহলেখক ইউনিভার্সিটি অব শিকাগোস হ্যারিস স্কুল অব পাবলিক পলিসির সহকারী অধ্যাপক আইয়াল ফ্র্যাঙ্ক। তিনি বলেন, পরিবেশ থেকে ব্যাকটেরিয়া ও রোগ-জীবাণুযুক্ত মৃত প্রাণীগুলো অপসারণে শকুন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই এসব পাখিকে প্রকৃতির পরিচ্ছন্নতাকর্মী বলা হয়। তারা না থাকলে অসুখ ছড়াতে পারে।