অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

বাড্ডায় শিক্ষার্থী-পুলিশ সংঘর্ষ, যান চলাচল বন্ধ

অপরাজেয় বাংলা ডেস্ক

প্রকাশিত: ১২:২১ পিএম, ১৮ জুলাই ২০২৪ বৃহস্পতিবার   আপডেট: ১২:২৭ পিএম, ১৮ জুলাই ২০২৪ বৃহস্পতিবার

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের এক দফা দাবিতে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি পালনের সময় রাজধানীর মেরুল বাড্ডা এলাকায় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এর ফলে মেরুল বাড্ডা এলাকায় যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টার পর শিক্ষার্থীরা রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে গেলে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, কোটা সংস্কারের দাবিতে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি পালনের জন্য সকালে কয়েকশ শিক্ষার্থী ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে রাস্তা অবরোধ করে রাখে। এ সময় মেরুল বাড্ডা এলাকা দিয়ে যাতায়াতকারী সব যানবাহনের চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধের কারণে রাস্তায় শত শত যানবাহন আটকা পড়ে। আন্দোলন থেকে শিক্ষার্থীরা নানা স্লোগান দেন।

একপর্যায়ে পুলিশ ধাওয়া দিলে শিক্ষার্থীরা পিছু হটে। পরে তারা একত্রিত হয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দিকে তেড়ে এসে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সংঘর্ষ বন্ধ হলেও ওই এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনায় কোনো শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন কি না আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে তা জানা যায়নি।

শিক্ষার্থীদের দাবি, পুলিশ ক্যাম্পাসে ঢুকে টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করেছেন। এতে অনেক আহত হয়েছেন। তবে সংখ্যাটা তারা বলতে পারেনি।

সংঘর্ষের সত্যতা নিশ্চিত করে বাড্ডা পুলিশের ডিউটি অফিসার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল হক আব্বাসী বলেন, পুলিশ এবং ছাত্রদের সংঘর্ষে একজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

দেশজুড়ে শিক্ষার্থীদের তুমুল আন্দোলনের মুখে ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর সরকারি চাকরিতে নারী কোটা ১০ শতাংশ, মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৩০ শতাংশ এবং জেলা কোটা ১০ শতাংশ বাতিল করে পরিপত্র জারি করে সরকার। সেখানে বলা হয়েছিল, ৯ম থেকে ১৩তম গ্রেডের পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দিতে হবে। ওইসব গ্রেডের পদে সরাসরি নিয়োগে বিদ্যমান কোটা বাতিল করা হলো।

এ পরিপত্র চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্ম কমান্ড কাউন্সিলের সভাপতি অহিদুল ইসলামসহ সাত শিক্ষার্থী। এর প্রেক্ষিতে গত ৫ জুন ২০১৮ সালের জারিকৃত পরিপত্রটিকে অবৈধ বলে ঘোষণা করেন হাইকোর্ট।

এরপর থেকেই সারাদেশে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ফুঁসে ওঠেন। কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে নানা স্থানে বিক্ষোভ করেন কোটাবিরোধীরা। ঢাবি ছাড়াও বিক্ষোভ হয় জাবি, জবি, রাবি, সাত কলেজসহ দেশের স্বনামধন্য বিভিন্ন কলেজে।

এরমধ্যে গত মঙ্গলবার দিনব্যাপী রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিশেষ করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ও হামলার ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ছয়জন নিহত হন। নিহতদের মধ্যে চট্টগ্রামে তিনজন, ঢাকায় দুজন ও রংপুরে একজন রয়েছেন।

পরিস্থিতির যেন আরও অবনতি না হয় সেজন্য দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ইতোমধ্যে অনেক বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করলেও সেই সিদ্ধান্ত না মেনে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা। কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ সারাদেশে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি পালন করছেন কোটাবিরোধী শিক্ষার্থীরা।