অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

১১ বছরে ইউএস বাংলা

অপরাজেয় বাংলা ডেস্ক

প্রকাশিত: ১০:১২ পিএম, ১৬ জুলাই ২০২৪ মঙ্গলবার  

বাংলাদেশের অন্যতম বেসরকারী বিমান সংস্থা ইউএস-বাংলা অতিক্রম করেছে সাফল্যগাঁথার দশ বছর। ১৭ জুলাই ২০২৪ ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স ১১তম বর্ষে পদার্পণ করছে। 

১৭ জুলাই ২০১৪ ইউএস-বাংলা ড্যাশ৮-কিউ৪০০ এয়ারক্রাফট দিয়ে ঢাকা-যশোর রুটে ফ্লাইট পরিচালনার মাধ্যমে বাংলাদেশের আকাশপথে যাত্রা শুরু করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রথম এক বছরের মধ্যে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে সকল বিমানবন্দরে ফ্লাইট পরিচালনা করে স্বল্পতম সময়ে আকাশপথের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে সূদৃঢ় করেছে ইউএস-বাংলা। 

অভ্যন্তরীণ রুট ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, সিলেট, যশোর, সৈয়দপুর, রাজশাহীতে ফ্লাইট পরিচালনা করছে। ইউএস-বাংলা যাত্রা শুরুর দু’বছরের মধ্যে ১৫ মে ২০১৬ তারিখে ঢাকা-কাঠমান্ডু রুটে ফ্লাইট পরিচালনার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক রুটে ডানা মেলে। ইউএস-বাংলার আন্তর্জাতিক রুটগুলোর মধ্যে রয়েছে কলকাতা, চেন্নাই, মালে, মাস্কাট, দোহা, দুবাই, শারজাহ, আবুধাবি, জেদ্দা, কুয়ালালামপুর, সিঙ্গাপুর, ব্যাংকক ও গুয়াংজু। 

নিকট ভবিষ্যতে দিল্লী, রিয়াদ, দাম্মাম রুটে ফ্লাইট পরিচালনার পরিকল্পনা নিয়েছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স। এছাড়া ২০২৫ সালের মধ্যে লন্ডন, রোম সহ ইউরোপের বিভিন্ন গন্তব্য ও ২০২৭ সালের মধ্যে নিউইয়র্ক ও টরেন্টোতে ফ্লাইট পরিচালনার পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স।

বর্তমানে ইউএস-বাংলার বিমান বহরে মোট চব্বিশটি এয়ারক্রাফট রয়েছে, যার মধ্যে দুইটি এয়ারবাস ৩৩০-৩০০, নয়টি বোয়িং ৭৩৭-৮০০, দশটি এটিআর ৭২-৬০০ এবং তিনটি ড্যাশ৮-কিউ৪০০ এয়ারক্রাফট আছে। যাত্রা শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ৯০% এর অধিক অন-টাইম ফ্লাইট পরিচালনার রেকর্ড রয়েছে ইউএস-বাংলার। 

যাত্রীসেবায় অনন্য নজির স্থাপন করায় ইউএস-বাংলা দেশীয় এয়ারলাইন্স হিসেবে যাত্রীদের কাছে আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। দেশে-বিদেশে বর্তমানে প্রায় ৩০০০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী আছে ইউএস-বাংলার। যা দেশের বেকার সমস্যা সমাধানেও কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়া নিয়মিত ট্যাক্স-সারচার্জ পরিশোধ করে দেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখছে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করে দেশের সুনাম বৃদ্ধি করে চলেছে। বৈদেশিক মূদ্রা অর্জন করে দেশের অর্থনীতিকে করছে আরো সূদৃঢ়।

ইউএস-বাংলার টিকেট সংগ্রহ করার জন্য রয়েছে ওয়েবসাইট ও মোবাইল অ্যাপস সুবিধা। দেশে এবং দেশের বাহিরে নিজস্ব ৪০টির অধিক সেলস্ অফিস রয়েছে। ফ্রিকোয়েন্ট ফ্লাইয়ারদের জন্য রয়েছে ‘স্কাইস্টার’ প্রোগ্রাম।  

ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স খুব শীঘ্রই নিজস্ব এমআরও (মেইনটেন্যান্স, রিপেয়ার এন্ড অপারেশনস্) প্রতিষ্ঠা করতে যাচ্ছে। দক্ষ মানব সম্পদ তৈরী করতে ইউএস-বাংলা ফ্লাইং স্কুল, ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে। 

স্বাধীনতার পর ইউএস-বাংলা-ই প্রথম কোনো দেশীয় বিমান সংস্থা যা, চীনের কোনো গন্তব্যে বা ভারতের চেন্নাই কিংবা মালদ্বীপের রাজধানী মালে-তে সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনা করছে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যাত্রীদেরকে বেশ কয়েকটি স্পেশাল সার্ভিস দিয়ে যাচ্ছে ইউএস-বাংলা, যা অনুকরনীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে এভিয়েশন শিল্পে। উল্লেখযোগ্য সার্ভিসগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে- আন্তর্জাতিক ফ্লাইট অবতরনের পর মাত্র ১৫ মিনিটের মধ্যে লাগেজ ডেলিভারী। “আপনি লাগেজের জন্য অপেক্ষা করবেন না বরং লাগেজ আপনার জন্য অপেক্ষা করবে”- এই ধারনাকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্যই ইউএস-বাংলা প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে।  

ইউএস-বাংলা শুধু যাত্রীই পরিবহন করে না, সাথে বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক গন্তব্যে কার্গোও পরিবহন করে থাকে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে ইউএস-বাংলা দেশের বিভিন্ন শিক্ষা, সামাজিক, সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানসহ খেলাধূলার উন্নয়নের সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িয়ে আছে।

ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল-মামুন দশম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে বলেন, “প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে আমরা যেকোন ধরনের প্রতিযোগিতার চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে প্রস্তুত। বর্তমান বিশ্বে যাত্রীদের সঠিক সেবা প্রদান করার জন্য ব্র্যান্ডনিউ এয়ারক্রাফটের কোনো বিকল্প নেই। ইউএস-বাংলা যাত্রীদের আরামদায়ক সেবাকে নিশ্চিত করার লক্ষ্যেই প্রতিনিয়ত নতুন নতুন এয়ারক্রাফট বহরে যুক্ত করে চলেছে। দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির সাথে সম্পৃক্ত থাকতে পেরে ইউএস-বাংলা পরিবার অত্যন্ত আনন্দিত ও গর্বিত।”