অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

সারাদেশে ‘বাংলা ব্লকেড’ ঘোষণা কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদের

অপরাজেয় বাংলা ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৬:৩৯ পিএম, ৬ জুলাই ২০২৪ শনিবার  

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

সরকারি চাকরিতে কোটা প্রথা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। আগামীকাল রোববার (৭ জুলাই) সারাদেশে রাস্তা অবরোধের ডাক দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। তারা এটার নাম দিয়েছেন ‘বাংলা ব্লক’। এছাড়া আগে ঘোষিত ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।

শনিবার (৬ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে অবস্থানকালে এই কর্মসূচির ঘোষণা দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ বিভাগের শিক্ষার্থী নাহিদ ইসলাম। কর্মসূচি ঘোষণা শেষে শাহবাগ মোড় ছাড়েন আন্দোলনকারীরা।

এই আন্দোলনের অন্যতম উদ্যোক্তা নাহিদ বলেন, আগামীকাল রোববার বিকেল ৩টা থেকে সারাদেশে ‘বাংলা ব্লক’ সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচির ঘোষণা করা হলো। সেই সঙ্গে নিয়মিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে সারা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচি চলবে।

নতুন এই কর্মসূচির ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, শুধু শাহবাগ মোড় নয়, ঢাকা শহরের সায়েন্সল্যাব, চানখারপুল, নীলক্ষেত, মতিঝিল প্রতিটি পয়েন্টে কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নেমে আসবেন। ঢাকার বাইরের শিক্ষার্থীরা তারা জেলায়-জেলায়, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো মহাসড়কগুলো অবরোধ করবেন।

ঢাবির গ্রন্থাগারগুলো খুলে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে নাহিদ বলেন, ঢাবি কর্তৃপক্ষকে আমরা ভালোভাবে বলছি, আপনারা শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার জন্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ও সাইন্স লাইব্রেরি খুলে দিন। নইলে আমরা নিজেরাই সেগুলো খুলে নেব।

এর আগে বিকেল ৪টা ৩০ মিনিটে শাহবাগ অবরোধ করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। দুপুর ৩টায় পূর্বঘোষিত কর্মসূচি হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক হাজার শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে জড়ো হন। সেখান থেকে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান প্রদক্ষিণ করতে থাকে।

এসময় শিক্ষার্থীরা ‘সংবিধানের/মুক্তিযুদ্ধের মূলকথা, সুযোগের সমতা’, ‘সারা বাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে’, ‘দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ’, ‘আঠারোর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’, ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে’, ‘লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’, ‘কোটা প্রথা, বাতিল চাই বাতিল চাই’, ‘কোটা প্রথার বিরুদ্ধে, ডাইরেক্ট একশন’, ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’, ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’, ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’- ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।

ঢাবির বিভিন্ন হল থেকে আলাদা ব্যানারে মিছিল নিয়ে কোটা আন্দোলনে যোগ দেন তারা। বিভাগের ব্যানারেও মিছিল নিয়ে আন্দোলনে শামিল হন শিক্ষার্থীরা। যদিও বিভিন্ন জায়গা থেকে ছাত্রলীগের বাধা প্রদানের খবর পাওয়া গেছে। ঠিক যেই সময় কোটা আন্দোলনকারীরা কর্মসূচি দিয়েছে, একই সময়ে বিভিন্ন হলে ছাত্রলীগেরও প্রোগ্রাম রাখা হয়।

২০১৮ সালের অক্টোবরে কোটাবিরোধী আন্দোলন চরম আকার ধারণ করলে সরকার পরিপত্র জারি করে সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা পুরোপুরি বাতিল করে দেয়। ওই পরিপত্র চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্ম কমান্ড কাউন্সিলের সভাপতি অহিদুল ইসলামসহ সাত শিক্ষার্থী। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ৫ জুন পরিপত্রটি বাতিল করে দেন হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ। এরপর আবারো ক্যাম্পাসগুলোতে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। শনিবারও দেশের বিভিন্ন স্থানে মহাসড়ক অবরোধ করেন আন্দোলনকারীরা।

জেবি