ফয়সালকে এনবিআর থেকে বিদায়
অপরাজেয় বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯:১৮ পিএম, ৪ জুলাই ২০২৪ বৃহস্পতিবার
দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্রথম সচিব (কর) কাজী আবু মাহমুদ ফয়সালকে এনবিআর থেকে ‘অবমুক্ত’ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকালে তাকে অবমুক্ত করে এ–সংক্রান্ত আদেশ জারি করা হয়েছে।
এর আগে গত ৩০ জুন কাজী আবু মাহমুদ ফয়সালকে বগুড়ায় বদলি করা হয়। বগুড়া কর অঞ্চলের পরিদর্শী রেঞ্জ-১–এ তার নতুন কর্মস্থল। এনবিআর থেকে ‘অবমুক্ত’ করার অর্থ হলো, তাকে এনবিআর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বদলির কারণে বিদায় করা হয়েছে। এখন তাকে বগুড়ায় যোগদান করতে হবে।
২৭ জুন বৃহস্পতিবার ঢাকার আদালতের কাছে কাজী আবু মাহমুদ ফয়সালের অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিবরণ তুলে ধরেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তবে এ ঘটনার পর তিনি আর এনবিআরে অফিস করেননি বলে জানা গেছে।
আদালতে জমা দেওয়া দুদকের নথিতে বলা হয়েছে, ফয়সাল, তার স্ত্রী আফসানা জেসমিন, ফয়সালের ভাই কাজী খালিদ হাসান, শ্বশুর আহম্মেদ আলী, শাশুড়ি মমতাজ বেগম, শ্যালক আফতাব আলী, খালাশাশুড়ি মাহমুদা হাসান, মামাশ্বশুর শেখ নাসির উদ্দিন, আত্মীয় খন্দকার হাফিজুর রহমান, রওশন আরা খাতুন ও ফারহানা আফরোজের নামে ব্যাংক হিসাব খুলে অপরাধলব্ধ আয় লেনদেন করা হয়েছে।
এর মধ্যে ফয়সালের নামে ছয়টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ৫ কোটি ২১ লাখ ও ফয়সালের স্ত্রী আফসানা জেসমিনের পাঁচটি ব্যাংক হিসাবে ২ কোটি ২৫ লাখ টাকা জমা হয়। ফয়সালের শ্বশুর আহম্মেদ আলীর আটটি ব্যাংক হিসাবে জমা হয় ১১ কোটি ৫৭ লাখ টাকা।
শাশুড়ি মমতাজ বেগমের নামে ১০টি ব্যাংক হিসাবে ৭ কোটি টাকা জমা হয়। এছাড়া ফয়সালের শ্যালক আফতাব আলীর ৬টি ব্যাংক হিসাবে জমা হয়েছে ১ কোটি ৫৫ লাখ টাকা।
বিভিন্ন সময়ে এসব টাকা জমা হওয়ার পর বেশিরভাগই তুলে নেওয়া হয়েছে। তবে লেনদেনের পর ফয়সাল, তার স্ত্রী, শ্বশুর ও তার স্বজনদের ১৯টি ব্যাংক ও ১টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের হিসাবে এখনো প্রায় ৭ কোটি টাকা স্থিতি আছে। এছাড়াও তাদের নামে রয়েছে ২ কোটি ৫৫ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র।
দুদকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০০৫ সালে বিসিএস (কর) ক্যাডারে সহকারী কর কমিশনার হিসাবে কর্মজীবন শুরু করেন ফয়সাল।
চাকরি জীবনে ঘুস-দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল অঙ্কের অর্থ উপার্জন করেছেন। তার অপরাধলব্ধ অর্থই শ্বশুর-শাশুড়ির নামে করা ব্যাংক অ্যাকাউন্টে লেনদেন করা হয়েছে। গত বছর থেকে দুদক ফয়সালের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে।
এর আগে এনবিআরের সদস্য মো. মতিউর রহমান ও তার পরিবারের নামে বিপুল সম্পদ থাকার বিষয়টি আলোচনায় আসে। পরে তাকে এনবিআর থেকে সরিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে সংযুক্ত করার আদেশ জারি করা হয়। কিন্তু কয়েক সপ্তাহ পার হলেও তিনি কাজে যোগ দেননি।