অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

ইউক্রেন যুদ্ধের সুযোগে রাশিয়ায় বাড়ছে ‘জঙ্গিবাদ’

ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৯:২১ পিএম, ২৫ জুন ২০২৪ মঙ্গলবার  

সাম্প্রতিক সময়ে মস্কো এবং দাগেস্তানে দুটি সন্ত্রাসী হামলায় নড়েচড়ে বসেছে ক্রেমলিন। গত মার্চে মস্কোয় কনসার্ট হলে হামলার পর এবার দাগেস্তানে সন্ত্রাসীদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে ইহুদি উপাসনালয়। রাশিয়া যখন ইউক্রেন যুদ্ধে পূর্ণ মনোযোগ দিচ্ছে, তখন দেশটির অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তাব্যবস্থা ভেঙে পড়ছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, শিগগিরই যদি রাশিয়া অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার বিষয়ে সজাগ না হয়, তাহলে নব্বইয়ের সন্ত্রাসবাদের দুঃস্মৃতি ফিরতে পারে। দাগেস্তান থেকে ফিরে ক্রেমলিনের সাবেক পরামর্শক সের্গেই মারকভ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, ‘রাশিয়ায় আবার কট্টর ইসলামপন্থিরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। ইসলামি সন্ত্রাসবাদ এখন (রাশিয়ায়) বড় একটা সমস্যা। কর্তৃপক্ষের এখন এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে হবে।’

প্রায় দুবছরেরও বেশি সময় ধরে ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ করছে রাশিয়া। দেশটির সামরিক এবং গোয়েন্দা সক্ষমতার একটি বড় অংশ এখন সেখানে নিয়োজিত। এই সুযোগে রাশিয়ার মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চলগুলো অরক্ষিত হয়ে উঠছে। এছাড়া দেশটিতে ইসলামিক স্টেটের তৎপরতাও বাড়ছে। মস্কোর কনসার্ট হলে হামলায় দায় ইসলামিক স্টেট স্বীকার করেছে।

দ্য খোরাসান ডায়েরি’র ডিরেক্টর অব রিসার্চ রিকার্ডো ভাল রয়টার্সকে বলেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে রাশিয়াকে অস্থিতিশীল করার লক্ষ্য নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করছে ইসলামিক স্টেটসহ বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠন।

ভালের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, জঙ্গিরা তাদের লেখালেখিতে ইউক্রেনকে ‘কৃষ্ণগহ্বর’ হিসেবে বর্ণনা করছে। এর মানে রাশিয়া এবং পশ্চিমা দেশগুলোর দৃষ্টি এখন ইউক্রেনের দিকে, আর এ সুযোগকে কাজে লাগিয়েই তারা নিজেদের কার্যক্রম বেগবান করতে চায়।

তবে দাগেস্তানে হামলার পর এবার অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা জোরদারে পদক্ষেপ নিচ্ছে রাশিয়া। এরই মধ্যে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে দাগেস্তানকে। তবে জঙ্গিবাদ নির্মূলের কাজটি রাশিয়ার জন্য খুব একটা সহজ হবে না। কারণ জঙ্গিরা এখন রাশিয়ার স্থানীয় বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের ভেতরে অনুপ্রবেশ করেছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

দাগেস্তানে হামলার সঙ্গে জড়িত অন্তত দুজন ব্যক্তি সে অঞ্চলের এক দায়িত্বশীল সরকারি কর্মকর্তার আত্মীয়। জানা গেছে, গত এপ্রিলে ওই কর্মকর্তা সন্ত্রাসবাদবিরোধী এক বৈঠক ডেকেছিলেন। এছাড়া অপর এক হামলাকারীর সঙ্গে ক্রেমলিন-ঘেঁষা একটি রাজনৈতিক দলের সংশ্লিষ্টতাও পাওয়া গেছে।

ইউক্রেন যুদ্ধ এবং পশ্চিমাদের সঙ্গে বৈরীতার মধ্যেই এখন অভ্যন্তরীণ এই নিরাপত্তা-সংকট নিয়ে বিশেষভাবে ভাবতে হচ্ছে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে। নতুন এই চ্যালেঞ্জ কীভাবে সামাল দেন পুতিন, সেটাই এখন দেখার বিষয়।