অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

গরমে অতিষ্ট ভারত, দিল্লিতে অনুভূত তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি

ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক

প্রকাশিত: ১০:৫৫ পিএম, ১৮ জুন ২০২৪ মঙ্গলবার  

দুঃসহ গরমে পুড়ছে ভারত। এই গরম থেকে মুক্তি কবে? মিলছে না সে উত্তর। ভারতের বেশির ভাগ অঞ্চলেই এখনও বর্ষা ধরাছোঁয়ার বাইরে। গরম থেকে সহসাই যে মুক্তির সম্ভাবনা নেই, সে আভাসই দিচ্ছে দেশটির আবহাওয়া দপ্তর।

ভারতের রাজধানী দিল্লি, পাঞ্জাব, হরিয়ানা এবং উত্তরপ্রদেশে নতুন করে তাপপ্রবাহের চূড়ান্ত সতর্কতা জারি হয়েছে। গত এক সপ্তাহ ধরে দিল্লিসহ গোটা উত্তর ভারতে যেন আগুনের হলকা বইছে। খবর এনডিটিভি

দিল্লিতে তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে ঘোরাফেরা করলেও অনুভূত তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি। অর্থাৎ,খাতায়-কলমে তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রির আশপাশে হলেও ৫০ ডিগ্রি সেলসিাসের মতো গরম অনুভূত হচ্ছে সেখানে।

আবহাওয়া দপ্তর জানায়, দিল্লিতে স্বাভাবিকের তুলনায় তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। সোমবার ‘ফিল্স লাইক’ তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি ছুঁয়েছে।

দিল্লির এক বাসিন্দা জানান, ‘সকাল সাড়ে ৬টাতেও যেন ট্যাঙ্কের পানি ফুটছে। এসি কাজ করছে না। ফ্রিজে কিছু রাখলে যেন ঠাণ্ডা হচ্ছে না।’

গত ২০ বছর ধরে দিল্লিতে আছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এ রকম ভয়ানক গরম আগে কখনও দেখিনি।’

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উত্তরাখণ্ড, বিহার, ঝাড়খণ্ড-সহ উত্তর ভারতে তাপমাত্রা ৪৬ ডিগ্রির উপরে উঠছে। বিহারে গত ২৪ ঘণ্টায় তীব্র তাপ ও আর্দ্রতার কারণে ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে।

অত্যধিক তাপমাত্রার কারণে সোমবার দিল্লি থেকে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতামুখী ইন্ডিগোর একটি ফ্লাইটে বিলম্ব হয়। মাত্রাতিরিক্ত উষ্ণতার কারণেই যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিয়েছিল বিমানে। যার জেরে তিন ঘণ্টারও বেশি দেরিতে ওড়ে ইন্ডিগোর ফ্লাইট।

আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী, বুধবার বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি এবং ধূলিঝড় হওয়ার সম্ভাবনা আছে। সে কারণে দিল্লির মানুষ কিছুটা স্বস্তির আশা করতে পারে। তবে তা দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার সম্ভাবনা নেই।

এদিকে গরম থেকে বাঁচতে অনেকে শৈলশহরে ছুটছেন। কিন্তু তাতেও নিস্তার মিলছে না। হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ডে পর্যটকদের ঢল বাড়লেও সেখানে গিয়ে তারা হতাশ হচ্ছেন, কারণ নেই ঠাণ্ডা।

অন্যদিকে ৪৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় পুড়ছে হিমাচল প্রদেশ। এই তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে ৬ দশমিক ৭ ডিগ্রি বেশি। আবার উত্তরাখণ্ডে তাপমাত্রা ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে গেছে। নৈনিতাল, মুসৌরি এবং পৌড়ি গঢ়ওয়ালের মতো জায়গায় তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি হয়েছে।

উত্তরাখণ্ডের দেরাদুনে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৪৩ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মুসৌরিতে তাপমাত্রা ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এমনকি পৌরি ও নৈনিতালের মতো পার্বত্য শহরগুলোতেও তিন মাসে খুব কম বৃষ্টিপাত হওয়ায় তাপপ্রবাহ চলছে।

জম্মুতে তাপমাত্রা ৪৪ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে দাঁড়িয়েছে। কাটরায় সোমবার তাপমাত্রা ছিল ৪১ ডিগ্রির কাছাকাছি।

ভারতীয় আবহাওয়া দপ্তরের (আইএমডি) সাবেক মহাপরিচালক কে জে রমেশ এনডিটিভি-কে জানিয়েছেন, চলতি সপ্তাহে তীব্র তাপপ্রবাহ থেকে স্বস্তি পাওয়ার কথা ছিল, কিন্তু আরব সাগরে বাতাসের পরিবর্তনের কারণে সমতল ভূমি শীতল হতে দেরি হয়েছে।

আরও একটি কারণ হলো- প্রকৃতির সময় অনুযায়ী এখন বর্ষাকাল চলে আসলেও পশ্চিমবঙ্গে বর্ষার ছিটেফোঁটা নেই। যতদিন এই এলাকাগুলোতে বর্ষা আসবে না, ততদিন উত্তর ভারতে লাগাতার তাপপ্রবাহ চলবে।

বুধবার বৃষ্টিতে কিছুটা স্বস্তির পর নতুন করে পশ্চিমী ঝঞ্ঝা উত্তর-পশ্চিম ভারতে ঢুকবে, যার প্রভাব পড়বে দিল্লিতে। তাছাড়া, ২৭ জুনের পর উত্তর প্রদেশের বেশির ভাগ এলাকা স্বস্তি পাবে, তারপর স্বস্তি মিলবে পশ্চিম উত্তরপ্রদেশ, দিল্লি, হরিয়ানা ও পাঞ্জাবে।