মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহালের রায় চেম্বারেও বহাল
অপরাজেয় বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫:৫৯ পিএম, ৯ জুন ২০২৪ রোববার
প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে জারি করা পরিপত্র অবৈধ মর্মে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বহাল রেখেছেন চেম্বার জজ আদালত। তবে এ বিষয়ে আপিল বিভাগের নিয়মিত ও পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য আগামী ৪ জুলাই পরবর্তী দিন ঠিক করেছেন আদালত।
হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিলের শুনানি নিয়ে রোববার (৯ জুন) আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম এ আদেশ দেন।
এরফলে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহালের আদেশটি আপাতত বহাল রইলো বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলে ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর জারি করা পরিপত্র ‘অবৈধ’ ঘোষণা করে গত ৫ জুন রায় দেন হাইকোর্ট। পরে হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ।
রোববার (৯ জুন) সকালে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ আবেদন করা হয়। এর শুনানি নিয়েই হাইকোর্টের আদেশটি বহাল রাখেন চেম্বার আদালত। এর ফলে সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল থাকবে।
সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলে ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর জারি করা পরিপত্র কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট। মন্ত্রিপরিষদ সচিব, মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব, পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টদের সাতদিনের মধ্যে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছিল।
এ সংক্রান্ত রিটের শুনানি নিয়ে ২০২১ সালের ৬ ডিসেম্বর হাইকোর্টের বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।
নারী কোটা ১০ শতাংশ, মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৩০ শতাংশ এবং জেলা কোটা ১০ শতাংশ বাতিল করে ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর এ পরিপত্র জারি করা হয়।
তখন রিটকারীরা জানিয়েছিলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষেত্রে ৩০ শতাংশ কোটা নবম গ্রেড (পূর্বতন প্রথম শ্রেণি) এবং ১০ম থেকে ১৩তম গ্রেড (পূর্বতন দ্বিতীয় শ্রেণি) বাতিল করে (তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণি) ১৪ থেকে ২০তম গ্রেডে রাখা হয়েছে। যা বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরবর্তী প্রজন্মকে হেয়প্রতিপন্ন করার শামিল।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিধি-১ শাখা থেকে ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর নবম গ্রেড এবং ১০ম থেকে ১৩তম গ্রেড পর্যন্ত সরাসরি নিয়োগে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে একটি পরিপত্র জারি করা হয়।
সেখানে বলা হয়েছিল, ৯ম গ্রেড (পূর্বতন ১ম শ্রেণি) এবং ১০ম-১৩তম গ্রেড (পূর্বতন ২য় শ্রেণি) পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধাতালিকার ভিত্তিতে নিয়োগ দিতে হবে। ওই পদসমূহে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি বাতিল করা হলো।
ওই পরিপত্র চ্যালেঞ্জ করে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্ম কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সভাপতি অহিদুল ইসলাম তুষারসহ সাতজন হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন। ওই রিটের শুনানি নিয়ে কোটা বাতিলের পরিপত্র কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত।
এদিকে সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে ২০১৮ সালের ৩ অক্টোবর মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদে ৫৬ শতাংশ কোটা বাতিল করা হয়। তবে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণিতে কোটা ব্যবস্থা বহাল রাখে সরকার।