চীনকে যুদ্ধের হুঁশিয়ারি ফিলিপাইনের
ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক
প্রকাশিত: ১০:৫৬ পিএম, ১ জুন ২০২৪ শনিবার
চীনকে দক্ষিণ চীন সাগরে ‘রেডলাইন’ অতিক্রম না করার জন্য সতর্ক করেছেন ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোস জুনিয়র। যেখানে দেশগুলোর মধ্যে স্থবিরতা অব্যাহত রয়েছে। মার্কোস বলেছেন, চীনের ইচ্ছাকৃত পদক্ষেপের কারণে যদি ফিলিপাইনের কোনো নাগরিকের মৃত্যু হয় তাহলে ফিলিপাইন এটিকে যুদ্ধের একটি ধাপ হিসাবে বিবেচনা করবে এবং সেই অনুযায়ী এর জবাব দেওয়া হবে।
শুক্রবার সিঙ্গাপুরে এক নিরাপত্তা সামিটে এমন মন্তব্য করেন মার্কোস। এই ফোরামে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রতিরক্ষাপ্রধানরাও অংশ নিয়েছেন। শনিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।
ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্টের এমন মন্তব্যের জবাবে একজন চীনা সামরিক মুখপাত্র ফিলিপাইনের বিরুদ্ধে ‘উসকানিমূলক’ মন্তব্যের অভিযোগ এনেছেন। নাম প্রকাশ না করা ওই সামরিক মুখপাত্র বিবিসিকে বলেছেন, ‘দুর্ঘটনাক্রমে যদি শুধু একজনের নিহতের ঘটনায় কেউ যুদ্ধের সূত্রপাত করতে চায়, তাহলে আমি বিশ্বাস করি তারা যুদ্ধভাবাপন্ন একটি দেশ।’ কয়েক ঘণ্টা পরে মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব লয়েড অস্টিনও তার বক্তৃতায় বলেছেন, ফিলিপাইন যা করছে তা বিপজ্জনক।
দক্ষিণ চীন সাগরের ভূখণ্ড নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চীন ও ফিলিপাইনের মধ্যে অচলাবস্থা চলছে। তবে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে দুই দেশের মধ্যে এই অচলাবস্থা সংঘর্ষ পর্যায়ে গেছে।
ম্যানিলার পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, চীনা নজরদারি জাহাজ ফিলিপাইনের নৌকা ও জাহাজের ওপর জলকামান দিয়ে হামলা চালিয়েছে। তবে বেইজিংয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা তাদের ভূখণ্ডের সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করছে। সামরিক বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, দক্ষিণ চীন সাগরে উত্তেজনা বাড়লে তা বেইজিং ও ওয়াশিংটনের মধ্যে সংঘর্ষের জন্ম দিতে পারে। ফিলিপাইনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা চুক্তি রয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী, ম্যানিলা আক্রমণের শিকার হলে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশটির প্রতিরক্ষায় এগিয়ে আসবে ওয়াশিংটন।
ওয়াশিংটন বলছে, তারা এই অঞ্চলে মিত্রদের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবে। গত মাসে ফিলিপাইন ও জাপানের সঙ্গে একটি শীর্ষ সম্মেলন আয়োজন করে দেশ দুটির সঙ্গে সম্পর্ক আরও জোড়ালো করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এদিকে ফিলিপাইনও নিজেদের সামরিক ব্যয় বাড়াচ্ছে এবং ভারতের কাছ থেকে ক্ষেপণাস্ত্র কিনেছে।
শুক্রবারের নিরাপত্তা সামিটে ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট আরও উল্লেখ করেছেন, সাম্প্রতিক সংঘর্ষে ফিলিপাইনের নাগরিক আহত হয়েছেন। তবে কেউ নিহত হননি। কেউ নিহত হলে পরিস্থিতি খারাপ হবে বলে সতর্ক করেন তিনি। সাম্প্রতিক যৌথ সামরিক মহড়ায় ফিলিপাইনে একটি মধ্য-পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা পাঠানোর বিষয়েও আপত্তি জানিয়ে তিনি বলেছেন, এটি আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য সত্যিকারের হুমকি। মার্কোস বলেছেন, এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে এ অঞ্চলে বিভাজন সৃষ্টি হবে। সংঘাত সৃষ্টি হবে এবং এটি স্থিতিশীলতা নষ্ট করবে।