ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় প্রস্তুত চট্টগ্রাম বন্দর
অপরাজেয় বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৭:৪৪ পিএম, ২৫ মে ২০২৪ শনিবার
সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় রেমালের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। শনিবার বিকালে আবহাওয়া অধিদপ্তর চট্টগ্রামসহ দেশের চার সমুদ্রবন্দরের জন্য তিন নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে নির্দেশনা দেওয়ার পর লাইটার জাহাজ চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বহির্নোঙরে বড় জাহাজ থেকে পণ্য খালাসে লাইটার জাহাজ ব্যবহৃত হয়। বড় জাহাজ (মাদার ভেসেল) সাধারণত বহির্নোঙরে অবস্থান করে। এগুলো থেকে লাইটার জাহাজে পণ্য বোঝাই করে দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়।
দুপুর পর্যন্ত বহির্নোঙর ও জেটিতে পণ্য খালাস স্বাভাবিক ছিল। তবে এরপর বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়া শুরু হলে পণ্য ওঠা নামা ধীরে ধীরে কমতে থাকে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক যুগান্তরকে জানান, সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলার প্রস্তুতি হিসেবে সকালে বন্দর ভবনে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েলের সভাপতিত্বে এতে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। সভায় আবহাওয়ার গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে যখন যে ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়োজন হবে, তার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে প্রস্তুত থাকাতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তিনি জানান, বিকালে আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে তিন নম্বর সতর্কতা সংকেত জারির পর নতুন করে তীর থেকে আর কোনো লাইটার বহির্নোঙরে যাচ্ছে না। আগে থেকে যেসব লাইটার বহির্নোঙরে ছিল, সেগুলো বড় জাহাজ থেকে পণ্য লোড করছিল। জেটিতেও পণ্য খালাস হচ্ছিল তবে সতর্কতা সংকেত বাড়লে সেই অনুযায়ী পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রাতে এ বিষয়ে আরেকটি বৈঠক হওয়ার কথা। সেখান থেকে বন্দরে জাহাজ চলাচল, পণ্য ওঠা নামা ও ডেলিভারি বিষয়ে আরও নির্দেশনা দেওয়া হবে।
বন্দর সূত্র জানায়, সাধারণত আবহাওয়া অফিস তিন নম্বর সতর্কতা সংকেত দিলে লাইটার জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখে সংশ্লিষ্টরা। ১৯৯২ সালে বন্দর কর্তৃপক্ষ প্রণীত ঘূর্ণিঝড়-দুর্যোগ প্রস্তুতি ও ঘূর্ণিঝড়-পরবর্তী পুনর্বাসন পরিকল্পনা অনুযায়ী, আবহাওয়া অধিদপ্তরের সংকেতের ওপর ভিত্তি করে চার ধরনের সতর্কতা জারি করে বন্দর।
আবহাওয়া অধিদপ্তর ৩ নম্বর সংকেত জারি করলে বন্দর প্রথম পর্যায়ের সতর্কতা বা ‘অ্যালার্ট-১’ জারি করে। আবহাওয়া অধিদপ্তর ৪ নম্বর সংকেত জারি করলে বন্দর ‘অ্যালার্ট-২’ জারি করে।বিপদসংকেত ৫, ৬ ও ৭ নম্বরের জন্য বন্দরে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সতর্কতা ‘অ্যালার্ট-৩’ জারি করা হয়। মহা বিপদসংকেত ৮, ৯ ও ১০ হলে বন্দরে সর্বোচ্চ সতর্কতা ‘অ্যালার্ট-৪’ জারি করা হয়। নিজস্ব অ্যালার্ট-২ দেওয়া হলে লাইটার জাহাজগুলোকে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে বলা হয়। অ্যালার্ট ৩ জারি হলে জেটি থেকে জাহাজ সরিয়ে নেওয়া হয় বহির্নোঙরে। এছাড়া পণ্য খালাসে ব্যবহৃত সরঞ্জাম দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা হয়। আর অ্যালার্ট-৪ জারি করা হলে পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়া হয় অপারেশনাল কার্যক্রম।
লাইটার জাহাজ চলাচল তদারককারী প্রতিষ্ঠান ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেল সূত্র জানায়, শনিবার দুপুর থেকে দফায় দফায় বৃষ্টি হচ্ছে। সাগর কিছুটা উত্তাল। এ অবস্থায় লাইটার জাহাজ বহির্নোঙরে যেতে পারছে না।