একাকীত্ব কল্পনাশক্তি বাড়ায়!
লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১:৪২ পিএম, ২০ ডিসেম্বর ২০২০ রোববার আপডেট: ০২:১২ পিএম, ২০ ডিসেম্বর ২০২০ রোববার
করোনায় লকডাইনের কারণে অনেকের জীবনই কাটছে একাকীত্বে। তবে এই একাকীত্ব মানুষের মস্তিষ্কের কল্পনাশক্তি বাড়ায় বলে জানিয়েছে নতুন এক গবেষণা।
ন্যাচার কমিউনিকেশনস নামের জার্নালে প্রকাশিত গবেষণায় বলা হয়, মানুষের মস্তিষ্কের যে অংশ কাল্পনিক বিষয় নিয়ে কাজ করে তা একাকী থাকার সময় বেশি কাজ করে। কেননা এসময় মানুষ অন্যদের নিয়ে, নিজের ভবিষ্যত নিয়ে অনেক বেশি ভাবে।
গবেষকরা হাইপোথিসিস করে বলেছেন, একাকী থাকার সময় মানুষর মস্তিষ্কের যে অংশ স্মৃতি সংরক্ষণ ও সামাজিক জ্ঞান ধারণ করে সেখানে পরিবর্তন দেখা দেয়।
গবেষণা দলের প্রধান, ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক নাথান স্প্রেঙ জানান, একাকী থাকার সময় মানুষের ডাটা সংরক্ষণে বিপুল পরবর্তনের বিষয়টি আমাদের অবাক করেছে।
মস্তিষ্কের এই জায়গার ক্ষমতা অনেক শক্তশালী হয় এবং একাকী না থাকা ব্যক্তিদের চেয়ে তাদের গ্রে ম্যাটার ভলিউমও ছিল অনেক ভালো।
করোনা মহামারির আগে এককীত্বকে মানুষের স্বাস্থ্য ঝুঁকি হিসেবে বিবেচনা করা হতো। গুরুত্ব বিবেচনায় ২০১৮ সালে যুক্তরাজ্যে একীকত্ব সংক্রান্ত মন্ত্রীও নিয়োগ দেয়া হয়।
২০১৫ সালের বিশ্বব্যাপী করা এক গবেষণা থেকে দেখা যায়, যারা নিজেদের একা দাবি করেনা তাদের চেয়ে একা দাবি করা প্রাপ্তবয়স্করা ১.৬৪ গুণ বেশি উন্মত্ততায় ভোগে।
এই ফলাফলের কারণেই গবেষকরা নতুন করে গবেষণা শুরু করতে উৎসাহী হন। গবেষণার জন্য তারা ৪০ হাজার মানুষের সিটি স্ক্যান রিপোর্ট নেন যুক্তারাজ্যের বায়োব্যাংক থেকে, যেখোনে ৫ লাখ বৃটিশ নাগরিকের রিপোর্ট জমা আছে।
তারপর ৪০ থেকে ৬৯ বয়ষ্ক ব্যক্তিদের কাছে যাওযা হয় এবং তারা একাকী কিনা তা পরীক্ষা করতে একটি প্রশ্নপত্র দেয়া হয়। তারপর গবেষকরা নিজেদের একাকী দাবি করা মানুষের কাছে যান। এধরনের উপাত্ত থেকেই নিজেদের গবেষণা ফলাফল বের করে আনেন তারা।
গবেষণার বিষয়ে স্প্রেঙ জানান, এমন বৈজ্ঞানিক গবেষণায় এর আগে কখনও এত বড় নমুনা নিয়ে কাজ করা হয়নি। বায়োব্যাংক থেকে ছবিগুলো পাওয়ার সাথে সাথেই আমরা কাজ শুরু করি। বিপুল সংখ্যক নমুনা নিয়ে কাজ করায় অনেক নতুন কিছু প্রকাশ পেয়েছে।
তাদের ফলাফলের সাথে একমত পোষণ করেছেন ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউরোলজি বিভাগের প্রফেসর এমেরিটাস, ‘ক্রিয়েটিভিটি এন দ্য ব্রেইন’ ও ‘দ্য বিলিভারস ব্রেইন’ এর লেখক ড. কেনেথ হেইলম্যান। তিনি এই গবেষণার সাথে যুক্ত ছিলেন না। তিনি জানান, গবেষণার ফলাফল সঠিক হতে পারে তবে চিন্তার বিষয় হলো একাকীত্বের সময় কল্পনাশক্তি বাড়লেও মানুষের সামাজিক মিথষ্ক্রিয়ার অংশের কর্মক্ষমতা এই সময় লোপ পেতে পারে।