তিস্তা প্রকল্পে অর্থায়নে আগ্রহী ভারত
অপরাজেয় বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৮:৩৩ পিএম, ৯ মে ২০২৪ বৃহস্পতিবার
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বাংলাদেশ সফররত ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রা। এই সাক্ষাতে দ্বিপাক্ষিক নানা বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তিস্তা নদীতে বাংলাদেশের নেওয়া প্রকল্পে অর্থায়নের আগ্রহ প্রকাশ করেছে ভারত। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর, সীমান্ত হত্যা এবং ভিসা ইস্যুতে দুপক্ষের মধ্যে আন্তরিক আলোচনা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এ বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মন্ত্রী বলেন, ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে সাক্ষাতে দ্বিপাক্ষিক বিষয়াবলী নিয়ে আন্তরিক আলোচনা হয়েছে। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বহুমাত্রিক সম্পর্ক, অত্যন্ত চমৎকার সম্পর্ক, যে সম্পর্ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে।
প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর অনেক আগে থেকে ভারত সফরের কথা রয়েছে। ভারতে যেহেতু নির্বাচন, সেটি শেষ না হওয়া পর্যন্ত কখন সফর হবে, সেটি নির্ধারণ করা সম্ভব হচ্ছে না। ভারতে নির্বাচনের পর সরকার গঠন হবে। তারপর প্রধানমন্ত্রীর সফর কখন হবে, সেটি ঠিক হবে।
ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে তিস্তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে কি না- জানতে চাইলে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘তিস্তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তিস্তায় আমরা একটা বৃহৎ প্রকল্প নিয়েছি। ভারত সেখানে অর্থায়ন করতে চায়। আমি বলেছি, তিস্তায় যে প্রকল্পটি হবে, সেটা আমাদের প্রয়োজন অনুযায়ী হবে। আমাদের প্রয়োজন যেন পূরণ হয়।’
কানেক্টিভিটি নিয়ে এবং বাংলাদেশিদের জন্য ভারতীয় ভিসা সহজ করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, প্রতিবছর বাংলাদেশের ১৬-১৭ লাখ মানুষের জন্য ভিসা ইস্যু করে ভারত। বিশ্বে সর্বোচ্চ ভিসা ভারত ইস্যু করে বাংলাদেশে। অনেক সময় ভিসা পেতে অপেক্ষা করতে হয়। সেটি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বলেছেন- বাংলাদেশে ভারতীয় মিশনের সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য তারা আরও লোকবল নিয়োগ করছেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, আমি এ বিষয়ে উদ্ভাবনী প্রক্রিয়ার কথা আলোচনা করেছি, অনলাইনে আবেদনের কথা বলেছি যেন সহজে মানুষ ভিসা পায়। তারা বিষয়টি আন্তরিকতার সঙ্গে দেখছেন বলে জানিয়েছেন।
শক্তির উৎসের কানেক্টিভিটি নিয়ে আলোচনার কথা উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, আমরা ফিজিক্যাল কানেকটিভিটি নিয়ে আলোচনা করেছি। সেটি অনেক দূর এগিয়েছে। বিশেষ করে নেপাল ও ভুটানকে ট্রানজিট দেওয়া এবং এ দুই দেশ থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানি করার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করা। ইতোমধ্যে নেপাল থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানি করার ক্ষেত্রে সবকিছু চূড়ান্ত হয়েছে। ট্যারিফ নিয়েও আলোচনা অনেকটা চূড়ান্ত হয়েছে। সেটি আমাদের ক্রয় কমিটিতে যাবে। সেটি হলে ভারতের ওপর দিয়ে আমরা নেপাল থেকে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করতে পারব।
বৈঠকে সীমান্ত হত্যা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, নন-লেথাল (প্রাণঘাতী নয়) এমন অস্ত্র ব্যবহার করার ওপর আমরা গুরুত্বারোপ করেছি। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব জানিয়েছেন- তারা তাদের সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে নির্দেশনা দিয়েছেন। তাদের আন্তরিকতার অভাব নেই। এটি নিয়ে দুই দেশের সরকারি ও রাজনৈতিক পর্যায়ে আন্তরিকতার কোনো ঘাটতি নেই।
এ সময় উপজেলা নির্বাচন নিয়ে এক প্রশ্নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় অনেক শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হয়েছে। বিএনপির নিষেধ সত্ত্বেও তাদের নেতাকর্মীরা নির্বাচনে অংশ নিয়েছে।