সবাই এক হয়ে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ঝাঁকি দিতে হবে: ফখরুল
অপরাজেয় বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১:১১ পিএম, ২০ এপ্রিল ২০২৪ শনিবার
‘গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলসহ সব মানুষকে এক হয়ে স্বোচ্চার কণ্ঠে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ঝাঁকি দেওয়ার’ আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে এক নাগরিক শোকসভায় তিনি এ আহ্বান জানান।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই শোকসভার আয়োজন করা হয়।
ফখরুল বলেন, ‘আমরা একটা ভয়াবহ শাসন ব্যবস্থার মধ্যে পড়েছি। অবলীলায় এখানে হত্যা, গুম করা হয়। আমরা কঠিন সময় অতিক্রম করছি। দেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো নয়। বিচারব্যবস্থা দলীয়করণ হয়ে গেছে। নির্বাচনি ব্যবস্থাকে ধ্বংস করা হয়েছে। ধ্বংস করার আর অবশিষ্ট কিছু নেই। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আর নামমাত্র নেই। লুটপাট করে দেশের সংবিধান, নির্বাচন সব ধ্বংস করে দিয়েছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক সংকট ভয়াবহভাবে আমাদেরকে আক্রমণ করেছে। এর থেকে বেরিয়ে আসার জন্য আমরা হাত পা ছুটছি। যারা রাজনীতি করি, কর্মী আছি তারা বিভিন্নভাবে চেষ্টা করছি। নিগৃহীত ও নির্বিচারে নির্যাতিত হচ্ছি। নেতাকর্মীরা জীবন দিচ্ছেন, তারপরেও দানবকে সরানো যাচ্ছে না।’
তিনি বলেন, ‘এজন্য প্রয়োজন জাতি ঐক্যবদ্ধ হওয়া। যারা দেশকে ভালোবাসেন, যেসব রাজনৈতিক দল গণতান্ত্রিক একটা ব্যবস্থা তৈরি করতে চান, তাদেরকে এক হয়ে স্বোচ্চার কণ্ঠে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ঝাঁকি দিতে হবে। তবেই বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে।’
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে নিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তিনি আমার একজন অভিভাবক ছিলেন। ছাত্রজীবন থেকেই তাকে জানতাম। আজীবন বিপ্লবী একজন মানুষ ছিলেন। তিনি নিজেই একজন বিপ্লব। সেই মানুষটিকে কখনো কোনো বিষয়েই নিরাশ হতে দেখিনি। পরাজিত বোধ করতে দেখিনি। পরিবর্তনের জন্য সব সময় তরুণদের দিকে ছুটে গেছেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ আজীবন যুদ্ধ করে গেছেন। একটা নতুন পৃথিবী চেয়েছিলেন। সে লক্ষেই তিনি গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সত্য-ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করেছেন।’
সুজনের সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘অকুতভয় ডা. জাফরুল্লাহকে দেশের জন্য প্রয়োজন ছিল। তিনি সত্যের পক্ষে ছিলেন, দেশের পক্ষে ছিলেন। মানুষের মুক্তির জন্য আজীবন লড়াই করে গেছেন। দেশে মুখোশধারী মুক্তিযোদ্ধার বাইরে তিনি প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন।’
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘যারা এখন মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে তারা এই বীর মুক্তিযোদ্ধাকে সম্মান জানায়নি। দেশে এখন গুণী মানুষের সম্মান নিয়ে বেঁচে থাকাটাই কঠিন। বাংলাদেশ এখন দখলদারিত্বে পরিণত হয়েছে। সব রাষ্ট্রীয় কাঠামো ভেঙে পড়েছে।’
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতার প্রথম মৃত্যুবার্ষির্কী উপলক্ষ্যে আলোচনা সভায় বিএনপি সমমনা দলগুলোর নেতাদের পাশাপাশি নাগরিক সমাজের বিশিষ্ট্যজনরা অংশ নেন। ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর প্রতি স্মৃতিচারণ করে বক্তব্য দেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, ভাসানী অনুসারী পরিষদের বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম বাবুল, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির তানিয়া রব, গণফোরামের (মন্টু) সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুব্রত রায় চৌধুরী, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, বেলা’র নির্বাহী পরিচালক অ্যাডভোকেট সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান, ঢাবির অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল, ব্যারিস্টার সারা হোসেন, ফটো সাংবাদিক শহীদুল আলম, ব্রতী’র শারমিন মোর্শেদ, অর্থনীতিবিদ ড. রাশেদ আহমেদ তিতুমীর, গণঅধিকার পরিষদ (একাংশের) সভাপতি নুরুল হক নুর, অপর অংশের আহ্বায়ক কর্নেল মিয়া মশিউজ্জামান, এফবিসিসিআই সাবেক পরিচালক আব্দুল হক, মায়ের ডাকের সানজিদা ইসলাম।