ভৈরবে নৌকাডুবি: নিখোঁজ কনস্টেবলের স্ত্রী-মেয়ের লাশ উদ্ধার
অপরাজেয় বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৮:৩৫ পিএম, ২৩ মার্চ ২০২৪ শনিবার
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে মেঘনা নদীতে বাল্কহেডের ধাক্কায় নৌকাডুবিতে আরও দুজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। শনিবার দুপুরে লাশ দুটি উদ্ধার করা হয়। তারা হলেন- ভৈরব হাইওয়ে থানার কনস্টেবল সোহেল রানার স্ত্রী মৌসুমী বেগম (২৬) ও তাদের সাত বছর বয়সি মেয়ে ইভা বেগম।
এ নিয়ে তিনজনের লাশ উদ্ধার করা হলো। এর আগে শুক্রবার শহরের কমলপুর এলাকার সুবর্না বেগমের (৩০) লাশ উদ্ধার করেন স্থানীয়রা।
এখন পর্যন্ত পুলিশসহ ছয়জন নিখোঁজ রয়েছেন। তারা হলেন- পুলিশ কনস্টেবল সোহেল রানা (৩৪), তার মেয়ে মাহমুদা সুলতানা (৭), ছেলে রাইসুল (৫), নরসিংদির বেলাব থানার দড়িকান্দি গ্রামের দারু মিয়ার মেয়ে আনিকা আক্তার (১৮), শহরের আমলাপাড়া এলাকার ঝন্টু দে’র স্ত্রী রুপা দে (৩০) ও কিশোরগঞ্জের কটিয়াদি উপজেলার মানিকখালী গ্রামের বেলন দে (৪৫)।
শুক্রবার বিকালে নাহিদ মাঝির একটি ভ্রমণতরি ১৫/২০ জন যাত্রী নিয়ে নদী ভ্রমণে যায়। সন্ধ্যায় ইফতারের আগে নৌকাটি ভৈরব পাড়ে ফেরার সময় বালুবাহী বাল্কহেডের ধাক্কায় পানিতে ডুবে যায়।
ভৈরব নৌ-থানা পুলিশ বালুবাহী বাল্কহেডটি রাতেই নরসিংদীর রায়পুরা এলাকা থেকে তিন মাঝিসহ আটক করে।
শনিবার ভোর থেকে মেঘনা নদীতে ফায়ার সার্ভিসকর্মী ও বিআইডব্লিউটিএর ডুবুরিসহ পুলিশ উদ্ধার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। ডুবে যাওয়া নৌকাটি নদীর তলদেশে চিহ্নিত করা গেলেও এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, নৌকা ডুবির সময় পুলিশ সদস্য সোহেল রানার ভাগ্নি মারিয়া (১৬), রুবা (১৮), তোফাজ্জলসহ কয়েকজন সাঁতরে পাড়ে উঠে প্রাণে বাঁচেন। সাতজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয় এবং তোফাজ্জলকে আহত অবস্থায় ঢাকায় রেফার্ড করেন ডাক্তাররা। ঘটনার সময় ভ্রমণতরিতে থাকা পুলিশ ও তার পরিবারের সদস্যসহ আটজন নিখোঁজ হয়।
নারায়ণগঞ্জের বিআইডব্লিউটিএর প্রত্যয়ের কমান্ডার মো. ওবাইদুর রহমান বলেন, আমরা খবর পেয়ে খুব ভোরে ভৈরবে এসে নদীতে উদ্ধারকাজ শুরু করি। ফায়ার সার্ভিসকর্মীরা আমাদের সহযোগিতা করে। দুপুর ২টায় ভ্রমণতরিটি ডুবুরিরা নদীতে চিহ্নিত করে দুটি লাশ উদ্ধার করে। পানির তলদেশ থেকে নৌকাটি তোলার জন্য চেষ্টা করছি।
স্থানীয় ফায়ার সার্ভিস স্টেশন অফিসার আজিজুল হক জানান, শুক্রবার থেকে আজ পর্যন্ত ফায়ার কর্মীরা উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে। শনিবার আরও দুটি লাশ উদ্ধার করলেও নিখোঁজ রয়েছেন আরও ৬ জন। ধারণা করছি স্রোতে তারা দক্ষিণের দিকে চলে যেতে পারে।
ভৈরব হাইওয়ের থানার ওসি মো. সাজু মিয়া জানান, সোহেল রানা আমার থানায় কর্মরত ছিল। তার বাড়ি কুমিল্লায়। তিনি পরিবারসহ শুক্রবার মেঘনা নদীতে দুর্ঘটনা পড়ে নিখোঁজ হন। শনিবার তার স্ত্রীর লাশ উদ্ধার হলেও অন্যরা এখনো নিখোঁজ রয়েছেন।
ভৈরব নৌ-থানার ওসি মো. মনির হোসেন জানান, তিনজনকে আটক করেছি। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ঘটনার জন্য তারা দায়ী হলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।