খালেদা জিয়ার মুক্তির আবেদনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত মঙ্গলবার
অপরাজেয় বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩:০৪ পিএম, ১৮ মার্চ ২০২৪ সোমবার
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধি ও বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার আবেদনের বিষয়ে মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক।
সোমবার (১৮ মার্চ) দুপুরে সচিবালয়ে আইন মন্ত্রণালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ তথ্য জানান।
খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়াতে গত ৬ মার্চ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন তার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার। আবেদনে তাকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার অনুমতি চাওয়া হয়। পরে সেই আবেদনের বিষয়ে মতামত নিতে সেটি আইন মন্ত্রণালয় পাঠানো হয়।
খালেদা জিয়ার স্থায়ী মুক্তি ও বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার জন্য পরিবারের আবেদনের বিষয়ে জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, প্রথম কথা হচ্ছে, এই চিঠিতেও তারা আগের মতোই স্থায়ী মুক্তি চাচ্ছেন। আমি বুঝলাম না স্থায়ী মুক্তি মানে কী? এছাড়া, বিদেশ যাওয়ার অনুমতি চাচ্ছেন। আমার কাছে আজকে সচিব ফাইলটা দিয়েছেন। ওনারা (খালেদার পরিবার) কী আবেদন করেছেন, সেটি দেখে ভালো করে বিবেচনা করে আমি অতিসত্বর নিষ্পত্তি করব। আগামীকাল (মঙ্গলবার) নাগাদ হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।
তিনি বলেন, ফাইলটা আজকেই পেয়েছি। আমাকে বিবেচনা করতে হবে, পড়তে হবে, আমাকে দেখতে হবে। তবে, একটা বিষয় বলতে পারি, সেটি হলো... খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্তে কোনো পরিবর্তন হবে না।
এর আগে, ঢাকার নিজ বাসায় থেকে চিকিৎসা গ্রহণ করবেন এবং এই সময়ে তিনি দেশের বাইরে যেতে পারবেন না— এ দুটি শর্তে খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিতের মেয়াদ আটবার বাড়ানো হয়েছে। এবার বাড়ানো হলে নয়বারের মতো খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়বে। সর্বশেষ গত বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ ছয় মাস বাড়ানো হয়েছিল। সেই মেয়াদ আগামী ২৪ মার্চ শেষ হবে।
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে স্বাস্থ্যের কিছু পরীক্ষা শেষে গত ১৪ মার্চ গুলশানের বাসায় ফেরেন খালেদা জিয়া। এর আগে, ১৩ মার্চ রাতে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে আর্থরাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, লিভার, ফুসফুস ও চোখের সমস্যাসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। অসুস্থতা বাড়লে মাঝে মাঝে তাকে হাসপাতালে নিতে হচ্ছে।
উল্লেখ্য, দুটি মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত খালেদা জিয়া কারাবন্দি ছিলেন। নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিত রয়েছে। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন বকশীবাজার আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার পাঁচ নম্বর বিশেষ আদালত। রায় ঘোষণার পর খালেদাকে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে অবস্থিত পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রাখা হয়।
এরপর একই বছরের ৩০ অক্টোবর এই মামলায় আপিলে তার আরও পাঁচ বছরের সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করেন হাইকোর্ট। একই বছরের ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়াকে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন একই আদালত। রায়ে সাত বছরের কারাদণ্ড ছাড়াও খালেদা জিয়াকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেন। এরপর ২০২০ সালের মার্চে করোনা মহামারি শুরু হলে পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাহী আদেশে দণ্ড স্থগিত করে কারাবন্দি খালেদা জিয়াকে সরকার শর্তসাপেক্ষে ছয় মাসের জন্য মুক্তি দেয়।