অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

বাংলাদেশের অর্থনীতিতে আস্থা ফিরে আসবে: এডিবি’র কান্ট্রি ডিরেক্টর

বাসস

প্রকাশিত: ১১:২৯ এএম, ১৯ জানুয়ারি ২০২৪ শুক্রবার  

বাংলাদেশে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন গিনটিং বলেছেন, ৭ জানুয়ারি সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার পর বাংলাদেশের অর্থনীতিতে আস্থা ফিরে আসবে। বাংলাদেশ সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, “আমি মনে করি, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে যে নির্বাচন শেষ হয়েছে- এখন আস্থা ফিরে আসবে।”

গিনটিং বলেন, গত সাধারণ নির্বাচন নিয়ে কিছু প্রশ্ন আছে, “তবে নির্বাচনের পর, সরকার আগের মতোই আত্মবিশ্বাসী হবে।” তিনি বলেন, বাংলাদেশে গত ১৫ বছরে যে অগ্রগতি হয়েছে, তাতে এডিবি খুবই গর্বিত। “সুতরাং, আমরা অতীতে অর্জিত উচ্চ প্রবৃদ্ধি ফিরিয়ে আনতে সরকারকে সাহায্য করার জন্য উন্মুখ। বর্তমান চ্যালেঞ্জের প্রেক্ষাপটেও, আমরা যথেষ্ট আশ্বস্ত যে আগামী পাঁচ বছরে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ আরও ভাল হবে” বলেও তিনি উল্লেখ করেন। 

তিনি বলেন, বাংলাদেশ উন্নয়নের একটি বড় উদাহরণ। এডিবি অবশ্যই সরকারের সাথে কাজ করে গর্বিত। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ তুলনামূলকভাবে কম থাকার সমস্যা থেকে উত্তরণের ভবিষ্যৎ কৌশল সম্পর্কে জানতে চাইলে এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর বলেন, সরকার বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের সমস্যা মোকাবেলা করছে। তিনি বলেন, “আমরা মনে করি,  সরকার যে নীতিসমূহ বাস্তবায়ন করেছে- তা সঠিক পথেই রয়েছে। তবে  বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভকে শক্তিশালী করা দরকার।” 

এ বিষয়ে তিনি বলেন, এডিবি সাধারণত প্রতি বছর বাংলাদেশকে যে বাজেট সহায়তা দেয়, তা থেকে ৮০ কোটি ডলার সরাসরি রিজার্ভে যায়। একই সঙ্গে তিনি বলেন, এডিবি অন্যান্য বহুপাক্ষিক ও দ্বিপাক্ষিক উন্নয়ন সহযোগীদের মতো কার্যক্রমের মাধ্যমে বাংলাদেশে বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ে আসে। তিনি বলেন, “অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগীদের সাথে এডিবি’র কার্যক্রম সম্প্রসারণ রাজস্ব বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে।” বেসরকারি খাত এবং প্রবাসীরা সর্বাধিক পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা আনে উল্লেখ করে গিনটিং বলেন, তারা আরও বেশি বৈদেশিক মুদ্রা আনলে, এটি রিজার্ভকে উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়ে তুলবে।

এডিবি’র কান্ট্রি ডিরেক্টর বলেন, “দীর্ঘমেয়াদে আমরা বিনিয়োগের পরিবেশের উন্নতির জন্য সরকারের সাথেও কাজ করব। বাংলাদেশ প্রবৃদ্ধির একটি দুর্দান্ত দৃষ্টান্ত। কিন্তু, এফডিআই আকর্ষণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ তার ওজনের নিচে রয়েছে। বাংলাদেশ বিনিয়োগের নিয়ন্ত্রক কাঠামোর উন্নতি করতে পারে এবং সেভাবে প্রবৃদ্ধিও লক্ষ্যে আরও এফডিআই আকর্ষণ করতে পারে। দেশের অর্থনীতি সঠিক পথে আছে কি না জানতে চাইলে এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর বলেন, বর্তমান চ্যালেঞ্জের মধ্যেও বাংলাদেশের অর্থনীতি খুবই শক্তিশালী, প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশ যার জন্য সবার গর্ব করা উচিত। তিনি বলেন, “বহির্বিশ্বের চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও সামগ্রিক উন্নয়ন অব্যাহত রয়েছে। আমি মনে করি, এটি উল্লেখযোগ্য যে বাংলাদেশের অর্থনীতি খুব শক্তিশালী হয়েছে এবং বেসরকারি খাতে আস্থার পরিবেশ থাকায় এটি আরও শক্তিশালী হতে থাকবে। আমরা সরকারকে সমর্থন অব্যাহত রাখব।”

অর্থমন্ত্রী মাহমুদ আলী বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ পরিস্থিতি সম্পর্কে বলেন, সরকার ইতোমধ্যে এ নিয়ে কাজ শুরু করেছে, এজন্য একটু অপেক্ষা করতে হবে। তিনি বলেন, “আমরা অতীতে অনেক প্রতিকূল পরিস্থিতি উত্তরণ করেছি এবং ভবিষ্যতেও করতে পারব বলে আশা করছি।

আমাদের প্রথমে কাজ করতে হবে এবং আমরা কাজ করছি... এডিবি আমাদের ওপর তার আস্থা দেখিয়েছে।  তারা মন্তব্যও  করেছে যে শেখ হাসিনাকে আবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখে তারা খুশি।” এক প্রশ্নের জবাবে আলী বলেন, “আমরা ম্যানিলা ভিত্তিক ঋণদান সংস্থার কাছ থেকে উচ্চতর সমর্থন আশা করি, যদিও তাদের দৃষ্টিভঙ্গি কিছুটা আলাদা। তারা আমাদের সমর্থন দিচ্ছে এবং তাদের প্রাক্কলন অনুযায়ী, আমাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধি প্রায় ৬ শতাংশ, যা আরও বাড়বে।” তিনি অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আর্থিক ও রাজস্ব নীতির মধ্যে ভাল সমন্বয় থাকবে। এর জন্য কিছু সময় প্রয়োজন।