অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

গণধর্ষণে সাজাপ্রাপ্ত আসামীদের মুক্তি

গুজরাট সরকারের তীব্র সমালোচনা করল ভারতের সুপ্রিম কোর্ট

ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৯:২৬ পিএম, ৮ জানুয়ারি ২০২৪ সোমবার  

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির রাজ্য গুজরাটের আলোচিত বিলকিস বানুর ধর্ষণ মামলায় এক ঐতিহাসিক রায় দিয়েছেন ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। দেশটির সর্বোচ্চ আদালত বলেছেন, বিলকিস বানুর ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত ১১ আসামিকে মুক্তি দিয়ে গুজরাট সরকার প্রতারণামূলক কাজ করেছে। পাশাপাশি আদালত গুজরাট সরকারকে তিরস্কারও করেছে। 

ভারতের গুজরাটে গণধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন বিলকিস বানু। ঘটনার পর ধর্ষণের অভিযোগে ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হলেও কিছুদিন আগে গুজরাট সরকার বিশেষ আদেশে তাদের ছেড়ে দেয়। পরে সরকারের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন বিলকিস বানু। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্ট ধর্ষকদের ফের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। 

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার স্থানীয় সময় সকালে ভারতের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট এ রায় দেন। এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, বিলকিস বানুর জন্য এ রায় বিরাট অর্জন এবং গুজরাট সরকারের জন্য কড়া ধাক্কা।

বিলকিস বানুর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বিভি নাগারথানা ও উজ্জ্বল ভূঁইয়ার সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চের রায়ে বলা হয়, মহারাষ্ট্র আদালত এ ঘটনার দোষীদের দণ্ড দেওয়ায় গুজরাট সরকারের কোনো অধিকার নেই দণ্ডিতদের দণ্ড মওকুফ করার।

এ সময় আদালত গুজরাট সরকারকে তিরস্কার করে বলেন, গুজরাট সরকারের উচিত ছিল ২০২০ সালের আদেশ তারা দিয়েছে সেটি পুনর্বিবেচনা করার জন্য আদালতের কাছে আবেদন করা এবং একই সঙ্গে এটি স্বীকার করা যে, তারা একটি যোগ্য সরকার নয়। এ সময় আদালত আরও বলেন, (দণ্ডিতদের) অব্যাহতির যে আদেশ দেওয়া হয়েছে তাতে সরকারের দক্ষতা বা যোগ্যতার অভাব রয়েছে।
আদালত আরও বলেন, অপরাধীদের মুক্তির আদেশ কেবল সেই স্থান (রাজ্য) দিতে পারে যেখানে তাদের বিচার করা হয়েছে।

বিচারপতি বিভি নাগরথানা তার পর্যবেক্ষণে বলেন, ভুক্তভোগীর অধিকার রক্ষা সব সময়ই গুরুত্বপূর্ণ এবং নারীরা সম্মান পাওয়ার যোগ্য। একজন নারী যে সমাজ বা ধর্মেরই অনুসারী হোক কেন, তাকে সমাজে যতই উচ্চ বা নিচ্ হিসেবে বিবেচনা করা হোক না কেন—তিনি সম্মানের যোগ্য। নারীর বিরুদ্ধে জঘন্য অপরাধ কী ক্ষমার যোগ্য? 

দুই বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চের রায়ে বলা হয়েছে, বস্তুগত তথ্যপ্রমাণগুলোকে দাবিয়ে ও বিভ্রান্তিকর তথ্য তৈরি করে এক আসামি গুজরাট রাজ্য সরকারের কাছে তাকে ক্ষমা করে দেওয়ার আবেদন করেছিলেন। গুজরাট সরকার সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে তাকে মুক্তি দিলেও আদালত থেকে গুজরাট সরকারকে এ বিষয়ে কোনো নির্দেশ দেওয়া হয়নি। এটি একটি প্রতারণামূলক কাজ।