অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

পিৎজা যেভাবে বাঁচিয়েছে জীবন!

সাতরং ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৩:৫১ পিএম, ১৩ ডিসেম্বর ২০২০ রোববার   আপডেট: ১০:৩৭ এএম, ১৪ ডিসেম্বর ২০২০ সোমবার

সব মানুষেরই কোনো না কোনো পছন্দের খাবার থাকে যা সে বারবার খেতে চায়। কিন্তু কার্ক আলেকজান্ডারের বিষয়টি পছন্দের খাবার না বলে আসলে বলতে হবে আসক্তি। নিজের ডায়েট নিয়ে কার্ক খুবই সিরিয়াস হলেও প্রত্যেকদিন অন্তত একটি করে পিৎজা তার খেতেই হতো। তাও শুধু ডোমিনোজের। এই কাজ কার্ক করে গেছেন টানা দশ বছর। কি সৌভাগ্য! সে আসক্তিই শেষ পর্যন্ত বাঁচিয়েছিল তার জীবন!

কার্ক আলেকজান্ডার থাকতেন ওরেগনের এক ছোট্ট শহর সালেম এ। কার্ক একাকীই ঘরে বসবাস করতেন, শুধুমাত্র পিৎজা নেয়ার সময় ছাড়া তিনি দরজার বাইরেও পা রাখতেন না। তার বাড়ির আশেপাশে কোনও ঘর না থাকায় ছিলনা প্রতিবেশীর আনোগোনাও।  

১০ বছর ধরে নিয়মিত পিৎজা অর্ডার করায় তাকে চিনতেন সব পিৎজা ডেলিভারি বয়। এমনকি অফিসে এ নিয়ে আলোচনাও হতো বেশ। কিন্তু হঠাৎ করেই বন্ধ হয়ে যায় কার্কের অর্ডার। প্রথম যেদিন অর্ডার আসেনি সেদিনই অবাক হন কর্মচারীরা। কিন্তু তিনি বাইরে গেছেন মনে করে তেমন কিছু ভাবেননি। পরবর্তী দুই দিনেও অর্ডার না আসায় কর্মীরা প্রথমে ভাবেন অন্য কোন প্রতিষ্ঠান থেকে হয়তো অর্ডার করছেন। কিন্তু ১০ বছর ধরে অর্ডারের বিষয় মাথায় আসতেই ঝেড়ে ফেলেন সেই ভাবনা। 

এভাবে কেটে যায় ১১ দিন। আর অপেক্ষা করতে পারলেন না ডোমিনোজের সালেম ব্রাঞ্চের ম্যানেজার সারাহ ফুলার। প্রথমে কয়েকবার ফোন দিয়ে সাড়া না পাওয়ায় নিজেই দায়িত্ব নিয়ে পাঠালেন পিৎজা ডেলিভারি বয় ট্রেসেই হাম্বলেনকে। 


                                                                  বাম পাশে কার্ক আলেকজান্ডার ও ডানে সালেম ডোমিনোজের ম্যানেজার সারাহ ফুলার

হাম্বলেন কার্কের বাড়িতে গিয়েই দেখতে পান জ্বলছে লাইট। কাছে গিয়ে বারবার ডাকলেও কোন সাড়া পাওয়া যায়নি। এসময় দ্রুত অফিসে ফিরে যান হাম্বলেন। সবার সাথে আলোচনা করে কল করেন জরুরী ফোন নাম্বার ৯১১-এ। বিষয়টি খুলে বলার পর দ্রুত ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। দরজা ধাক্কা দেয়ার সময় হালকা গোঙানির শব্দ পেয়ে দরজা ভেঙে ফেলে পুলিশ। কার্কের গুরুতর অবস্থা দেখেই খবর দেয়া হয় অ্যাম্বুলেন্স। 

হাসপাতালে নিলে জানানো হয় কার্কের মাইনর ব্রেইন ট্রোক হয়েছিল, তবে দীর্ঘদিন এভাবে পড়ে থাকায় তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। পরে অবশ্য ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠেন কার্ক। এসময় সাথে পিৎজা ও ফুল নিয়ে তার সাথে দেখা করতে যান ডোমিনোজের কর্মীরা।

২০১৬ সালের এই ঘটনার পর রাতারতি সেলিব্রেটি হয়ে যান ডোমিনোজরে কর্মীরা। দেশটির অন্যতম টেলিভিশন এবিসিতেও হাজির করা হয় তাদের।