আবরার অপমৃত্যু মামলা: প্রথম আলোর সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলা স্থগিত
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
প্রকাশিত: ১২:২৮ পিএম, ১৩ ডিসেম্বর ২০২০ রোববার আপডেট: ১২:৫৯ পিএম, ১৩ ডিসেম্বর ২০২০ রোববার
ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে ‘কিশোর আলো’র অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে নাইমুল আবরার রাহাতের অপমৃত্যুর ঘটনায় করা মামলাটির কার্যক্রম প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানের ক্ষেত্রে স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট।
রবিবার (১৩ ডিসেম্বর) মামলা বাতিল চেয়ে করা এক আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. রেজাউল হক ও বিচারপতি মো. আতোয়ার রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ মতিউর রহমানের ক্ষেত্রে ছয় মাসের জন্য স্থগিত করে রুল জারি করেছেন।
আরও পড়ুন**আবরার অপমৃত্যু মামলায় ৯ জনের বিরুদ্ধে বিচার শুরু
আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ ও ব্যারিস্টার মোস্তাফিজুর রহমান খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুদ্দিন খালেদ।
প্রথম আলো সম্পাদকের আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান খান বলেন-
মামলার তদন্ত প্রতিবেদনে মতিউর রহমানের সম্পৃক্ততার অভিযোগ ছিল না। তিনি ঘটনাস্থলেও উপস্থিত ছিলেন না। এমনকি অনুষ্ঠান তদারকি ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্বেও ছিলেন না। অনুষ্ঠানের বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত বিষয়েও তিনি যুক্ত ছিলেন না। কোনো সাক্ষীও মতিউর রহমানের নাম বলেননি। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের সারবত্তা নেই। এসব যুক্তিতেই মূলত মামলাটি বাতিল চেয়ে আবেদন করা হয়।
গত ১২ নভেম্বর সম্পাদক মতিউর রহমানসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে আনুষ্ঠানিকভাবে বিচার শুরু করে আদালত। একই সাথে ১৪ ডিসেম্বর সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য তারিখ নির্ধারণ করেন। পরে অভিযোগ গঠনের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন করেন মতিউর রহমান।
গত ১২ নভেম্বরই মামলাটি থেকে লেখক ও প্রথম আলোর সহযোগি সম্পাদক আনিসুল হকের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় তাকে অব্যহতি দেওয়া হয়।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- গীতিকার ও প্রথম আলোর ইভেন্টের দায়িত্বে থাকা কবির বকুল, শুভাশিষ প্রামানিক শুভ, মহিতুল আলম পাভেল, শাহপরান তুষার, জসিম উদ্দিন অপু, মোশারফ হোসেন, সুজন ও কামরুল হায়দার।
এর আগে গত ১৬ জানুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আব্দুল আলীম পুলিশ পরিদর্শক আসামিদের বিরুদ্ধে দন্ডবিধির ধারা ৩০৪ (এ) অভিযোগের বিষয়ে সত্যতা প্রমাণিত হওয়ায় এ প্রতিবেদন দাখিল করেন।
২০১৯ সালের ৬ নভেম্বর সিএমএম আদালতে আবরারের বাবা মামলাটির আবেদন করেন।
মামলার অভিযোগ-
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০১৯ সালের ১ নভেম্বর ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে কিশোরদের মাসিক সাময়িকী কিশোর আলোর বর্ষপূর্তির অনুষ্ঠানে নাইমুল আবরার যান। অনুষ্ঠান চলাকালে সাড়ে তিনটার দিকে আবরার বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। অনুষ্ঠানের জন্য যে বিদ্যুৎ সংযোগ স্থাপন করা হয় তা অরক্ষিত ছিল। অনুষ্ঠান পরিচালনার জন্য বৈদ্যুতিক ব্যবস্থার যে নিরাপত্তা ও সাবধানতার প্রয়োজন ছিল তা নেওয়া হয়নি।
ঘটনাস্থলের খুব কাছে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল অবস্থিত হলেও আবরারকে মহাখালী ইউনিভার্সেল মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। নাইমুল আবরার বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার পর বিকেল ৪ টা ৫১ মিনিটে চিকৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন। কর্তৃপক্ষ আবরারের মৃত্যুর বিষয়টি তার পরিবারকে জানায়নি। আবরারের পরিবার এক সহপাঠীর মাধ্যমে তারা তার মৃত্যুর খবর পান। যা একটি পরিকল্পিত, গাফিলতি এবং অবহেলাজনিত হত্যাকাণ্ড বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।