অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

ডিবিবিএল, স্নোটেক্স ও ২ ব্যবসায়ী ব্যক্তিত্ব পেলেন বিজনেস অ্যাওয়ার্ড

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ১২:১৭ পিএম, ১৩ ডিসেম্বর ২০২০ রোববার   আপডেট: ১২:৫৬ পিএম, ১৩ ডিসেম্বর ২০২০ রোববার

স্নোটেক্স, ডিবিবিএল, রূপালি চৌধুরী, আবদুল মুকতাদীর

স্নোটেক্স, ডিবিবিএল, রূপালি চৌধুরী, আবদুল মুকতাদীর

দেশের ব্যবসায়ী জগতে অন্যতম মর্যাদার পুরস্কার 'বাংলাদেশ বিজনেস অ্যাওয়ার্ড' জিতেছে দুটি প্রতিষ্ঠান ও দুই ব্যবসায় ব্যক্তিত্ব। আন্তর্জাতিক লজিস্টিক প্রতিষ্ঠান ডিএইচএল ও বাংলাদেশের জনপ্রিয় ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টার যৌথভাবে এই অ্যাওয়ার্ড দিয়ে আসছে। এটি ছিলো ১৯তম বাংলাদেশ বিজনেস অ্যাওয়ার্ড। ২০০০ সালে পুরস্কারটি প্রবর্তন করে ডিএইচএল-ডেইলি স্টার।

‘বছরের সেরা ব্যবসায় উদ্যোক্তা’ শ্রেণিতে এবারের শ্রেষ্ঠত্বে স্থান পেয়েছে রপ্তানিপ্রধান পোশাক শিল্প প্রতিষ্ঠান 'স্নোটেক্স গ্রুপ'। সেরা আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে এই পুরস্কার জিতেছে ডাচ-বাংলা ব্যাংক লি.। এছাড়া দেশের সমাজ ও অর্থনীতিতে অনবদ্য অবদান রাখার জন্য এবারের বিজনেস অ্যাওয়ার্ড জিতেছেন দুই জন ব্যক্তিত্ব। ব্যবসায়ে অনন্য নারী ক্যাটেগরিতে বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রূপালি চৌধুরী এবং বর্ষসেরা ব্যবসায়ী ব্যক্তিত্বের পুরস্কারটি জিতেছেন ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালসের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল মুকতাদির।  

করোনা ভাইরাসের কারণে এবার ভার্চ্যুয়াল কনফারেন্সের মাধ্যমে এই পুরস্কার দেওয়া হয়।

ভার্চ্যুয়াল এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে সংযুক্ত ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, ডিএইচএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিয়ারুল হক, ডেইল স্টারের প্রকাশক এবং সম্পাদক মাহফুজ আনাম। অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে যোগ দেন নেপালের বিলিয়নিয়ার ব্যবসায়ী, সিজি ক্রপ গ্লোবালের চেয়ারম্যান বিনোদ কুমার চৌধুরী।  

পুরস্কার ঘোষণায় জানানো হয় স্নোটেক্স গ্রুপ এখন দেশে ১৬ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান করছে এবং বার্ষিক টার্নওভার ২৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। বিশ্বের ৫০টি দেশে কোম্পানিটি তাদের উৎপাদিত পোশাক পণ্য রপ্তানি করছে। তাদের ক্রেতাদের অন্যতম হচ্ছে- বার্নি অ্যাপারেল, কলাম্বিয়া, ভিএফ, বেস্টসেলারস এর মতো প্রতিষ্ঠান। গ্রুপের অন্যতম কোম্পানি স্নোটেক্স আউটারউয়্যার ইউনাইটেড স্টেটস গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিলের সনদপ্রাপ্ত।

‘স্নোটেক্স’ জানায় ২০০০ সালে বায়িং হাউজের মাধ্যমে যাত্রা শুরু করে। ২০০৫ সালে নিজেদের প্রথম কারখানা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে স্নোটেক্স অ্যাপারেলস। তারই ধারাবাহিকতায় ২০১১ সালে ‘কাট অ্যান্ড সিউ’, ২০১৪ সালে ‘স্নোটেক্স আউটারওয়্যার’ এবং ২০১৯ সালে ‘স্নোটেক্স স্পোর্টসওয়্যার’ প্রতিষ্ঠা করা হয়। আজকের ‘স্নোটেক্স’ হয়ে উঠেছে চারটি বড় কারখানার একটি প্রতিষ্ঠান রূপে। 'সারা' এই গ্রুপের প্রথম লাইফস্টাইল ব্র্যান্ড, যা দেশের স্থানীয় বাজারে সাড়া ফেলেছে। ইউএসজিবিসির লিড গোল্ড সার্টিফিকেটেড স্নোটেক্স আউটার উয়্যার। এছাড়াও শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীনে 'হেলথ অ্যান্ড সেফটি' অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে স্নোটেক্স। 

ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেট এখন উদ্ভাবনের অপর নাম, এমনটাই বলা হয়েছে শনিবার রাতের পুরস্কার ঘোষণায়। বলা হয়েছে, নতুন নতুন পণ্য ও সেবা চালু করে এই ব্যাংক এখন দেশের ব্যাংকিং সেক্টরে নেতৃত্ব দিচ্ছে। রকেট'র মাধ্যমে দেশে প্রথম মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস চালু করে ডিবিবিএল। এছাড়া অটোমেটেড টেলার মেশিন-এটিএম এ দেশে সবচেয়ে বড় নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠা করেছে এই ব্যাংক।  ২০১৯ সালে ব্যাংকটির নিট মুনাফা ৪৩৪ কোটি টাকায় পৌঁছায়। এই ক্যাটেগরিতে এই নিয়ে দুইবার একই পুরস্কার জয় করলো ডিবিবিএল। এর আগে ২০০৭ সালে ডিএইচএল-ডেইলি স্টার পুরস্কার জয় করে এই ব্যাংকটি। 

স্নোটেক্স গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম খালেদ তার প্রতিষ্ঠানের এই মর্যাদা সম্পন্ন পুরস্কার জয়কে অনেক বড় অর্জনের বলে উল্লেখ করেন। তিনি, দীর্ঘ বছর ধরে আমরা ব্যবসা করে আসছি যেখানে আমরা আমাদের অঙ্গীকার এবং সততাকে সব সময় বজায় রেখেছি। আমরা আমাদের বায়ারদের সঙ্গে কমিটমেন্ট রক্ষা করে এসেছি শুরু থেকেই। এছাড়াও পণ্যের গুণগত মানের ক্ষেত্রে শতভাগ নিশ্চয়তা বজায় রেখেই তা সরবরাহ করেছি। 

ভবিষ্যতেও আমরা আমাদেরকে একইভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই, বলেন এস এম খালেদ।  

ডিবিবিএল'র ম্যানেজিং ডিরেক্টর আবুল কাশেম মো. শিরিন তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, এই পুরস্কার আমাদের অনুপ্রাণিত করবে। সেবা গ্রহীতাদের জন্য আমরা নতুন নতুন ডিজিটাল প্রোডাক্ট আনছি। বিশেষ করে যারা গ্রামাঞ্চলের মানুষ তাদের কি করে আর্থিক খাতে আরও সম্পৃক্ত করা যায় সে লক্ষ্যেই ডিবিবিএল কাজ করছে। 

রূপালি চৌধুরী প্রতিক্রিয়ায় বলেন, তিনি ভীষণ খুশি এই পুরস্কার পেয়ে। এই পুরস্কার তাকে আরও অনুপ্রাণিত করবে, দেশের জন্য আরও বেশি কাজের সুযোগ তৈরি করতে পারবেন। 

আবদুল মুকতাদীর তার পুরস্কার জয়ের কৃতিত্ব ভাগাভাগি করে নেন পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে, ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালসের মালিক প্রতিষ্ঠান ইমপ্রেস গ্রুপের অন্য মালিকদের সঙ্গে এবং প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা কর্মচারিদের সঙ্গে, যাদের দুই দশকের নিরলস পরিশ্রমে ইনসেপ্টা আজ এই অবস্থানে পৌঁছেছে। পণ্যের উচ্চতর মানের অঙ্গীকারও ব্যক্ত করেন তিনি।