অবরোধেও চলবে বিসিএস লিখিত পরীক্ষা
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
প্রকাশিত: ০৭:২৯ পিএম, ২৩ নভেম্বর ২০২৩ বৃহস্পতিবার
৪৫তম বিসিএসের পরীক্ষা পেছাতে প্রার্থীদের সপ্তাহব্যাপী দৌড়ঝাঁপ পাত্তাই দিলো না সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী-আগামী ২৭ নভেম্বর থেকেই এ বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা শুরু হবে। এ লক্ষ্যে পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ সময়সূচি ও আসনবিন্যাস প্রকাশ করেছে পিএসসি।
ফলে বিএনপি-জামায়াতের ডাকা সপ্তম দফা অবরোধের দ্বিতীয় দিনে লিখিত পরীক্ষায় বসছেন পৌনে ১৩ হাজার চাকরিপ্রার্থী। উত্তপ্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যেই তাদের ১১ দিন কেন্দ্রে গিয়ে পরীক্ষা দিতে হবে। এ নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন পরীক্ষার্থীরা।
এদিকে বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) বিকেলে পিএসসির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ক্যাডার) আনন্দ কুমার বিশ্বাসের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে আবশ্যিক বিষয়ে লিখিত পরীক্ষা ২৭ নভেম্বর থেকে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে। ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, রংপুর ও ময়মনসিংহ কেন্দ্রে একযোগে এ পরীক্ষা গ্রহণ হবে।
অন্যদিকে কারিগরি বা পেশাগত ক্যাডারের পদসংশ্লিষ্ট বিষয়ের লিখিত পরীক্ষা ৬ ডিসেম্বর শুরু হবে। এ পরীক্ষা চলবে ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
পরীক্ষা পেছানোর দাবি তোলা চাকরিপ্রার্থীরা জানান, গত ১৯ নভেম্বর তারা নির্বাচন কমিশনে গিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বরাবর পরীক্ষা পেছানোর দাবিতে স্মারকলিপি দেন। একই দাবিতে পিএসসিতেও লিখিত আবেদন করেন। মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) তারা আবারও সিইসিকে লিখিত আবেদন দেন।
আবেদনে তারা উল্লেখ করেন, তফসিল ঘোষণার পর চলমান হরতাল-অবরোধ আরও ব্যাপক ও মারাত্মক আকার ধারণ করায় পরীক্ষার পরিবেশ ও যাতায়াতে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ ও পিএসসির সঙ্গে আলোচনা করে স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে পরীক্ষার আয়োজনের ব্যবস্থা গ্রহণ করার অনুরোধ জানান পরীক্ষার্থীরা।
এদিকে, আসনবিন্যাস প্রকাশের পরও হাল ছাড়ছেন না প্রার্থীরা। পরীক্ষা পেছানোর দাবিতে তারা সংবাদ সম্মেলন করার উদ্যোগ নিয়েছেন। রোববার পর্যন্ত তারা পিএসসির সিদ্ধান্তের দিকে তাকিয়ে থাকবেন বলে জানিয়েছেন।
মারিয়া হাসান নামে একজন প্রার্থী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া পোস্টে লিখেছেন, ‘সিট প্ল্যান দেওয়া মানেই সবশেষ না। সিট প্ল্যান দেওয়ার পরও তো কত শত পরীক্ষা পেছানো হচ্ছে। তাহলে পিএসসি কেন করবে না?’
মেহেদী হাসান নামে আরেক প্রার্থী লিখেছেন, ‘হতাশ না হয়ে আমাদের দ্রুত একটা সংবাদ সম্মেলন করে আনুষ্ঠানিকভাবে পরীক্ষা পেছানোর দাবি অব্যাহত রাখা উচিত। পরীক্ষা পেছানোর সময় রোববার পর্যন্ত অপেক্ষা করছে।’
তবে পিএসসির একজন সদস্য, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা ঘোষিত রুটিন অনুযায়ী পরীক্ষা হবে বলে জনিয়েছেন। তাদের ভাষ্য, ‘ঘোষিত রুটিনই পিএসসির আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত।’
প্রকাশিত আসনবিন্যাস অনুযায়ী ঢাকার ৭টি কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। কলেজগুলো হলো-মিরপুরের সরকারি রূপনগর মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, তেজগাঁওয়ের সরকারি বিজ্ঞান কলেজ, মোহাম্মদপুর সরকারি কলেজ, মোহাম্মদপুর কমার্শিয়াল ইনস্টিটিউট, তেজগাঁও সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, শেরেবাংলা নগর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, গবর্নমেন্ট সায়েন্স হাইস্কুল।
ঢাকার বাইরে ৭টি কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। রাজশাহী বিভাগের প্রার্থীদের জন্য কেন্দ্র হবে শহীদ মামুন মাহমুদ পুলিশ লাইনস স্কুল অ্যান্ড কলেজ, চট্টগ্রামে ইস্পাহানী পাবলিক স্কুল ও কলেজ, খুলনা পাবলিক কলেজ, বরিশাল জিলা স্কুল, সিলেটে মুরারিচাঁদ (এম সি) কলেজ, রংপুর সরকারি কলেজ, ময়মনসিংহ মুমিনুন্নিসা সরকারি মহিলা কলেজ।
গত ৬ জুন ৪৫তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। এতে মোট ১২ হাজার ৭৮৯ জন ৪৫তম বিসিএসের প্রিলিতে উত্তীর্ণ হয়েছেন। ৪৫তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার রুটিন অনুযায়ী টেকনিক্যাল ক্যাডার ও উভয় ক্যাডারের বাংলা প্রথমপত্র পরীক্ষা হবে ২৭ নভেম্বর। সাধারণ ক্যাডার ও উভয় ক্যাডারের প্রার্থীদের বাংলা দ্বিতীয়পত্র পরীক্ষা হবে ২৮ নভেম্বর।
৪৫তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা চলবে আগামী ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। ৪৫তম বিসিএসের মাধ্যমে মোট ২ হাজার ৩০৯ জন ক্যাডার নেওয়া হবে। নন-ক্যাডারে নেওয়া হবে ১ হাজার ২২ জন।