নেতানিয়াহুর সঙ্গে সেনাবাহিনীর মতবিরোধের গুঞ্জন
ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১:০১ এএম, ২৪ অক্টোবর ২০২৩ মঙ্গলবার
ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং সেনাবাহিনীর মাঝে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে বলে খবর বেরিয়েছে। মূলত অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় সম্ভাব্য স্থল হামলা নিয়ে এ মতবিরোধ।
ইসরাইলের বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশের পর প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর ও সেনাবাহিনী যৌথ এক বিবৃতিতে স্থল অভিযান নিয়ে নিবিড়ভাবে কাজ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে।
সোমবার টাইমস অব ইসরাইলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিলম্বিত স্থল অভিযান নিয়ে সেনাবাহিনী এবং প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর মতবিরোধের খবরে যৌথ বিবৃতিতে তারা ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার দাবি করেছে।
নেতানিয়াহুর কার্যালয়, প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্তের ব্যুরো এবং ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) মুখপাত্রের দেওয়া যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী, প্রতিরক্ষামন্ত্রী এবং আইডিএফ প্রধান হামাসের বিরুদ্ধে ইসরাইলের পূর্ণ বিজয় আনার লক্ষ্যে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে।
‘প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু, প্রতিরক্ষামন্ত্রী এবং আইডিএফ প্রধানের মাঝে পূর্ণ আস্থা রয়েছে; যারা একটি সুস্পষ্ট উদ্দেশ্যে ঐক্যবদ্ধ রয়েছেন,’ বিবৃতিতে যোগ করা হয়েছে।
‘আমরা গণমাধ্যমকে দায়িত্বশীলতার সঙ্গে কাজ করতে এবং জঘন্য প্রতিবেদন প্রকাশ করা থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিচ্ছি। তাদের এই ধরনের কার্যক্রম কেবল আমাদের ঐক্য ও শক্তিমত্তাকে আঘাত করে।’
সোমবার ইসরাইলের বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, গাজায় সম্ভাব্য স্থল হামলা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সাথে প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ত ও আইডিএফের প্রধান হার্জেই হালেভির মধ্যে মতবিরোধ তৈরি হয়েছে। এই মতবিরোধের একপাশে রয়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ত ও আইডিএফের প্রধান হার্জেই হালেভি আর অপরপাশে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু।
ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে স্থল হামলার বিষয়ে সবুজ সংকেত না মেলায় গণমাধ্যমে তাদের মতবিরোধের খবর বেরিয়েছে। তবে হামাসের হাতে জিম্মি ২২০ জনের বেশি ইসরাইলিকে মুক্ত করার বিষয়ে বিভিন্ন পক্ষের সাথে দর কষাকষি করতে নেতানিয়াহু স্থল হামলায় কালক্ষেপণ করছেন বলে অনেকে ধারণা করছেন।
মধ্যপ্রাচ্যে ইসরাইলের অন্যতম প্রধান মিত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও গাজায় স্থল হামলা পিছিয়ে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বলে সোমবার নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
জাতিসংঘসহ বিশ্বের বিভিন্ন সংস্থা এবং দেশ ইতিমধ্যে গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর অভিযান বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে।
তবে রোববার গ্যালান্ত বলেছেন, শিগগিরই গাজা উপত্যকায় স্থল অভিযান পরিচালনা করবে ইসরাইলি বাহিনী। সেই অভিযান শুরুর আগে হামাসকে দুর্বল করা প্রয়োজন এবং এ কাজটি করতে হবে মূলত বিমানবাহিনীকে।
‘শিগগিরই গাজা উপত্যকায় স্থল অভিযান শুরু হবে এবং আমরা চাই ইসরাইলের ট্যাংক ও পদাতিক সেনাদের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার আগে হামাস যেন আমাদের বিমান বাহিনীর সক্ষমতা নিয়ে পরিষ্কার ধারণা পায়।’
দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে চলমান হামাস-ইসরাইল যুদ্ধে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের নির্বিচার বোমা হামলায় নিহত বেড়ে ৫ হাজার ৮৭ জনে পৌঁছেছে।
তাদের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলি বিমান হামলায় নিহত ৪০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনিও রয়েছেন।
সোমবার গাজার হামাস নিয়ন্ত্রণাধীন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
অন্যদিকে, উপত্যকা থেকে ইসরাইলি ভূখণ্ডে হামাসের হামলায় গত ১৬ দিনে ইসরাইলে প্রাণহানি ১ হাজার ৪০০ ছাড়িয়েছে। আহত হয়েছেন আরও শত শত মানুষ।