জল কপাট নির্মাণ করে জলাবদ্ধতা নিরসন সম্ভব নয়
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চট্টগ্রাম
প্রকাশিত: ০৬:২৫ পিএম, ১০ ডিসেম্বর ২০২০ বৃহস্পতিবার
‘বৃহত্তর চট্টগ্রামের নদী, খাল ও জলাশয় রক্ষায় করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা বলেছেন, জলাবদ্ধতা দূর করতে গত ১৪ বছরে শুধু চাক্তাই খালে ৩২৪ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। প্রতিবছর যা গড়ে ২৩ কোটি টাকা। কিন্তু চাক্তাই খাল আগের মতোই রয়ে গেছে।
বৃহস্পতিবার (১০ ডিসেম্বর) নগরীর লালখান বাজার এলাকার একটি রেস্টুরেন্টে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি বেলা আয়োজিত সেমিনারে তারা এ কথা বলেন।
বক্তারা বলেন, ১৯৬৯ সালে ফ্লাড ডিটেইল প্ল্যান অনুযায়ী; নগরীর ৭১টি খাল এবং এস সিট অনুযায়ী উদ্ধার না করা হলে চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা দূর সম্ভব নয়। বন্যা নিয়ন্ত্রণ, জলাবদ্ধতা নিরসন ও নিষ্কাশন ব্যবস্থায় কর্ণফুলী নদীতে পড়া ২৩টি, হালদায় তিনটি এবং বঙ্গোপসাগরে ১৪টি খালের প্রবাহ নিয়ন্ত্রণে ৬৯টি পাম্প হাউস নির্মাণ এবং চাক্তাই রাজাখালী মহেশ খালে স্লুইস গেইট তৈরি একটি আত্মঘাতী পরিকল্পনা। নদীতে জোয়ারের সময় স্লুইস গেইট বন্ধ থাকলে, নগরীতে ১০০ মিলিলিটারের অধিক বৃষ্টিপাত হলে অধিকাংশ এলাকা পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে। স্লুইস গেইট নির্মাণ করে খালকে চিরতরে হত্যা করা হবে।
তারা অভিমত ব্যক্ত করেন, মিরসরাই ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগর’ এর জন্য মোহরা শোধনাগার ফেজ-২ স্থাপন করে দৈনিক ১৪ কোটি লিটার পানি উত্তোলন করা হলে হালদা জীববৈচিত্র ধ্বংস হয়ে যাবে। অপিরিকল্পিত বালু উত্তোলন, পাহাড় কাটা, জুম চাষ ইত্যাদির কারণে বৃহত্তম চট্টগ্রামের কর্ণফুলি, সেটির উপনদীসমূহ রাইনখিয়াং, কাসালং, হালদা, ইছামতী এবং পাহাড়ি নদী বাকখালী, সাঙ্গু, মাতামুহুরী, নাফ, ফেনী নদী ভরাট হয়ে শুস্ক মৌসুমে নাব্যতা সংকট সৃষ্টি হচ্ছে। বর্ষাকালে বন্যায় নদীভাঙ্গন এবং উভয় তীরের এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রফেসর ড. শাহ আলমের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রামের উপ-পরিচালক জমির উদ্দিন। এতে লিখিত প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চট্টগ্রাম নদী ও খাল রক্ষা আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক আলীউর রহমান।
সেমিনারে বক্তব্য রাখেন বেলার হেড অব প্রোগ্রাম এডভোকেট খোরশেদ আলম, প্রোগ্রাম এন্ড ফিল্ড কোর্ডিনেটর এ এম এম মামুন, সুপ্রভাত বাংলাদেশ পত্রিকার চিফ রিপোর্টার ভূইয়া নজরুল, ক্যাবের সহসভাপতি নাজের হোসাইন, প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক সঞ্চয় বিশ্বাস, ব্লাস্ট এর এডভোকেট জিন্নাত আমিন, টিআইবি প্রতিনিধি তৌহিদ আলম, কর্ণফুলী নদী সাম্পান মাঝি কল্যাণ সমিতি ফেডারেশন সভাপতি এস এম পেয়ার আলী, সহ সভাপতি মোহাম্মদ লোকমান দয়াল প্রমুখ।