অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

অবৈধভাবে প্রতিযোগীদের হটিয়েছে ফেসবুক, আইনি লড়াই যুক্তরাষ্ট্রে

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০২:৫৯ এএম, ১০ ডিসেম্বর ২০২০ বৃহস্পতিবার  

যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ট্রেড কমিশন ও দেশটির ৪৮টি অঙ্গরাজ্য ফেসবুককে এই বলে দোষী সাব্যস্ত করেছে যে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটি অর্থের দাপটে অবৈধভাবে সম্ভাব্য প্রতিযোগীদের কিনে নিয়ে একচ্ছত্র আধিপত্য তৈরি করেছে। এ জন্য বড় ধরনের আইনি লড়াই শুরু হয়েছে যাতে শেষ পর্যন্ত ভেঙ্গে পড়তে পারে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় এই যোগাযাগ সুবিধা। 

কেন্দ্রীয় ও রাজ্যভিক্তিক নিয়ন্ত্রকদের একটি দল গত ১৮ মাস ধরে ফেসবুকের কর্মকাণ্ড নিয়ে অনুসন্ধান চালাচ্ছে। তাদেরই দায়ের করা একাধিক মামলায় বলা হয়েছে ফেসবুক ২০১২ সালে ১ বিলিয়ন ডলারে ইনস্টাগ্রাম এবং দুই বছর পর ২০১৪ সালে ১৯ বিলয়ন ডলার দিয়ে হোয়াটস অ্যাপ কিনে নিয়ে। এভাবে এক সময় আধিপত্যের ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারে এমন সম্ভাব্য প্রতিযোগীদের মাঠ থেকে সরিয়ে নিজেই কব্জা করে নেয় ফেসবুক।

আর কিনে নেওয়ার পর ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপ জনপ্রিয়তার বড় উচ্চতায় উঠে যায়। এর মধ্য দিয়ে ফেসবুক এখন বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় তিনটি সামাজিক মাধ্যম ও যোগাযোগ অ্যাপের মালিক। এই এপ্লিকেশনগুলোই মোটে ১৬ বছর আগে একটি কলেজ ডরমেটরির রুমে বসে তৈরি হওয়া কোম্পানিটিকে ইন্টারনেট জগতের পাওয়ার হাউজে পরিণত করেছে। যার মূল্য এখন ৮০০ বিলিয়নেরও বেশি। 

আইনজীবীরা বলছেন ফেসবুককে ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপের ওপর নিয়ন্ত্রণ ছাড়তে হবে, এবং ভবিষ্যতে যাতে একই ধরনের ডিলে যেতে না পারে সে লক্ষে কড়াকড়ি আরোপ করতে হবে। 

গত এক দশক ধরে এই একচ্ছত্র আধিপত্য ও একচেটিয়া ক্ষমতা ব্যবহার করে ফেসবুক একই ধরনের সেবা বা সুবিধা নিয়ে আসা ছোট ছোট প্রতিযোগিদের স্রেফ টাকার জোরে ধ্বংস করে দিয়েছে। ব্যবহারকারীদের টাকায়ই ফেসবুক কর্তৃপক্ষ এই জোর খাটিয়েছে, একথা বলেছেন নিউইয়র্কের এটর্নি জেনারেল লেটিশিয়া জেমস। তিনিই রাজ্যগুলোর পক্ষে এই তদন্তে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। 

টেক জায়ান্টগুলোর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সুনামি অপেক্ষা করছে বলেও মামলাগুলোতে উল্লেখ করা হয়। আইন প্রণেতা ও নিয়ন্ত্রকরা বলছেন পুরো জগতটিই এখন ফেসবুক, গুগল, অ্যামাজন ও অ্যাপলের কব্জায় চলে গেছে। তারাই এখন বাণিজ্য, ইলেক্ট্রনিক, সামাজিক নেটওয়ার্কিং, সার্চ ও অনলাইন বিজ্ঞাপন নিয়ন্ত্রণ করছে যা দেশের অর্থনীতির ওপর প্রভাব ফেলছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অনেক আগেই বলেছেন টেক জায়ান্টগুলো ব্যাপক ক্ষমতা ও প্রভাব বিস্তার করছে। একই অভিযোগ প্রেসিডেন্ট ইলেক্ট জো বাইডেনেরও।

এরই মধ্যে গুগলের বিরুদ্ধে একটি মামলা চলছে। সার্চ জায়ান্টটির বিরুদ্ধেও একক আধিপত্যের অভিযোগ।  শিগগিরই যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট আইন প্রণেতারা যৌথভাবে গুগলের বিরুদ্ধে আরও একটি মামলা দায়ের করতে যাচ্ছেন। ইউরোপেও কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে প্রতিযোগিতা আইন ভঙ্গের অভিযোগে কয়েক বিলিয়ন ডলার জরিমানার মামলার প্রস্তাব উঠেছে। 

ফেসবুকের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাগুলো বড় ধরনের আইনি লড়াইয়ের দিকে যাচ্ছে। কোম্পানিটি তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করছে, এবং আইনি লড়াইয়ে তাদের কামাই করা টাকার পাহাড় থেকেই বড় অংকের অর্থ ব্যয় করছে।