এ সিদ্ধান্ত খালেদা জিয়ার সঙ্গে ভয়ঙ্কর তামাশা : কায়সার কামাল
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
প্রকাশিত: ০৩:৫১ পিএম, ১ অক্টোবর ২০২৩ রোববার
খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার আবেদন আইন মন্ত্রণালয় থেকে নাকচ করার সিদ্ধান্তকে ভয়ঙ্কর তামাশা বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।
রোববার (১ সেপ্টেম্বর) সাংবাদিকদের কাছে এ ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
কায়সার কামাল বলেন, খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার আবেদন আইনগতভাবে বিবেচনা না করে রাজনৈতিকভাবে বিবেচনা করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্তে আবারও প্রমাণিত দেশে আইনের শাসন নেই।
তিনি বলেন, আইনমন্ত্রী পাবলিকলি বলেছিলেন, আবেদন করা হলে সুবিবেচনা করা হবে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে খালেদা জিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু আইনমন্ত্রী এখন ৪০১ ধারার কথা বলছেন। অথচ, এই ধারা অনুযায়ী সরকার নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়েছে। একই ক্ষমতাবলে সরকার চাইলে তাকে বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি দিতে পারে।
এর আগে, রোববার দুপুরে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার আবেদনের বিবেচনার সুযোগ নেই। বিদেশ যেতে হলে তাকে জেলে গিয়ে পরে আদালতে আবেদন করতে হবে।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে যে আবেদন করা হয়েছিল তার প্রেক্ষিতে সরকার ৪০১ ধারা অনুযায়ী তাকে বাসায় রেখে চিকিৎসা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে। এই আবেদনটি একবার নিষ্পত্তি হয়ে গেছে। এটি নিয়ে দ্বিতীয়বার আর কোনো কথা বলার সুযোগ নেই।
এদিকে, গত ৯ আগস্ট খালেদা জিয়ার শারীরিক অসুস্থতার কারণে তাকে ফের হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। টানা ৫৩ দিন ধরে তিনি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এর মধ্যে তিন দফায় তাকে সিসিইউতে নেওয়া হয়েছিল। বেগম জিয়ার অসুস্থতা দিন দিন বেড়ে যাওয়ায় গত ২৫ সেপ্টেম্বর তাকে স্থায়ীভাবে মুক্তি দিয়ে বিদেশে চিকিৎসা দেওয়ার অনুমতি চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করে তার পরিবার। পরে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, আবেদনটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যে যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে।
সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে হার্টের সমস্যা, লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, দাঁত ও চোখের সমস্যাসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। গত বছরের জুনে খালেদা জিয়ার এনজিওগ্রাম করা হলে তার হৃদযন্ত্রে তিনটি ব্লক ধরা পড়ে। এর একটিতে রিং পরানো হয়।
উল্লেখ্য, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের সাজা হয়। সেদিন থেকে তিনি কারাবন্দি হন। ২০২০ সালের মার্চে করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে সরকার খালেদা জিয়ার দণ্ড ছয় মাসের জন্য স্থগিত করে মুক্তি দেয়। এরপর দফায় দফার তার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে। সর্বশেষ ১২ সেপ্টেম্বর আরও ছয় মাস বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।