বিশ্বকাপে ধারাবাহিকতা চায় পাকিস্তান
স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩:৪৭ পিএম, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ শুক্রবার
একমাস আগেও ওয়ানডে ক্রিকেটে র্যাংকিংয়ের শীর্ষে থাকা পাকিস্তান আসন্ন ভারত বিশ্বকাপের ফেভারিট দলগুলোর একটি হিসেবেই আলোচনায় ছিল। কিন্তু সদ্য সমাপ্ত এশিয়া কাপে শ্রীলংকার কাছে দুই ইউকেট এবং চির প্রতিদ্বন্দ্বি ভারতের কাছে ২২৮ রানের বিশাল ব্যবধানের পরাজয় পাকিস্তানের সেই প্রত্যাশাকে ক্ষীণ করেছে।
এই আনপ্রেডিক্টেবিলিটি পাকিস্তানের নিয়মিত চিত্র। যে কারণেই প্রায়শই উত্থান-পতনের মধ্যে দোল খেতে থাকে দলটি। বিশ্বকাপ চ্যালেঞ্জে দলটির নতুন করে ধাক্কা হিসেবে এসেছে তাদের গুরুত্বপুর্ন ফাস্ট বোলার নাসিম শাহ’র ইনজুরি। কাঁধের ইনজুরির কারণে তিনি ছিটকে গেছেন বিশ্বকাপ থেকে।
যদিও দলকে নিয়ে এখনো আশাবাদি টিম ডিরেক্টর মিকি আর্থার। বার্তা সংস্থা এএফপিকে তিনি বলেছেন,‘ নাসিমের মতো মেধাবী খেলোয়াড়কে হারানোটা অবশ্যই একটি বড় ধাক্কা। তবে তরুণ ও অভিজ্ঞ বোলারদের নিয়ে গড়া দলটি আরো বেশী সামর্থ্যবান এবং চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত।’
ঘাটতি মেটাতে গত মাসে আঙ্গুলের অস্ত্রোপচার শেষে ফিটনেস ফিরে পাওয়া অভিজ্ঞ পেসার হাসান আলীকে দলে ডেকেছে পাকিস্তান।
সাম্প্রতিক কিছু ব্যর্থতা সত্ত্বেও দলটিকে নিয়ে বেশ আশাবাদী ২০১৯ বিশ্বকাপে পাকিস্তানের প্রধান কোচের দায়িত্ব পালন করা আর্থার। সে আসরে বিশ্বকাপে সেমিফাইনালে উঠার আগেই বিদায় নিতে হয়েছিল পাকিস্তানকে।
আর্থার বলেন,‘পরিস্থিতি পাল্টে দেয়ার মতো যথেষ্ঠ সামর্থ্য এই দলটির আছে। মনে রাখতে হবে এশিয়া কাপের আগেও আমরা বিশ্ব র্যাংকিংয়ের শীর্ষে ছিলাম। আমরা শুধু দুটি ম্যাচে হেরেছি। যে কোন পরিস্থিতিতে এগিয়ে যাবার মতো দক্ষতা এই দলটির আছে।’
মুদ্রাস্ফিতি, অর্থনীতি, সীমান্ত বিরোধ এবং ১৯৯২ সালে পাকিস্তানকে বিশ্বকাপের শিরোপা এনে দেয়া ইমরান খানকে নিয়ে রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে থাকা পাকিস্তানের বর্তমান ক্রিকেট বোর্ড স্থিতিশীল নয়। বিগত দশ মাসে তিনবার বোর্ড প্রধানের দায়িত্ব পরিবর্তিত হয়েছে। বর্তমানে দায়িত্বে থাকা জাকা আশরাফও তার পদ নিয়ে অনিশ্চিয়তার মধ্যে আছেন।
অপরদিকে মাঠের লড়াইয়ে দ্বিমুখী চ্যালেঞ্জের মোকাবেলা করতে হচ্ছে বাবর আজমকে। নিজের নেতৃত্বকে সমালোচনার হাত থেকে রক্ষা করার পাশাপাশি দলীয় পারফর্মেন্সের উন্নতির দিকেও মনোযোগ দিতে হচ্ছে। ওয়নাডে র্যাংকিংয়ে শীর্ষ ব্যাটারের আসনে থাকলেও এশিয়া কাপে খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি বাবর। চার ম্যাচ থেকে মাত্র ২০৭ রান করেছেন, যার মধ্যে ১৫১ রান ছিল পুচকে নেপালের বিপক্ষে।
তবে এসব সমস্যা কাটিয়ে উঠবে বলে আশাবাদী বাবর। তিনি বলেন,‘ এশিয়া কাপে হোঁচট খাওয়া সত্ত্বেও আমাদের বিশ্বকাপ প্রস্তুতি সঠিক পথেই রয়েছে। ’
এদিকে স্পিনার সাদাব খান ও মোহাম্মদ নাওয়াজকে নিয়ে কিছুটা উদ্বেগ রয়েছে। কেননা তাদের কারো ঝুলিতেই খুব বেশি উইকেট নেই। এছাড়া সাদা বলের ক্রিকেটে নিজের ফর্ম নিয়ে এখনো সংগ্রাম কছেন ওপেনার ফকর জামান। পাকিস্তানের একমাত্র ব্যাটার হিসেবে ওয়ানডে ক্রিকেটে জোড়া সেঞ্চুরি হাকানো জামান এশিয়া কাপে মাত্র ৬৫ রান সংগ্রহ করেছেন। যে কারণে বিশ্বকাপ স্কোয়াড থেকে ছিটকে পড়ার শংকায়ও ছিলেন তিনি।
আসন্ন বিশ্বকাপে পাকিস্তান যদি অন্তত সেমিফাইনালে খেলার আশা জিইয়ে রাখতে চায়, তাহলে মিডল অর্ডারে সর্বোচ্চটা দিতে হবে উইকেট রক্ষক-ব্যাটার মোহাম্মদ রিজওয়ান, ইফতেখার আহমেদ, আগা সালমান ও সৌদ শাকিলকে। সর্বশেষ ২০১১ সালে বিশ্বকাপের শেষ চারে খেলেছিল পাকিস্তান। খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছির পাকিস্তানীরা।