পরিস্থিতি ভয়াবহ হওয়ার আগেই পদত্যাগ করুন: সরকারকে রিজভী
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
প্রকাশিত: ০২:২১ পিএম, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ বৃহস্পতিবার
দেশের পরিস্থিতি ভয়াবহ হওয়ার আগেই সরকারকে পদত্যাগ করার পরামর্শ দিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তিনি বলেন, 'সময় থাকতে পদত্যাগ করুন। আগামী তিন মাস নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন। অনেকবার পার পেয়েছেন এবার আর পার পাবেন না। দেয়ালে পিঠ ঠেকা মানুষ কিন্তু ওবায়দুল কাদের, আনিসুল হক, হাছান মাহমুদদের চিনবে না। তাই পরিস্থিতি ভয়াবহ হওয়ার আগেই পদত্যাগ করুন।’
বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (স.) উপলক্ষে বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে রিজভী বলেন, 'জনগণের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। যাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে যায় কে কত অস্ত্র নিয়ে এলো তখন ওইটা কিন্তু তারা দেখবে না। জনগণের যে উত্তাল আন্দোলনের ঢেউ, সেই ঢেউয়ের কাছ কোনো আগ্নেয়াস্ত্র টিকতে পারে না, সরকারের তৈরি করা কোনো প্রাইভেট বাহিনীরাও টিকতে পারবে না।’
এর আগে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের শুক্রবারের সমাবেশ উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, 'আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের হচ্ছে গুণ্ডা ও সন্ত্রাসীদের নেতা। সারা বাংলাদেশে তারা সন্ত্রাসকেই এখন পরিপালন করছে তাদেরকেই তোষণ করছে।
বিএনপিকে ওবায়দুল কাদেরের ৩৬ দিনের আল্টিমেটাম প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, ওবায়দুল কাদেরের এই কথার মধ্যে আছে মানবতাহীন আক্রমণাত্মক দূরবেরিত সন্ত্রাসীদের কথা। বিরোধী দলের কি সভা সমাবেশ করার অধিকার নেই? ওবায়দুল কাদেরের কথা তো পেটানো বাহিনীর কথা, তার কথা তো নাৎসিদের কথা। এই ৩৬ দিন পর উনি কী করবেন? তারপর কী উনি উনার দলীয় সন্ত্রাসীদের লেলিয়ে দেবেন বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে? এটাই তো বোঝা যায় কাদেরের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে।
আইনমন্ত্রীর কঠোর সমালোচনা করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, '১/১১ তে যখন মাইনাস ফর্মুলার প্রচেষ্টা চলেছে, যখন সমস্ত প্রতিষ্ঠান ভাঙার প্রচেষ্টা চলেছে, সেই সময়ে রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে দুদকের আইনজীবী হিসেবে যিনি সবচেয়ে বেশি কাজ করেছেন তিনি এই অবৈধ আইনমন্ত্রী। তাকে শেখ হাসিনা পছন্দ করেছেন। কারণ এই লোকটা সুচারুভাবে কীভাবে মানুষের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে হয় সেটা খুব ভালো করে জানে।’
রিজভী আরও বলেন, 'আমার কাছে মনে হয় আইনমন্ত্রী অত্যন্ত নিষ্ঠুর টাইপের একজন মানুষ। নির্দয় একজন ব্যক্তি। এই আইনমন্ত্রীর কোনো বিবেক নেই, কোনো মানবতাবোধ নেই।
তিনি আরও বলেন, 'আমরা বিভিন্ন ধরনের সভা সমাবেশে বলেছি বাংলাদেশের এবং পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের উদাহরণ দিয়ে বিরোধী কোনো নেতা অসুস্থ হয়ে পড়লে দেশের বাইরে চিকিৎসা নেওয়ার কথা। পুতিন সরকার তাদের একজন বিরোধী নেতাকে চিকিৎসার জন্য জার্মানিতে পাঠিয়েছিলেন। শেখ হাসিনা তো নিজেই প্রমাণ। তিনি অভিযুক্ত থেকে প্যারোলে মুক্তি নিয়ে তার মামলা যখন চলছিল তখন তিনি দেশের বাইরে চিকিৎসার জন্য গিয়েছিলেন। নাসিম সাহেব গেছেন, মায়া গেছেন, শেখ সেলিম গেছেন চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে।
এ সময় জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খান, সাবেক এমপি শাম্মী আক্তার এবং নিলুফা ইয়াসমিন মনি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।