১০০ টাকার জন্য বন্ধুর গলায় ব্লেড বসিয়ে দিল বন্ধু
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
প্রকাশিত: ০৫:২৪ পিএম, ৮ ডিসেম্বর ২০২০ মঙ্গলবার
চট্টগ্রাম নগরের ভাসমান বাসিন্দা হেলাল (২৪) ও রায়হান (১৪)। জুতা মেরামতের আঁঠা বা সলিউশন গাম ব্যবহার করে দিনরাত নেশায় ডুবে থাকাই তাদের একমাত্র কাজ। একই ধরণের নেশায় আসক্ত বলে তাদের বন্ধুত্বও বেশ ভাল জমেছিল।
মঙ্গলবার (৮ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে নয়টায় প্রতিদিনের মতো নগরীর নন্দনকানন কাটা পাহাড়ের উপরে যায় হেলাল ও রায়হান সলিউশান বা গামের ঘ্রাণ শ্বাস টেনে ভিতরে নেবার জন্য। সব ঠিকই ছিল, নেশাগ্রস্থ হবার পর পাওনা ১০০ টাকা নিয়ে তর্ক-বিতর্কে পরিবেশ চলে যায় নিয়ন্ত্রণের বাইরে। কথাকাটির এক পর্যায়ে ব্লেড দিয়ে রায়হানের গলায় টান দেয় হেলাল। রায়হানের গলা কেটে যায়, রক্তক্ষরণ হতে থাকে। এ অবস্থায় দীর্ঘদিনের বন্ধু রায়হানকে রেখে পালিয়ে যায় নেশাগ্রস্থ হেলাল।
পরে স্থানীয়রা গলা কাটা অবস্থায় রায়হানকে দেখে পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ গিয়ে শিশু রায়হানকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।
আহত রায়হান লোহাগাড়া উপজেলার ভবানীপুর আশ্রয়ন প্রকল্পের ইমরানের পুত্র। তারা বর্তমানে খুলশী থানার আমবাগান ভাঙাপুলের নীচে থাকে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত হেলালকে কোতোয়ালী থানা পুলিশ এনায়েত বাজার থেকে গ্রেফতার করে। এসময় তার কাছ থেকে ১টি ব্লেড, সলিউশন গাম ও কৌটা এবং ১শ টাকা জব্দ করে পুলিশ।
গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত হেলাল জানায়, দুজন দু’জনের আগে থেকে পরিচিত। তারা বন্ধু। একসাথেই চলাফেরা করে সবসময়। তারা দুজনেই ভাসমান এবং সলিউশন গাম দিয়ে নেশা করে। সে কারণে সকাল সাড়ে নয়টার সলিউশন গাম খাওয়ার জন্য কাটা পাহাড়ের উপরে উঠে। গাম খাওয়ার পরে নেশাগ্রস্থ অবস্থায় সে রায়হানের কাছে পাওনা ১০০ টাকা ফেরত দেয়ার কথা বলে। পাওনা টাকা দেয়া না দেয়া নিয়ে এসময় কাটাকাটি হয়। শুরু হয় মারামারি। এক পর্যায়ে তার কাছে থাকা ধারালো ব্লেড দিয়ে গলায় আঘাত করলে রক্তাক্ত হয় রায়হান। গলা বেয়ে রক্ত পড়তে থাকে। আঘাতের পর ভয়ে কাটা পাহাড় থেকে পালিয়ে যায় সে।
এদিকে এ ঘটনার এক ঘন্টার মধ্যে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করার পর কোতোয়ালী থানায় সংবাদ সম্মেলন করে পুলিশ। সংবাদ সম্মেলনে অভিযুক্ত হেলাল শিশু রায়হানকে ব্লেড দিয়ে গলা কেটে হত্যা চেষ্টার বিষয়টি স্বীকার করে।