উড়োজাহাজ বিধ্বস্তেই প্রিগোজিন মারা গেছেন: মস্কো
ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৬:১৩ পিএম, ২৭ আগস্ট ২০২৩ রোববার
উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়ে ভাড়াটে যোদ্ধা সরবরাহকারী সংস্থা ওয়াগনার গ্রুপের প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিনের মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে রাশিয়া। দ্য ইনভেস্টিগেটিভ কমিটি (এসকে) জানিয়েছে, মৃতদের জিনগত ও ডিএনএ পরীক্ষায় প্রিগোজিনসহ ১০ জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে বলে আজ রোববার (২৭ আগস্ট) রাশিয়ার একজন কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন। খবর আল জাজিরা ও বিবিসি।
গত শুক্রবার (২৫ আগস্ট) সন্ধ্যায় রাশিয়ায় উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে প্রিগোজিনসহ ১০ জনকে বহনকারী উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়ে সব আরোহী প্রাণ হারায়। প্রিগোজিনের ব্যক্তিগত উড়োজাহাজের যাত্রীদের তালিকায় প্রিগোজিনের নাম ছিল।
এর আগে বিমান দুর্ঘটনার পরপরই ওয়াগনারের প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিনের মৃতদেহ প্রাথমিকভাবে শনাক্ত করা হয়। তবে ডিএনএ বিশ্লেষণের মাধ্যমে পরিচয় চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়া বাকি ছিল। আজ তা সম্পন্ন করার পর ফলাফল জানিয়েছে ক্রেমলিন। উড়োজাহাজ বিধ্বস্তের পর প্রিগোজিনসহ ১৩ জনের মৃত্যু নিয়ে চলমান ধোঁয়াশার মধ্যে নতুন এমন তথ্য প্রকাশ করা হয়।
রাশিয়ায় উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়ে প্রিগোশিন নিহত হয়েছেন, আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো শুরুতে এমন খবর দেয়। তবে পরে বলা হয়, বিধ্বস্ত হওয়া উড়োজাহাজের যাত্রীদের তালিকায় প্রিগোশিনের নাম রয়েছে। প্রিগোশিনের ভাগ্যে কী ঘটেছে, সেটা ক্রেমলিন বা রুশ প্রতিরক্ষা দপ্তর থেকে নিশ্চিত করে কিছু বলা হয়নি। বলা হচ্ছে, ওয়াগনার গ্রুপের শীর্ষ কমান্ডার দিমিত্রি উতকিনও ওই উড়োজাহাজে ছিলেন।
এর আগে, প্রিগোজিনকে হত্যা করা হয়েছে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নির্দেশেই। এমন দাবি করেন যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থার (সিআইএ) সাবেক এক কর্মকর্তা, যিনি সংস্থাটির মস্কো বিষয়ক প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
বুধবার (২৩ আগস্ট) মস্কোতে উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়ে প্রিগোজিনের মৃত্যুর পরই গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর মস্কো স্টেশনের সাবেক প্রধান কর্মকর্তা ড্যানিয়েল হফম্যান বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এমন তথ্য দিয়েছেন। তিনি বলেন, `আমার এতে কোনো সন্দেহ নেই যে এ হত্যাকাণ্ড পুতিনের নির্দেশেই হয়েছে।`
রাশিয়ার ভাড়াটে সেনাবাহিনী ওয়াগনার গ্রুপের প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোজিন। সিরিয়া, লিবিয়া ও আফ্রিকায় বর্বরতা চালানো এই যোদ্ধা, রণক্ষেত্রে ছিলেন ত্রাসের নাম। তবে যুদ্ধের ময়দানে নয়, নয় শত্রুর কামান কিংবা গুলির আঘাতে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, মস্কোতে উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে তার।
বুধবার ১০ আরোহী নিয়ে মস্কো থেকে সেন্ট পিটার্বার্গের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় প্রিগোজিনের ব্যাক্তিগত উড়োজাহাজ। পথে মস্কোর টিভার অঞ্চলে ধসে পড়ে বিমানটি। এতে আরোহীদের কেউ বেচে নেই, দাবি রাশিয়ার সিভিল এভিয়েশন রেগুলেটর রোজাভিয়েতসিয়ার।
ওয়াগনার গ্রুপের নিয়ন্ত্রণাধীন একটি টেলিগ্রাম চ্যানেলে দাবি করা হয়, নিছক দুর্ঘটনা নয় এটি। পুতিনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করায় প্রিগোজিনকে হত্যা করেছে ক্রেমলিন। গুলি করে উড়োজাহাজটি ভূপাতিত করা হয়েছে। তবে এর ভিত্তিতে কোন প্রমাণ দেখাতে পারেনি ভাড়াটে বাহিনীটি। অন্যদিকে ক্রেমলিন বলছে, হঠা আগুন লেগে যাওয়াই দুর্ঘটনার কারণ। কোন প্রমাণ না থাকলেও একই সুরে কথা বলছেন পশ্চিমা প্রতিপক্ষরাও। পুতিনকে দায়ী করে বিবৃতি দিয়েছে যুক্তরাজ্য, ইউক্রেন।