অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

ইমরান খানকে দোষী সাব্যস্ত করা সেই বিচারককে ওএসডি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ০৪:০৪ পিএম, ২৬ আগস্ট ২০২৩ শনিবার   আপডেট: ০৪:০৫ পিএম, ২৬ আগস্ট ২০২৩ শনিবার

তোশাখানা দুর্নীতি মামলায় পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পিটিআইপ্রধান ইমরান খানকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া বিচারক হুমায়ুন দিলাওয়ারকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন ইসলামাবাদ হাইকোর্ট (আইএইচসি)।

শুক্রবার (২৫ আগস্ট) ইসলামাবাদ হাইকোর্টে নতুন পদ সৃষ্টি করে ওএসডি হিসেবে তাকে নিয়োগ দেন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি আমির ফারুক। জিও নিউজের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।

এর আগে গত ৫ আগস্ট তোশাখানা দুর্নীতি মামলায় ইমরান খানকে দোষী সাব্যস্ত করে তিন বছর কারাদণ্ডের রায় দেন অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ (এডিএসজে) হুমায়ুন দিলাওয়ার। রায় ঘোষণার পরপরই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। একই সঙ্গে তাকে পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করে দেশটির নির্বাচন কমিশন (ইসিপি)।

পিটিআইপ্রধানের বিরুদ্ধে রায় দেওয়ার পর পর বিচারক হুমায়ুন দিলাওয়ার ও তার পরিবারের সদস্যদের বিভিন্ন মাধ্যমে হুমকি দেওয়া হয়। এমন পরিস্থিতিতে নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে তাকে অন্য যে কোনো জায়গায় বদলি করার আবেদন করেন। বিশেষ করে জুডিশিয়াল কমপ্লেক্স জি-১১ ভবনে অবস্থিত বিশেষ আদালত বা ইসলামাবাদ হাইকোর্টে (আইএইচসি) বদলির আবেদন করেন তিনি।

এদিকে তোশাখানা দুর্নীতি মামলায় ইমরান খানের সাজা স্থগিতের ওপর গতকাল শুনানি করেছেন ইসলামাবাদ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি ফারুক ও বিচারপতি তারিক মেহমুদ জাহাঙ্গিরির সমন্বয়ে গঠিত দুই সদস্যের আইএইচসি বেঞ্চ।

শুনানির শুরুতে আইএইচসির প্রধান বিচারপতি বলেন, সাজা স্থগিতের আবেদন এখন গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে রয়েছে। বিচারিক আদালত যা করেছে, তা আমরাও করতে পারি। তবে আমরা তা করব না।

রায়ের ব্যাপারে বিচারিক আদালত ভুল করেছে উল্লেখ করে বিচারপতি ফারুক বলেন, ‘আমরা সোমবার পর্যন্ত মামলার শুনানি স্থগিত করছি। কেউ না এলেও আমরা আমাদের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করব।

এর আগে গত ২৩ আগস্ট পৃথক আরেক শুনানিতে পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি (সিজেপি) উমর আতা বন্দিয়াল বলেছিলেন, তোশাখানা দুর্নীতি মামলায় ইমরান খানের বিরেুদ্ধে তাড়াহুড়ো করে রায় দিয়েছিলেন বিচারিক আদালত।
প্রসঙ্গত, গত শতকের সত্তরের দশকে পাকিস্তানের সরকারি একটি বিভাগ হিসেবে তোশাখানা প্রতিষ্ঠা করা হয়। এই বিভাগটি প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, আইনপ্রণেতা, সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধান ও অন্যান্য বিশিষ্ট জনদের দেওয়া উপহার জমা রাখে।

তোশাখানার নিয়ম অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট, মন্ত্রী, আইনপ্রণেতা বা সরকারের পদস্থ কর্মকর্তাদের পাওয়া সব উপহার অবশ্যই এই বিভাগে জমা দিতে হবে। যারা এসব উপহার পেয়েছেন তারা পরে এগুলো নামমাত্র মূল্যে কিনে নিতে পারবেন।

তোশাখানা থেকে কোনো ‍উপহার কিনে নেওয়ার পর সেটি অন্য কারো কাছে বিক্রি করাকে অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হয় পাকিস্তানের আইনে।

ইমরান খানের বিরুদ্ধে তোশাখানা বিতর্কের শুরু হয় ২০২১ সালে। ওই সময় দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও তার স্ত্রী বুশরা বিবি রাষ্ট্রীয় তোশাখানা থেকে বিদেশিদের দেওয়া বিভিন্ন উপহার নামমাত্র মূল্যে কিনে নেন। পরে সেসব উপহার উচ্চ দামে বিক্রি করে দেন তারা।

এই অভিযোগে ইসলামাবাদের অতিরিক্ত জেলা ও সেশন আদালতে মামলা করে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন। গত ৫ আগস্ট সেই মামলার রায় ঘোষণা করেন বিচারক হুমায়ুন দিলাওয়ার।