এআই ব্যবহার করে ওড়িশার টিভি চ্যানেলের চমক
এন্টারটেইনমেন্ট ডেস্ক
প্রকাশিত: ১০:২০ পিএম, ১০ জুলাই ২০২৩ সোমবার
টিভির পর্দায় খবর পড়ছেন এক সুন্দরী তরুণী। পরনে হাতে বোনা ওড়িশার ঐতিহ্যবাহী শাড়ি। চুল আঁটোসাঁটো করে বাঁধা। কপালে ছোট্ট টিপ। কানে দুল। ঝরঝরে ইংরেজিতে কথা বলে চলেছেন একনাগাড়ে। তবে কিছুক্ষণ ভালো করে দেখলে ধরা যাবে আসল ‘খেলা’।
পর্দায় যিনি সংবাদ পাঠিকা হিসাবে সেজেগুজে পরিপাটি হয়ে খবর পাঠ করছেন, তিনি আসলে রক্ত-মাংসের মানুষ নন। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা অর্থাৎ এআইকে কাজে লাগিয়ে তৈরি করা হয়েছে তাকে। নাম দেওয়া হয়েছে লিসা। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সকে (এআই) কাজে লাগিয়ে সংবাদ সঞ্চালনায় টেলিভিশন দুনিয়ায় আরেক বিপ্লব ঘটাল ভারতের ওড়িশা রাজ্যের ওড়িশা টেলিভিশন লিমিটেড (ওটিভি) চ্যানেল। এর আগে এপ্রিলে দেশটির প্রথম এআই সঞ্চালক হিসাবে ভারতে আত্মপ্রকাশ করে ইন্ডিয়া টুডে গ্রপের আজ তক নিউজ চ্যানেলের ‘সানা’। টাইমস অব ইন্ডিয়া।
এআই নিউজ অ্যাঙ্কর লিসাকে রোববার খবর পাঠের আগেই সবার সঙ্গে আলাপ করিয়ে দেন চ্যানেলের কর্ণধার। ওটিভি’র অন্যতম কর্ণধার জাগি মাঙ্গত পন্ডা এদিন বলেন, ‘একটা সময় ছিল যখন কম্পিউটার একটি আশ্চর্যজনক জিনিস ছিল। কিন্তু সময় বদলেছে এবং আজকাল মানুষ ইন্টারনেটেই বেশি সময় ব্যয় করছে।
ওডিশার প্রথম কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সংবাদ উপস্থাপক প্রবর্তন করে আরেকটি মাইলফলক স্থাপন করল এই চ্যানেল।’ তিনি আরও বলেন, ‘টেলিভিশন সম্প্রচারে এআই-এর ব্যবহার সবেমাত্র শুরু হয়েছে এবং সেই কারণে, এআই নিউজ অ্যাঙ্কর লিসার মাধ্যমে নতুন নতুন মাইলফলক তৈরি হবে। লিসা ফ্রি-টু-এয়ার আঞ্চলিক টেলিভিশন সম্প্রচারের প্রথম এআই অ্যাঙ্কর।’
ইংরেজি এবং ওড়িয়া ভাষায় খবর পড়বেন লিসা। তবে জানানো হয়েছে, লিসা ওড়িয়া ভাষা এখনো ভালো করে রপ্ত করে উঠতে পারেনি। তাকে ভাষা শেখানোর কাজ চলছে। ঝরঝর করে ওড়িয়া বলতে শিখে গেলেই আরও বেশ কিছু অনুষ্ঠানের দায়িত্ব তাকে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন চ্যানেল কর্তৃপক্ষ।
শুধু টিভির পর্দায় নয়, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামের মতো বিভিন্ন সামাজিকমাধ্যমে লিসাকে দেখা যাবে। ওড়িশার এই এআই সঞ্চালকের উচ্চারণ, পরিবেশনা, উপস্থাপন অনেকেরই মনে ধরেছে। লিসার আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কয়েকজন দর্শকও। তারা জানিয়েছেন, লিসাকে নিয়ে তাদের আগ্রহ জন্মেছে। চ্যানেলের কর্ণধার জাগি মাঙ্গত প্লার কথায়, ‘একটা সময় কম্পিউটার সবচেয়ে আশ্চর্যের জিনিস ছিল। তবে সেই যুগ আর নেই। সময় বদলেছে। এখন এআই-এর যুগ। সে কারণেই সময়ের সঙ্গে তাল মেলাতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
সোশ্যাল মিডিয়ার সব মঞ্চে তার নামে তৈরি হয়েছে পেজ। অদূর ভবিষ্যতে কৃত্রিম বৃদ্ধিমত্তার দৌলতে সাংবাদিকতায় নতুন দিগন্ত খুলে যাবে বলে ধারণা বিশেষজ্ঞদের। কৃত্রিম বলেই যান্ত্রিক কণ্ঠস্বর নয়। লিজার কণ্ঠে আবেগের ছোঁয়াও স্পষ্ট। তবে আশঙ্কা এআই বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার করে এভাবেই সংবাদপাঠক বা সংবাদপাঠিকা তৈরি করে ছড়ানো হতে পারে ভুয়া খবর। ২০১৮ সালে প্রথম এআই নিউজ অ্যাঙ্কর ব্যবহার করা শুরু করে চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া। সেই থেকেই ধারণাটি গতি পেয়েছে।