অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

ডেঙ্গু আরও বাড়তে পারে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ০৫:১৭ পিএম, ৯ জুলাই ২০২৩ রোববার  

সারাদেশে আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে ডেঙ্গু আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

রোববার (৯ জুলাই) দুপুরে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার গড়পাড়া এলাকায় নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, দেশে আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে ডেঙ্গু আরও বাড়তে পারে। এখন থেকেই সবাইকে সজাগ ও সচেতন হতে হবে।

তিনি বলেন, আমরা জানি দেশে ডেঙ্গু অনেক বেড়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে দেশে ডেঙ্গুতে ৬৭ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ১২ হাজার আক্রান্ত। বিভিন্ন হাসপাতালে প্রায় আড়াই হাজার মানুষ এখনও চিকিৎসাধীন। ৯ হাজারের বেশি লোক চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছে।

মশার কারণেই এই জ্বরের প্রকোপ বেশি উল্লেখ করে জাহিদ মালেক বলেন, মশা বেশি থাকার কারণে এ বছর ডেঙ্গুটা বাড়তি। বৃষ্টি এবং বিভিন্ন জায়গায় পানি আটকে থাকায় মশা বেশি জন্ম নিচ্ছে। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের একমাত্র পথ হচ্ছে মশা কমানো। মশা কম হলে মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত কম হবে।

তিনি বলেন, আশঙ্কাজনক বিষয় হচ্ছে এখন দেশের সবগুলো জেলার মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে। সর্বশেষ পরিসংখ্যান হচ্ছে- দেশের ৫৭টি জেলায় ডেঙ্গু ছড়িয়ে গেছে। দেশে যত ডেঙ্গু আক্রান্ত হচ্ছে তার মধ্যে ঢাকায় সবচেয়ে বেশি। সারাদেশের ডেঙ্গু আক্রান্তের  ৬০ ভাগই  ঢাকার। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মুগদা হাসপাতাল, সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অনেক রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

ডেঙ্গু মোকাবেলায় সরকার বেশ গুরুত্বের সাথে কাজ করছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আমরা সিটি করপোরেশন, পৌরসভাকে আহবান করব তারা যেন বেশি বেশি স্প্রে করে এবং যেখানে যেখানে পানি জমে সেসব পাত্র ফেলে দেয়।

মন্ত্রী আরও বলেন, যেখানে বহুতল ভবন আছে সেখানে ডেঙ্গু বেশি দেখা দিচ্ছে। কারণ সেসব ভবনের নিচে গ্যারেজ এবং ফ্লাটে ফুলের টবে পানি জমে থাকে। সে জন্য শুধু সরকার ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না, পাশাপাশি জনগণকেও এগিয়ে আসতে হবে। যার যার বাড়ির আঙিনা পরিষ্কার করতে হবে এবং যেখানে মশা জন্ম নেয় সেখানে স্প্রে করে লার্ভা ধ্বংস করতে হবে। গত বছর এ সময় অনেক ভালো অবস্থায় ছিলাম। বর্তমানে মশা এবং ডেঙ্গু অনেক বাড়তি। এখন থেকে যদি আমরা সজাগ না হই তাহলে এটা আরও বেড়ে যাবে।

আমাদের ডিপার্টমেন্টে যারা মশা নিয়ে গবেষণা করেন তারা জানিয়ে দিয়েছেন কোথায় কোথায় মশা ভেসে আছে এবং ঘনত্ব বেশি আছে। এখন বাকি কাজটুকু সিটি কর্পোরেশনের। সিটি কর্পোরেশন স্প্রে করেছে কিন্তু আমার কাছে মনে হয় তারা সেভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেনি। যার ফলে ডেঙ্গু এত বেড়েছে।

আমাদের মেয়ররা বিভিন্ন ভবনে যাচ্ছেন, তদারকি করছেন নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য, কিন্তু সেভাবে নিয়ন্ত্রণে আসে নাই। তাদের একার পক্ষে সম্ভব নয়, জনগণকেও এগিয়ে আসতে হবে ডেঙ্গু মোকাবেলায়।

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে হাসপাতালগুলোতে কি ব্যবস্থা আছে- এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, দেশের সব হাসপাতালে ডেঙ্গু ইউনিট স্থাপন করা হয়েছে এবং ডাক্তার-নার্সদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ওষুধপত্রের সব ধরনের ব্যবস্থা রয়েছে। হাসপাতালগুলোতে এখনও সিট খালি আছে। আশা করি চিকিৎসায় কোনো সমস্যা হবে না।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুলতানুল আজম খান আপেল, সাংগঠনিক সম্পাদক সুদেব কুমার সাহা, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আফছার সরকার, জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি বাবুল সরকার প্রমুখ।