অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

ডেঙ্গিতে মৃত্যুর প্রধান কারণ হেমোরেজিক-শক সিনড্রোম

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ১০:৩৪ পিএম, ১০ জুন ২০২৩ শনিবার  

দেশে এডিস মশাবাহী ডেঙ্গি জ্বর আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। অন্যসব বছরে বর্ষা মৌসুমে ডেঙ্গির প্রাদুর্ভাব দেখা দিলেও চলতি বছর শীত ও গ্রীষ্মে দেখা দিয়েছে। ডেঙ্গি সংক্রমণে মৃত্যুর প্রধান কারণ- হেমোরেজিক ও শক সিনড্রোম। 

শনিবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম এ তথ্য জানান।

‘দেশের বর্তমান ডেঙ্গি সংক্রমণ পরিস্থিতি ও করণীয়’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যের ডিজি অধ্যাপক ডা. খুরশীদ আলম জানান, এ বছর ডেঙ্গি রোগীদের বেশিরভাগই ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তবে এ বছরে ঢাকার বাইরে তেমন ডেঙ্গি রোগী নেই। চলতি বছরে (শুক্রবার পর্যন্ত) ডেঙ্গি জ্বর নিয়ে সারা দেশে ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। 

তিনি বলেন, ডেঙ্গি রোগীর মৃত্যুর কারণ আমরা ক্লিনিক্যালি জানার চেষ্টা করেছি। তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত মৃত্যুর প্রধান কারণ- ডেঙ্গি হেমোরেজিক ও শক সিনড্রোম। কারণ প্রায় প্রত্যেকেই ডেঙ্গি হেমোরেজিক ফিভারে ভুগছিলেন। এছাড়া অন্য আরও কারণও থাকতে পারে। এসব জানার জন্য ময়নাতদন্ত করা প্রয়োজন। কিন্তু পরিবার থেকে সে অনুমতি পাওয়া যায় না।  

পরীক্ষা-নিরীক্ষার ঘাটতি রয়েছে- কিনা জানতে চাইলে ডিজি অধ্যাপক খুরশীদ আলম বলেন, আমাদের কাছে এলে ডায়াগনোসিস (পরীক্ষা) করে আমরা জানার চেষ্টা করছি। কিন্তু না এলে তো জানা সম্ভব নয়। এ বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানোর কাজ করছি। এ বিষয়ে গণমাধ্যমসহ সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। জ্বর হলেই ডেঙ্গি পরীক্ষা করাতে হবে। ডেঙ্গি শনাক্তকরণ পরীক্ষা সরকারি হাসপাতালে ১০০ টাকা এবং বেসরকারিতে ৩০০ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া আছে। কেউ বেশি নিলে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

ডিজি অধ্যাপক খুরশীদ আলম আরও বলেন, ইতোমধ্যে সংশোধিত গাইডলাইন প্রতিটি হাসপাতালে সরবরাহ করা হয়েছে। হাসপাতালগুলোর চাহিদা অনুযায়ী চিকিৎসক, ওষুধসহ সবকিছু সরবরাহ করা হচ্ছে। প্রতিটি বিভাগে ডেঙ্গি চিকিৎসায় পর্যাপ্ত প্রস্তুতি রাখা হয়েছে। তবে এক্ষেত্রে মশা নিধন করাটা সবচেয়ে জরুরি। সিটি করপোরেশন ও স্থানীয় সরকার বিভাগসহ সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এটি সফল হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। একইসঙ্গে প্রতিটি হাসপাতালে মশারি সরবরাহ করা হচ্ছে। তবে রোগীরা মশারির ভেতর থাকছে না বলেও তিনি জানান।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাসপাতাল শাখার পরিচালক ডা. দাউদ আদনান জানান, ডেঙ্গি পরীক্ষায় গুরুত্ব দিতে সব হাসপাতালকে নির্দেশনা দেওয়া আছে। গত বছর পরীক্ষার ফি নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছিল। প্রতিটি হাসপাতালে গাইডলাইন সরবরাহ করা হয়েছে। সব রোগীর জন্য মশারি নিশ্চিত করা হয়েছে। 

তিনি বলেন, চিকিৎসক এলে রোগীরা মশারির ভেতর থাকছেন, বাকি সময়টা বাইরে থাকছেন। রোগীদের মশারির ভেতর রাখার বিষয়ে পুলিশিং ব্যবস্থা আমাদের নেই। এ বিষয়ে আমাদের রোগীদের সচেতন হতে হবে। ডেঙ্গি জ্বর থেকে সুস্থ হওয়ার পর রোগীদের জটিলতা বেশি দেখা যাচ্ছে বলেও জানান তিনি। 

অধিদপ্তরের এমআইএস শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. শাহাদাৎ হোসেন বলেন, ডেঙ্গি রোগীদের তথ্য ও ডেঙ্গির গতিবিধি পর্যবেক্ষণে রোগীদের তথ্য সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। রোগীদের মোবাইল ফোন নম্বর ও ঠিকানা সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে।