ধারাবাহিক অনুবাদ উপন্যাস : উড়াও শতাবতী (পর্ব-০১)
মূল: জর্জ অরওয়েল, অনুবাদ: মাহমুদ মেনন
প্রকাশিত: ০৯:১১ এএম, ২৩ মে ২০২৩ মঙ্গলবার আপডেট: ১০:৫১ এএম, ২৩ মে ২০২৩ মঙ্গলবার
ঘড়ির কাঁটায় বেলা আড়াইটা। ম্যাকেচনির বইদোকানের পেছনে ছোট্ট কামরায় আড়াআড়ি পাতা টেবিলে লম্বালম্বি শুয়ে গর্ডন। গর্ডন কমস্টক। কমস্টক পরিবারের সবশেষ সদস্য। ঊনত্রিশে পড়েছে। হাতে চারপেনি দরের প্লেয়ার্স ওয়েটস সিগারেটের প্যাকেটটা বুড়ো আঙুলের চাপে একবার খুলছে আবার আটকাচ্ছে। দূরের আরেকটা ঘড়ি- রাস্তার উল্টোদিকে প্রিন্স অব ওয়েলস থেকে ডিংডং শব্দে থমকে থাকা ইথার কাঁপিয়ে জানান দিচ্ছে সময়।
শয়ান থেকে ওঠার ধকলটা নিলো গর্ডন। সিগারেটের প্যাকেটটা বুক পকেটে চালান করে সিনা টান করে বসলো। নিকোটিনের জন্য প্রাণটা আনচান করছে। চারটে মোটে শলাকা আছে এই প্যাকেটে। আজ বুধবার। শুক্রবারের আগে পকেটে কানা-কড়িও ঢুকবে না। আজকের রাত আর আগামীকালের পুরোটা দিন সিগারেটহীন কাটাতে হবে। এর চেয়ে জঘন্য বিষয় জগৎ সংসারে আর কিচ্ছুটি হতে পারে না!
গোটা এক দিনের তামাকহীন জীবনের কথা ভেবে ত্যক্ত গর্ডন এবার পুরোপুরি গাত্রোত্থান করলো। পা বাড়ালো দরজার দিকে। লিকলিকে শরীর, হাঁটার ধরণে লাফিয়ে চলার একটা ভঙ্গি। কোটের ডান হাতায় কনুইয়ের কাছে ছিদ্রটা বাড়ছে, মাঝের বোতামটি হাওয়া সেই কবে। ফ্লানেলের রেডিমেড ট্রাউজারটা নানা জায়গায় কুচকে তার স্বাভাবিকতা হারিয়েছে। পায়ের তলায় শুকতলি দুটো কতটা ক্ষয়ে গেছে তা উপর থেকে তাকিয়েও দিব্যি ঠাওর করতে পারে গর্ডন।
পা ফেলতেই পকেটে ক’টি কয়েন ঝনঝনিয়ে উঠলো। তা যতই ঝনঝনাক, ভালো করেই সে জানে ওই মুদ্রায় মোট অংকের দৌড় কত! পাঁচপেন্সের হাফপেনি, দুইপেন্সে আরও আধা আর একটা জোইমুদ্রা। এইই সম্বল।
থমকে দাঁড়ালো। আর পকেট থেকে তিনপেনির বেচারা কয়েনটিকে তুলে এনে তার ওপর ক্রুর দৃষ্টি ফেললো। ফালতু, অকম্মার ঢেঁকি! ভাবলো, স্রেফ তার মতো অথর্বের হাতেই এমন একটি কয়েন গছিয়ে দেওয়া সম্ভব! গতকালই কয়েনটি তাকে ধরিয়ে দিলো দোকানি মেয়েটি। গিয়েছিলো সিগারেট কিনতে। বাকি পয়সা ফেরত দিতে গিয়ে বিগলিত কণ্ঠে ছুকরি বললো, একটা থ্রিপেনি-বিট কয়েন দেই, স্যর! আর তাতেই বর্তে গেলো সে! হ্যাঁ! দাও দাও! ক্ষতি কি! কিন্তু এখন নিজেকে বোকার হদ্দ ছাড়া কিছুই ভাবতে পারছে না। ভাবতে গিয়ে হৃদয়খানি যেন মুষড়ে যাচ্ছে - এই ধরাধামে এইক্ষণে তার কাছে স্রেফ পাঁচপেন্সের হাফপেনি বৈ আর কিছু নেই। তার মধ্যে তিনপেনির বিট কয়েনটি দিয়েতো কিচ্ছুটি হবে না!
এটি বস্তুত কোনো মুদ্রা নয়! মুদ্রা নামের কলঙ্ক! পকেট থেকে এমন একটি কয়েন বের করলে আপনাকে বোকা বনে যেতে হবে যখন তখন। অন্য কিছু কয়েনের সঙ্গে থাকলে অবশ্য কিছুটা দাম থাকে, নয়তো নয়।
তবে হ্যাঁ কিছু একটা কিনে হয়তো বললেন, কত হলো? আর দোকানি মেয়েটি যদি বলে- তিনপেন্স। তবেই পকেট হাতড়ে কয়েনটি বের করে আনতে পারবেন। তখন দুই আঙুলের ডগায় ওটি আলগোছে চেপে ধরে এগিয়ে দিয়ে হাপ ছেড়ে বাঁচবেন।
কিন্তু তাতেও কী রক্ষা মিলবে! দোকানের মেয়েটি নির্ঘাত ভ্রু কুঁচকাবে। আর সন্দেহাতীতভাবেই ধরে ফেলবে এটিই আপনার কাছে থাকা জগতের শেষ সম্বল। তখন ওকে জিনিষটার দিকে এমনভাবে চোখ পাকিয়ে তাকিয়ে থাকতে দেখবেন, যেন মুদ্রাটির ওপর খোদাই করা ক্রিসমাস পুডিংটুকু স্পষ্ট দেখা যায় কিনা তাই পরীক্ষা করে দেখছে। এরপর কোনোরকম নাক বাঁচিয়ে বের হয়ে আসতে পারলে শিগগির আর ওমুখো হবেন না। তাতে যদি মান রক্ষা হয়।
নাহ! জোইমুদ্রাতো কোনো কাজেই আসবে না। তাহলে বাঁচলো মোটে দুইপেন্স হাফপেনি। এই দুইপেন্স হাফপেনিতে শুক্রবার অবধি চলতে হবে।
ডিনারের আগে একাকিত্বের সময়। এসময় খদ্দের খুব কমই আসে। কিংবা আসেই না। সাত হাজার বইয়ের সঙ্গে স্রেফ একা সে। ছোট্ট অন্ধকার কক্ষ, ধুলো আর নষ্ট কাগজের গন্ধ। বেশিরভাগই পুরোনো, ছেঁড়াখোঁড়া বইয়ে ঠাসা। ছাদছোঁয়া উপরের তাকে বিলুপ্ত বিশ্বকোষের আটখণ্ডের ভলিউমগুলোর দশা এখন কবরস্থানে ভচকে যাওয়া কফিনের মতো। দরজায় নীল রঙা ধুলিমাখা পর্দাটি সামান্য ঠেলে উঁকি মারল গর্ডন। ওপাশটায় আলো একটু বেশি। বই ধার দেওয়া-নেওয়া চলে এখান থেকেই। প্রতিটি বই দুইপেনিতে ধার হয়। বইপ্রেমীদের কাছে লাইব্রেরিগুলোর মধ্যে ম্যাকেচনির বই দোকানটিই বেশি পছন্দের। এখানে যা কিছু বই, তার সবই প্রায় উপন্যাস, এছাড়াও রয়েছে কিছু পুস্তকাদি। তবে অল্প। উপন্যাসগুলো কোন ধাচের সেটা একটা বিষয় বটে! তিন ধারের দেয়ালে মাচান অবধি উঁচু করে আট শত বই থরে থরে সাজানো। দেখে মনে হবে নানারঙের ইটের একটা দেয়াল উপর থেকে নেমে এসেছে। লেখকদের নামের আদ্যাক্ষরক্রমে সাজানো। আরলেন, বোরোস, ডিপিং, ডেল, ফ্র্যাকো, গ্লাসওর্থি, গিবস, প্রিস্টলি, স্যাপার, ওয়ালপোল। ঠিক এইক্ষণে বইয়ের ওপর বিশেষ করে এইসব উপন্যাসের ওপর স্রেফ ঘৃণাই জমছে গর্ডনের। অন্তর থেকে উৎসারিত একটা ঘৃণার চাহুনি বইগুলোর উপর ফেললো গর্ডন। এইসব অখাদ্য, বস্তাপচা রদ্দি মালগুলোর সঙ্গে এক ঘরে তাকে থাকতে হচ্ছে। চর্বি, দলা দলা চর্বি, আট শ’ খণ্ড চর্বির মাঝে যেন ডুবে আছে সে।
অভ্যাসবসত চুলে আঙুলের চিরুনি চালিয়ে আলগোছে দরজা গলিয়ে সামনের অংশে ঢুকলো। কে জানে দোকানের সামনে কাচের ওপারে এসে যেতে পারে কোনো নারী খদ্দের! গর্ডনকে দেখে মজে যাওয়ার কোনো কারণ নেই বটে! পাঁচ ফুট সাত ইঞ্চি লম্বা, বড় বড় চুলের কারণে মাথাটিকে শরীরের তুলনায় খানিকটা বেমানানই লাগে। তবু লম্বাটে গড়নের তনুখানা নিয়ে একেবারে অসচেতন সে কখনোই থাকে না। কেউ তার দিকে তাকাচ্ছে বুঝে ফেললে একটু টানটান হয়ে যায়, বুকটাকে সামান্য চিতিয়ে দেয়। তাতে কিছুটা ভাবের উদ্রেক হয় বৈকি।
থাক সে কথা! আপাতত বাইরে কেউ নেই।.
দোকানের সামনের অংশটা একটু গোছানো। দামি পণ্যগুলো সাজানো এই অংশে। হাজার দুয়েক বইয়ের স্থান সংকুলান হয়েছে এখানে। এক্সক্লুসিভগুলো জায়গা পেয়েছে জানালার দিকটায়। ডান দিকে একটা গ্লাসআঁটা শোকেসে শিশুদের বই। পাজির পাঝাড়া শিশুদের নিয়ে র্যাকহ্যামের জংলি ইলাস্ট্রেশনের একটি বইয়ের মলাটের ওপর থেকে সরে ব্লুবেল গ্লেড হয়ে ওয়েন্ডলি পর্যন্ত গিয়ে থামলো গর্ডনের চোখ। এরপর দৃষ্টি সোজা কাচের দরজা ভেদ করে বাইরে। বাজে দমকা হাওয়ার বেগটা বাড়ছে। উপরে মেঘেঢাকা আকাশ, নিচে বৃষ্টিভেজা সড়ক।
দিনটি নভেম্বরের ১৩। সেন্ট এন্ড্রু দিবস। চার রাস্তার সংযোগের এক কোণায় ম্যাকেচনির এই দোকান। দরজা থেকে যতটা চোখ যায়, বাইরে বাঁয়ে বড় এল্ম গাছটির পত্রশূন্য অসংখ্য ডালপালা আকাশের বিপরীতে বাদামীরঙা কারুকাজ ছড়িয়েছে। উল্টোদিকে প্রিন্স অব ওয়েলসের পাশে লম্বা লম্বা বোর্ডগুলো বিজ্ঞাপনে ঠাসা। খাদ্য আর ওষুধ পণ্যের নৈর্ব্যক্তিক উপস্থাপনা ও প্রসারকর্ম। গ্যালারিতে বড়বড় গোলাপিরঙা ফাঁপা মুখগুলোয় বোকামির আশাবাদিতা ঝুলে রয়েছে। কিউ.টি সস, ট্রুইট ব্রেকফাস্ট ক্রিসপস (শিশুরা ব্রেকফাস্ট ক্রিসপসের জন্য কান্না জুড়ে দেয়), ক্যাঙারু বারগান্ডি, ভিটামল্ট চকোলেট, বোভেক্স। এগুলোর মধ্যে বোভেক্সের বিজ্ঞাপনটি দেখে গর্ডনের মেজাজ বেশি খিচড়ায়। চশমাআঁটা ইঁদুরমুখো এক কেরানি তেলচপচপে পরিপাটি চুলে একটি ক্যাফের কোণার টেবিলে বসে সাদা মগ ভরা বোভেক্স সামনে নিয়ে দাঁত কেলাচ্ছে। নিচে লেখা- ‘কোণার টেবিলে বসে খাচ্ছি বোভেক্স সহকারে’।
দৃষ্টির পরিধি একটু ঘনিয়ে আনলো গর্ডন। ধুলোজড়ানো কাচের ভেতর থেকে নিজের প্রতিবিম্বটি তার দিকেই তাকিয়ে। এখনো ত্রিশে পৌঁছায়নি, কিন্তু এরই মধ্যে পোকায় কাটা মুখ; ফ্যাকাশে, আঁচড় পড়া। কপালের দিকের গড়ণটা, লোকেরা ‘ভালো’ বলে বটে- ইষৎ উন্নত, তবে সেটুকুই। চোয়ালটা চিমসে। ফলে সবমিলিয়ে মুখমণ্ডলটা ডিম্বাকৃতি নয় বরং নাশপাতির আকার পেয়েছে। ইঁদুররঙা উশকো-খুশকো চুল, গোমড়া মুখ, বাদামী চোখ। দৃষ্টির পরিধি দ্রুত বাড়িয়ে নিলো। আজকাল আয়নায় বড্ড ঘেন্না তার। বাইরেটা বড়ই বিবর্ণ নিষ্প্রাণ। খসখসে ইস্পাতের হাঁসের মতো ভাসতে ভাসতে একটি ট্রাম পাথুরে সড়কে ঘর্ঘর শব্দ তুলে এগুচ্ছে, তাতে রাস্তায় ঝরাপাতাগুলো ঘুর্ণি খেয়ে খেয়ে উড়ছে। এল্ম গাছে পত্রহীন ডালগুলো বাতাসে পূবের দিকে ঝুঁকে পড়ছে। কিউ.টি সসের পোস্টারটির এক কোনা ছিঁড়ে ফিতার মতো ঝুলে ছোট্ট নিশান হয়ে ঘুরে ঘুরে উড়ছে। ডান দিকে পাশের সড়কেও ন্যাড়া গাছগুলো বাতাসের তোড়ে ঝুঁকে ঝুঁকে পড়ছে। ফালতু বাতাস। ঝাপটা মেরে জানান দিয়ে গেলো শীতের কামড়। ওদিকে কবিতার দুটি চরণ জন্ম নেওয়ার আকুলতায় গর্ডনের মনের গর্ভে হাত-পা ছুঁড়ে চলছে:
তীব্র (কিছু একটা) বাতাস— হতে পারে হুমকির বাতাস, না ভালো হয় ভীতির বাতাস। ভীতির বাতাস বয়ে চলেছে, না বলি ছুটে চলেছে, মনে মনে কবিতা আওড়াচ্ছে গর্ডন।
‘কিছু একটা ডালগুলো- আত্মসমর্পিত ডালগুলো, না ভালো হয় ঝুঁকে পড়া ডালগুলো, তাহলে ভীতির সাথে ঝুঁকে যাওয়ার মিল থাকে, কিছু এসে যায় না, ঝুকে পড়া ডালগুলো সদ্য ন্যাড়া। বাহ বেশ!
- তীব্র ভীতির বাতাস ঝাপটায় সদ্য ন্যাড়া ডালগুলো হয়ে যায় নত।
(শার্পলি দ্য মেনাসিং উইন্ড সুইপস ওভার দ্য বেন্ডিং পপলারস, নিউলি বেয়ার।)
বেশ ভালো। ‘বেয়ার’ শব্দটা ছন্দে বেমানান। যাইহোক, বরাবরই ‘এয়ার’ শব্দটা এলে, সেই চসার থেকে শুরু করে সব কবিকেই দেখা গেছে, ছন্দ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন।
নাহ! গর্ডনের মনের ভেতরে কবিতার তাড়ণাটা মিইয়ে গেলো। মনজুড়ে আবার ফিরে এলো পকেটের সেই খানকয়েক কয়েন। দুইপেন্সের হাফপেনি আর একটি জোই মুদ্রা। মনের ওপর বিরক্তির ভাবটা সরছেই না। ছন্দ আর বিশেষণের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে পারছে না তার মন। পকেটে মোটে দুইপেন্সের হাফপেনি রেখে কেউ পারে না।
ফের উল্টোদিকের পোস্টারগুলোর ওপর চোখ পড়লো। ওগুলোর ওপর প্রচণ্ড ঘৃণার ব্যক্তিগত কারণও তার রয়েছে। যন্ত্রের মতো আরও একবার পোস্টারের স্লোগানগুলো পড়ে ফেললো। ‘ক্যাঙ্গারু বারগান্ডি- ব্রিটনদের মদ।’ ‘হাঁপানির কষ্টে ভুগছে মেয়েটি’। ‘কিউ.টি. সসে স্বামীর মুখে হাসি।’ ‘ভিটামল্ট খাও পাহাড় চড়ে বেড়াও’, ‘কার্ভ কাট- ভবঘুরে ধূমপায়ীদের জন্য।’ শিশুরা চায় ব্রেকফাস্ট ক্রিসপস।’ ‘কোণার টেবিলে বসে খাচ্ছি বোভেক্স সহকারে।’
হাহ্! একটা মোটে ক্রেতা চাই, তা সে যেই হোক! ভিতরে ভিতরে ভীষণ মুষড়ে যাচ্ছে গর্ডন। দরজায় দাঁড়িয়ে সামনের জানালার বাইরে একটা দৃশ্য সরাসরি দেখা যায়। এখানটাতে কোনো কাচ নেই, ফলে প্রতিবিম্বও নেই। সেদিকটা দিয়েই একজন সম্ভাব্য ক্রেতার আগমন চোখে পড়ে তার।
কেতাদুরস্ত গোছের মাঝবয়সী লোকটা কালো স্যুট, বোলার হ্যাট, ছাতা আর ডেসপ্যাচ কেস হাতে- রাজ্য সরকারের কৌসুলি কিংবা শহরের করনিক গোছের কিছু হবেন। বড় বড় ফ্যাকাশে চোখ দুটো জানালা পথে বাড়িয়ে দিলেন। নজরে নোংরা একটা ভাব। লোকটির চোখের দৃষ্টিপথ ধরে নজর ফেললো গর্ডনও। ওহ... তবে এই তোমার মনে! দূরের কোনায় ডি এইচ লরেন্সের প্রথম সংস্করণের তাকেই সে দৃষ্টি। স্ক্যান্ডালের কাহিনীতে ব্যাটার ঝোঁক আছে বুঝা গেলো। অনেক আগে লেডি চ্যাটার্লির কথা শুনেছে সে। লোকটার চেহারায় নোংরামির ভাষাটা যেন পড়ে ফেলতে পারছে গর্ডন। বিবর্ণ ভারি, লুকোনো, বাজে একটা ছোঁকছোঁক ভাব। তবে মুখের কোণায় একটা অবজ্ঞাও ঝুলিয়ে রাখা। বাড়িতে স্থানীয় শুদ্ধবাদী লিগের কিংবা সমুদ্রপাড়ের নজরদারি (রাবার সোলের স্লিপার পরে ইলেক্ট্রিক টর্চ হাতে বেলাভূমিতে চুম্বনরত যুগলদের মনিটরিং করা) কমিটির সভাপতি হবেন নিশ্চয়। আর এখন শহরে নোংরা আনন্দ খোঁজায় ব্যস্ত। গর্ডনের মন চাইছে... ইস! লোকটা যদি ঢুকতেন, যদি ঢুকতেন! তাহলেই উইমেন ইন লাভ’র একটা কপি গছিয়ে দিতে পারতো। তা যতই খারাপ লাগুক না কেন!
কিন্তু না! ওয়েলশের উকিলবাবু মত বদলালেন।....
চলবে...