বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগে অনিয়ম: মালয়েশিয়ায় দুই কর্মকর্তাকে অব্যাহতি
অপরাজেয় বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:৩০ পিএম, ২০ মে ২০২৩ শনিবার
মালয়েশিয়ায় বিদেশিকর্মী নিয়োগে কেলেঙ্কারির অভিযোগে দুই শীর্ষ কর্মকর্তাকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়েছে দেশটির মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়। বৈদেশিক শ্রম কোটা অনুমোদনের বিষয়ে অভ্যন্তরীণ তদন্তের পর মন্ত্রণালয়ের ডিজিসহ দুই শীর্ষ কর্মকর্তাকে তাদের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
শুক্রবার (১৯ মে) দেশটির বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের তথ্যমতে মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক আসরি এবি রহমান ও মন্ত্রণালয়ের ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল অব অপারেশনস মুহাম্মদ খায়ের রাজমান মোহাম্মদ আনোয়ারকে অব্যাহতি দিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার (২২ মে) মুহাম্মদ খায়ের রাজমান মোহাম্মদ আনোয়ারের স্থলাভিষিক্ত হবেন জাতীয় ঐক্য ও সংহতি বিভাগের মহাপরিচালক নরিসন রামলি। মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের নবনিযুক্ত সেক্রেটারি জেনারেল জাইনি উজাংয়ের নির্দেশে দ্রুত এ পরিবর্তন আনা হয়েছে।
কয়েক মাস ধরে কাজ না পাওয়া আটকেপড়া বিদেশি কর্মীদের ক্রমবর্ধমান সংখ্যার মধ্যেই গত মাসের এপ্রিলে নিজের পদ গ্রহণ করা জাইনি আগামী দিনগুলোতে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আরও পদক্ষেপ নেবেন। মন্ত্রণালয়ের সূত্রে এমনটিই জানা গেছে।
গত চার মাস আগে বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় আসা শতাধিক কর্মী বৈধভাবে ভিসা নিয়ে দেশটিতে প্রবেশ করলেও নিয়োগকর্তাদের অবহেলায় এখনও কর্মহীন হয়ে পড়ে আছেন এসব প্রবাসী বাংলাদেশি।
এদিকে গত ১৫ মে এসব বাংলাদেশি কর্মী চাকরি পাওয়ার দাবিতে কুয়ালালামপুর বাংলাদেশ হাইকমিশনে জড়ো হন। সেখানে তারা জানান, মালয়েশিয়ায় পৌঁছার পর থেকে নিয়োগকর্তাদের কাছ থেকে কোনো ধরনের বেতন-ভাতা পাননি।
তাদের যেখানে রাখা হয়েছে সেখানে বসবাসের কোনো পরিবেশ নেই। এমনকি দুবেলা খাবার খাওয়ার টাকাও নেই বলে জানিয়েছেন তারা। এরপর গত মঙ্গলবার (১৬ মে) শ্রম বিভাগের বরাত দিয়ে দেশটির কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ করে মালয়েশিয়ার শ্রম বিভাগের হস্তক্ষেপে নতুন করে ১২০ জন ভুক্তভোগী বাংলাদেশি চাকরি পেয়েছেন।
এসব বাংলাদেশি কর্মীদের ন্যূনতম মজুরি অনুযায়ী একটি নতুন সংস্থা এসব শ্রমিকদের কর্মী হিসেবে গ্রহণ করেছে বলে সেখানে উল্লেখ করা হয়।
তবে ভুক্তভোগী বাংলাদেশিরা জানিয়েছেন, চারদিন পার হয়ে গেলেও হতাশাগ্রস্ত ১২০ বাংলাদেশি কর্মীর কেউ এখনও কাজে যোগ দিতে পারেননি। এমনকি তাদের নিয়োগকর্তার পক্ষ থেকেও এখন পর্যন্ত তাদের কাজের বিষয়ে কিছুই জানায়নি।
শনিবার একটি সূত্রে জানা গেছে, মালয়েশিয়ার গেন্টিং হাইল্যান্ডে গৃহকর্মী হিসেবে চাকরি দেওয়ার লোভ দেখিয়ে বাংলাদেশ থেকে চারটি ভিন্ন ভিন্ন কোম্পানির মাধ্যমে প্রায় ৬০০ বাংলাদেশি কর্মীকে মালয়েশিয়ায় পাঠানো হয়।
যেসব বাংলাদেশি শ্রমিক মালয়েশিয়ায় আসার পর তাদের নিয়োগকর্তার অবহেলায় এখনো চাকরি পাননি, তাদের নিয়োগের সঙ্গে যুক্ত সব রিক্রুটিং এজেন্সির লাইসেন্স বাজেয়াপ্ত করা হবে। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয় দেশটির শ্রম দপ্তর থেকে।