ঘূর্ণিঝড়ের পরিস্থিতি বুঝে এসএসসি পরীক্ষার বিষয়ে সিদ্ধান্ত
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
প্রকাশিত: ০৩:৫৯ পিএম, ১১ মে ২০২৩ বৃহস্পতিবার
চলমান এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার মধ্যেই সাগরে সৃষ্টি হয়েছে ঘূর্ণিঝড় মোখা; কর্তৃপক্ষ বলছে, ঝড়ের গতিপ্রকৃতি ও সার্বিক অবস্থা বুঝে পরীক্ষার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বৃহস্পতিবার (১১ মে) আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান তপন কুমার সরকার এ কথা জানিয়েছেন।
যেহেতু বোর্ড ভিত্তিক ভিন্ন ভিন্ন প্রশ্নে পরীক্ষা হয় তাই ঘূর্ণিঝড়ের কারণে পরীক্ষা স্থগিত করলে শুধু উপকূলীয় এলাকার বোর্ডের পরীক্ষা স্থগিত হবে। সারাদেশে স্থগিত করার দরকার হয়তো হবে না বলেও জানিয়েছেন আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি।
এদিকে, বৃহস্পতিবার (১১ মে) সকালে ঘূর্ণিঝড় মোখার অবস্থান ছিল বাংলাদেশ উপকূল থেকে মোটামুটি ১২০০ কিলোমিটার দূরে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোসাগরে। এর গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে আবহাওয়াবিদরা যে পূর্বাভাস দিয়েছেন, তাতে রোববার সকাল থেকে দুপুরের মধ্যে এ ঝড় বাংলাদেশের কক্সবাজার এবং মিয়ানমারের কিয়াউকপিউয়ের মধ্যবর্তী এলাকা দিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে দেশের উপকূলীয় জেলাগুলোতে ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে প্রচুর বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
সারাদেশে গত ৩০ এপ্রিল শুরু হওয়া এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা এখন মাঝপথে। ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার সম্ভাব্য দিন হিসেবে যে রোববারের কথা বলা হচ্ছে, সেদিনও পরীক্ষা রয়েছে। সেদিন সকাল ১০টা থেকে বিজ্ঞান বিভাগের পরীক্ষার্থীদের পদার্থ বিজ্ঞান, মানবিক বিভাগের পরীক্ষার্থীদের বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা এবং ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের পরীক্ষার্থীদের ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং বিষয়ের পরীক্ষা হওয়ার কথা।
আর পরদিন সোমবার রয়েছে গার্হস্থ্য বিজ্ঞান (তত্ত্বীয়), কৃষি শিক্ষা (তত্ত্বীয়), সংগীত, আরবি, সংস্কৃত, পালি, শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া এবং চারু ও কারুকলা বিষয়ের পরীক্ষা।
পূর্বাভাস ঠিক থাকলে শনিবার রাত থেকেই ঝড়ের প্রভাব পড়বে উপকূলীয় এলাকায়। সেক্ষেত্রে রোববার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত নির্ধারিত এ পাবলিক পরীক্ষার ভাগ্য কী হবে, সে সিদ্ধান্ত নিতে হবে কর্তৃপক্ষকে।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান তপন কুমার সরকার গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, পরীক্ষা কেন্দ্রের মালামাল ভালোভাবে সংরক্ষণ করতে আপাতত কেন্দ্র সচিবদের নির্দেশনা দিয়েছি। আর ঘূর্ণিঝড়ের পরিস্থিতির ওপর পরীক্ষার বিষয়টি নির্ভর করছে। যদি দেখি পরিস্থিতি ভালো নয়, তাহলে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে জানিয়ে দেবো। পরিস্থিতি দেখে হয়তো স্থগিত করতে পারি।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছে সাগর বিক্ষুব্ধ থাকায় দেশের সমুদ্রবন্দরগুলোকে এরই মাঝে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদফতর।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমান বুধবার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারসহ উপকূলীয় এলাকায় যত আশ্রয় কেন্দ্র রয়েছে, তা প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক, শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে।
প্রস্তুতির কথা জানিয়েছেন কোস্ট গার্ডও। বৃহস্পতিবার এক বার্তায় দেশের উপকূলবর্তী এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে ঘূর্ণিঝড় মোখা আঘাত হানার সময় ও পরবর্তী সময়ে যেকোনো জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে বলে জানায় বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের হিসাব মতে, এ বছর মোট ২০ লাখ ৭২ হাজার ১৬৩ শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেবে। তাদের মধ্যে ১০ লাখ ২১ হাজার ১৯৭ জন ছাত্র ও ১০ লাখ ৫০ হাজার ৯৬৬ জন ছাত্রী। শিক্ষার্থীদের মধ্যে ১৬ লাখ ৪৯ হাজার ২৭৫ জন সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, ২ লাখ ৯৫ হাজার ১২১ জন মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড ও ১ লাখ ২৭ হাজার ৭৬৭ জন কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের।