ক্যাম্পাসে ফিরেছেন ফুলপরী, হল বদলের আবেদন
ক্যাম্পাস করেসপন্ডেন্ট
প্রকাশিত: ০২:২৪ পিএম, ৪ মার্চ ২০২৩ শনিবার
কঠোর নিরাপত্তায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ফিরেছেন ভুক্তভোগী ফুলপরী। তাকে পাবনা ও কুষ্টিয়া জেলা পুলিশের সহায়তায় ক্যাম্পাসে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
শনিবার (৪ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ এ তথ্য জানিয়েছেন।
প্রক্টর বলেন, ‘ফুলপরীর সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি। তার বিষয়ে পাবনা ও কুষ্টিয়ার এসপির সঙ্গে কথা বলেছি। তারা তাকে বাসা থেকে পাবনা পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছেন। পরে শিলাইদহ ঘাট থেকে সহকারী প্রক্টর শাহাবুব আলম, ইবি থানার পুলিশ ও প্রক্টরিয়াল বডির সহযোগিতায় তাকে ক্যাম্পাসে আনা হয়েছে।’
অভিযুক্তদের বহিষ্কারের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আজ দুপুর ১২টার দিকে শৃঙ্খলা কমিটির সভায় এটি নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে।’
জানা গেছে, ক্যাম্পাসে ফিরে নতুন আবাসিক হলে ওঠার জন্য আবেদন করার পাশাপাশি সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলবেন ভুক্তভোগী। এ ছাড়া তিনি দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের পরিবর্তে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে উঠতে চান বলে জানিয়েছেন।
ফুলপরী বলেন, ‘অভিযুক্তদের সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হলে পরে তারা আমার ক্ষতি করতে পারে। এ জন্য তাদের স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে কেউ এ ধরনের দুঃসাহস দেখাতে না পারে।’
ফুলপরীর বাবা বলেন, ‘তারা আমার মেয়েকে মেরে ফেলতে পারত। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করব, তারা যেন আমার মেয়েকে নিরাপত্তা ও সার্বিকভাবে সহযোগিতা করে। ফৌজদারি আদালতে এদের শাস্তি হওয়া উচিত। আমার মেয়ের মতো আর কাউকে যাতে নির্যাতনের শিকার না হতে হয়, সেজন্য তাদের স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করতে হবে।’
এদিকে আজ দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটির সভার আহ্বান করা হয়েছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন উচ্চ আদালতের রায়ের পর্যালোচনা, অভিযুক্তদের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত, ভুক্তভোগীর সার্বিক নিরাপত্তা ও হল প্রভোস্টের অব্যাহতির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হলের প্রাধ্যক্ষ মিয়া মো. রাশিদুজ্জামান বলেন, ‘ভুক্তভোগী বঙ্গমাতা হলে থাকার ইচ্ছা জানিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ থেকে আমরা এ সংক্রান্ত চিঠি পেয়েছি। তাকে আবাসিকতা দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।’
দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে গত ১১ ও ১২ ফেব্রুয়ারি দুই দফায় ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী ফুলপরীকে রাতভর র্যাগিং, শারীরিকভাবে নির্যাতন ও বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করার অভিযোগ ওঠে। এতে শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা, তাবাসসুম ইসলাম, ইশরাত জাহান মীম, হালিমা আক্তার উর্মি ও মুয়াবিয়া জাহানসহ কয়েকজন জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীর। পরে ভুক্তভোগীর লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে ১৫ ফেব্রুয়ারি একটি তদন্ত কমিটি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পরে ১৫ ফেব্রুয়ারি পৃথকভাবে দেশরত্ন শেখ হাসিনা হল ও শাখা ছাত্রলীগ তদন্ত কমিটি গঠন করে। এ ছাড়া হাইকোর্টের নির্দেশেও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন।