অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

ব্রয়লার মুরগি-ডিমের দাম আরও বেড়েছে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ০২:০৭ পিএম, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ শুক্রবার  

এক সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগি ও মুরগির ডিমের দাম আরও ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। আর এক মাসের হিসাবে ভোক্তা পর্যায়ে ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে কেজিতে ৭০ টাকা। সোনালি মুরগির দাম বেড়েছে ৯০ টাকা। ফার্মের মুরগির প্রতি হালি লাল ডিম বেড়েছে ৬ থেকে ৮ টাকা।

শীতকালীন সবজির দাম কিছুটা ওঠা-নামা করছে। এক মাসের ব্যবধানে শীতকালীন সবজির দাম পাইকারি বাজারে কেজিতে ৭-২০ টাকা কমলেও ভোক্তা পর্যায়ে কমেছে ৫-১০ টাকা।

গতকাল বৃহস্পতিবার সরেজমিনে তেজগাঁও, কারওয়ান বাজার, নিউ ইস্কাটন, ইস্কাটন গার্ডেন, শান্তিনগর, হাতিরপুল বাজার এলাকার পাইকারি, খুচরা ব্যবসায়ী, মুদি দোকানি ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য উঠে এসেছে।

তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী বহুমুখী সমবায় সমিতি, মহানগর হাঁস-মুরগি বাজারজাতকরণ সমবায় সমিতি লিমিটেড ও কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ীরা দাবি করেন, মুরগি ও মুরগির ডিমের দাম বৃদ্ধিতে পাইকারি ব্যবসায়ীদের হাত নেই। দেশের বড় ব্যবসায়ীরাই বাজার নিয়ন্ত্রণ করে। তাদের সারা দেশে প্রতিনিধি আছে। তারা বাজার পর্যবেক্ষণ করছে। চাহিদা বাড়লেই দাম বাড়িয়ে দেয়। চাহিদা কম থাকলে দাম কমিয়ে ডিম-মুরগি বিক্রি করে। তাদের নির্ধারিত দাম ক্ষুদ্র খামারিরা ডিলারের মাধ্যমে জেনে যায়।

খুচরা ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা জানিয়েছেন, চলতি বছরের জানুয়ারির মাঝামাঝিতে বাজারভেদে ১৫০-১৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া ব্রয়লার মুরগি ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি এসে বিক্রি হয় কেজিপ্রতি ২০০-২৪০ টাকায়। ২৬০ টাকার সোনালি মুরগি বিক্রি হয় ৩৫০ টাকায়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৫ জানুয়ারি পাইকারি ব্যবসায়ীরা প্রতি ১০০ মুরগির ডিম ৯১০ টাকায় খামারিদের থেকে সংগ্রহ করে খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে ৯৩০ টাকা বিক্রি করেন। এক মাসের ব্যবধানে সেটা গতকাল ১ হাজার ৫০ টাকায় কিনে ১ হাজার ৭০ টাকায় বিক্রি করেছেন। প্রতি ১০০ ডিমে পাইকারিতে দাম বেড়েছে ১৪০ টাকা। খুচরা ব্যবসায়ীরা প্রতি পিস ডিম ১০ টাকা ৭০ পয়সা দিয়ে কিনে ভোক্তার কাছে ১২ টাকা ৫০ পয়সায় বিক্রি করছে। অর্থাৎ ১ হালি ডিম ভোক্তার ৫০ টাকা দিয়ে কিনতে হয়েছে, যা এক মাস আগেও তারা ৪২ থেকে ৪৪ টাকায় কিনেছেন।

তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী আল আমিন ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী আল আমিন বলেন, ‘ডিমের দাম কমে গেলে আমাদেরও মাঝেমধ্যে লস (লোকসান) দিতে হয়। কিছু নির্দিষ্ট কাস্টমার আছে যাদের ডিম বাকিতে দিয়ে থাকি, তারা কিছু বেশি টাকায় ডিম কিনে নিয়ে যায়। বাকিতে ডিম নিয়ে তারাও ক্রেতাদের কাছে ডিম বেশি দরে বিক্রি করেন। যারা ভোক্তাদের কাছে ডিম বিক্রি করছেন তাদের যদি নিয়ন্ত্রণ করা যায়, তাহলে ডিমের দাম আরও কমে পেত ভোক্তারা।’

তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী বহুমুখী সমবায় সমিতির সাবেক সভাপতি আমান উল্লাহ বলেন, ‘রমজান মাসের আগে ডিমের দাম কমার সুযোগ নেই। রোজা শুরু হলে ডিমের চাহিদা কম থাকবে। তখন ডিমের দাম কমবে। রোজার ঈদ শেষ হলে আবারও ডিমের বাজার বাড়বে।’

মুরগি ব্যবসায়ী হেলাল মিয়া বলেন, ‘গত ১৫ দিনে সোনালি মুরগির দাম বেড়েছে ৭০-৮০ টাকা। দেশি মুরগির দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ১০০ টাকার বেশি। এখন তেজগাঁও বাজারে মুরগিও আসছে কম। আমাদের কাছে থেকে কিনে যারা বিক্রি করছে তারা কেজিপ্রতি ৫০-৬০ টাকা লাভে বিক্রি করছে।’

কারওয়ান বাজারে গতকাল মানভেদে প্রতি কেজি টমেটো বিক্রি হয়েছে ১৫-৪০, লম্বা বেগুন ২০-৪০, ফুলকপি ও বাঁধাকপি আকারে ছোট একটি ১০-১৫, বড় আকারের কপি ১৫-২৫, আলু প্রতি কেজি ২০-৩০, মিষ্টিকুমড়া একটি ৪০-৫০, লাউ আকারভেদে প্রতিটি ৪০-৬৫, প্রতি কেজি মুলা ২০-৩০, জাতভেদে শিম ২০-৩৫, কাঁচকলা প্রতি হালি ১৫-২০, শসা কেজি ৩০-৫০ টাকা। গরুর মাংস ৭০০, খাসির মাংস ৮০০-১০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

কারওয়ান বাজারে কথা হয় শেখ ফরিদ নামে এক ক্রেতার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বাজারে মুরগি, মুরগির ডিম ও মাছের দাম বাড়তি। শাক-সবজির দাম বিছুটা কম। দেড় কেজি গরু মাংস কিনেছি ৭০০ টাকা দরে। ১৫ দিন আগেও সেটা ২০ টাকা কম ছিল।’

আমির হোসেন নামে আরেক ক্রেতা বলেন, ‘নিউ ইস্কাটন বাজারে সোনালি মুরগি ৩৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এভাবে যদি মুরগির দামও বাড়তে থাকে, তাহলে মাংস কিনে খাওয়া খুবই কঠিন হয়ে যাবে।’