২০২৪ সালে ৮১ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয় চাই: বাণিজ্যমন্ত্রী
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
প্রকাশিত: ০৪:৩৯ পিএম, ৫ জানুয়ারি ২০২৩ বৃহস্পতিবার
২০২২ সালের ডিসেম্বরে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি রপ্তানি আয় এসেছে। সেই ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালে ৮১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের রপ্তানি আয়ের প্রত্যাশা করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
বৃহস্পতিবার (৫ জানুয়ারি) ‘অর্থসূচক ক্যাপিটাল মার্কেট এক্সপো ২০২৩’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এই আশার কথা জানান।
বড় এই সাফল্যের কথা জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের পোশাক খাত ঘুরে দাঁড়িয়েছে। ডিসেম্বর মাসে যে রফতানি আয় এসেছে, সেটা সর্বকালের রেকর্ড অতিক্রম করেছে।
এই সাহস নিয়ে এবার ৬৭ বিলিয়ন ডলারের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের কথা জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ২০২৪ সালে আমরা ৮১ বিলিয়ন ডলার চাই। উন্নত অর্থনীতির দেশে ৫০ শতাংশের বেশি টাকা পুঁজিবাজার থেকে নেওয়া হয়। আমাদের দেশে সেই অবস্থা নেই। দেশে ব্যাংক থেকে লোন নেওয়া হচ্ছে। যার জন্য বেশকিছু সমস্যাও হচ্ছে। যদি ৫০ শতাংশ অর্থও পুঁজিবাজার থেকে আসতো, তবে আমাদের দেশে ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নতি হতে বাধ্য।
গার্মেন্ট খাতে ধস নামার কথা স্মরণ করিয়ে তিনি বলেন, আমাদের গার্মেন্টস শিল্প মহাক্রান্তিকাল এসেছিল, যখন রানা প্লাজা ধসে যায়। বহু শ্রমিক নিহত হলেন। পৃথিবীর ক্রেতারা অস্থির হয়ে পড়েন। গার্মেন্টস শিল্পের মালিকরাও অস্থির হয়ে পড়েন, আমাদের কী জানি হয়! ক্রেতার যদি মুখ ফিরিয়ে নেন! কিন্তু একটা জিনিস লক্ষণীয়, আমরা সেই বিপদের পরেই ঘুরে দাঁড়িয়েছি। আমরা কম্পলাইনস করেছি। আজ পৃথিবীর সবথেকে বেশি গ্রিন ফ্যাক্টরি আমাদের।
রাশিয়া ইউক্রেন-যুদ্ধের ফলে সৃষ্ট বৈশ্বিক সংকটের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার পরিস্থিতি সামলে নিয়েছে। আমরা মোটামুটি ভালো অবস্থানে রয়েছি। দেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছে, তখন একটা গোষ্ঠী খুব চালাকির সঙ্গে গুজব ছড়াচ্ছে। তারা মিথ্যা বলছে, মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। এই গোষ্ঠী দেশের উন্নয়ন চায় না।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। এছাড়া অতিথি হিসেবে অন্যদের মধ্যে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান ইউনুসুর রহমান, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহীম, বাংলাদেশ পাবলিকলি লিস্টেড কোম্পানিজ অ্যাসোসিয়েশনের (বিএপিএলসি) প্রেসিডেন্ট আনিস উদ দৌলা, বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) প্রেসিডেন্ট মো. ছায়েদুর রহমান এবং ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ডিবিএ) প্রেসিডেন্ট রিচার্ড ডি রোজারিও প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এ দিন অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান ইউনুসুর রহমান বলেন, করোনাসহ অন্যান্য সংকট কেটে যাচ্ছে। সকল কিছু আগের মতোই স্বাভাবিক হচ্ছে। দেশের পুঁজিবাজারও সকল সংকট সমাধান করে সামনের দিকে এগিয়ে যাবে।
করোনার মধ্যে সঠিক ব্যবস্থাপনার কারণে আমাদের ক্ষতি অনেক কম হয়েছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় আমরা অনেক বেশি সমস্যার সমাধান করতে সক্ষম হয়েছি। সাপ্লাই চেইন ঠিক হয়েছে। কৃষি খাতেও উৎপাদন বাড়ছে। একই সঙ্গে বাড়ছে রফতানির পরিমাণ। এভাবে অন্যান্য খাতের মতো দেশের পুঁজিবাজারও এগিয়ে যাবে।
এছাড়া অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে অনলাইন নিউজ পোর্টাল অর্থসূচক এর সম্পাদক জিয়াউর রহমান বলেন, বিনিয়োগকারীদের সচেতন বাড়াতে আমরা এই এক্সপো শুরু করেছিলাম। ২০১০ সালের ধসের পর বাজারের প্রতি মানুষের নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়। তাদের সেই চিন্তাভাবনা দূর করতে এই আয়োজন করা হয়। বর্তমানে অনেকে গুজব ছড়ায়। এতে কান দেওয়া উচিৎ না। একটু ধাক্কা খেলেও বাংলাদেশ সব সংকট কাটিয়ে ভালো দিকে যাচ্ছে। তাই কোনো গুজবে কান দেওয়া উচিত না।