অকাল মৃত্যুর কারণ বায়ূদূষণ!
শেখ আনোয়ার
প্রকাশিত: ০১:৫৬ পিএম, ২ ডিসেম্বর ২০২২ শুক্রবার আপডেট: ০১:৫৭ পিএম, ২ ডিসেম্বর ২০২২ শুক্রবার
বায়ূ দূষণের প্রভাবে জটিল সব রোগ দিন দিন দেশে দেশে সংহারি মূর্তি ধারণ করছে। মেধা কমে যাচ্ছে। সর্দি-কাশি-শ্বাসকষ্ট থেকে শুরু করে অ্যালার্জি, এমনকি হৃদরোগেরও অন্যতম কারণ হচ্ছে এই বায়ূ দূষণ। জীবন কেড়ে নিচ্ছে অকালে। একদল গবেষকের গবেষণায় উঠে এসেছে এসব ভয়ংকর তথ্য- ‘দুষিত বায়ূর কারণে অকাল মৃত্যু বেড়ে যাচ্ছে। এমনকি বায়ু দূষণের মাত্রা কমে যাওয়া সত্তে¡ও অকাল মৃত্যুর ঝুঁকি বৃদ্ধির আলামত পাওয়া যাচ্ছে এবং সেটা উন্নয়নশীল ও শিল্পোন্নত দেশেই সবচেয়ে বেশি।’
লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজের একদল গবেষক বিগত ষোল বছরকে চারটি পর্যায়ে ভাগ করেন। তারা বাতাসে বিদ্যমান কালো ধোঁয়া ও সালফার-ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ পরিমাপ করেন। তাতে লক্ষ্য করেন, ষোল বছরে বাতাসে কালো ধোঁয়ার মাত্রা পাঁচগুণ কমেছে। পক্ষান্তরে একই সময়ের ব্যবধানে সালফার-ডাই-অক্সাইডের মাত্রা চারগুণ কম পাওয়া যায়। একই সময়ের ব্যবধানে তারা যুক্তরাজ্যের পাঁচ হাজার লোকের মৃত্যু নিয়েও গবেষণা করেন। ব্যাপক বিশ্লেষণ শেষে তাদের একটি নিবন্ধ জার্মানির থোরাক্স নামক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। নিবন্ধে উলে¬খ করা হয়েছে, বায়ু দূষণের মাত্রা কমে যাওয়া সত্তে¡ও এর প্রভাবে অকাল মৃত্যুর হার রয়েছে আগের মতোই। ক্ষেত্রবিশেষে এই হার আরও বেশি লক্ষ্য করা যায়। তাদের ভাষায়, বাতাসে কালো ধোঁয়া নির্গমনের হার প্রথমদিকে উনিশ ভাগ চিহ্নিত করা হলেও শেষে এর মাত্রা ছিলো দশ ভাগ। পক্ষান্তরে একই সময়ের ব্যবধানে সালফার-ডাই-অক্সাইডের হার বিশ থেকে দশ ভাগে নেমে এলেও বায়ু দূষণজনিত কারণে শ্বাসতন্ত্রের রোগে আক্রান্ত হয়ে অকাল মৃত্যুর হার বেড়েছে। গবেষক দলের প্রধান আরও বলেন, ‘কালো ধোঁয়া ও সালফার-ডাই-অক্সাইডের মাত্রা কমে যাওয়া সত্তে¡ও জনস্বাস্থ্য ঝুঁকি বৃদ্ধি পেয়েছে।’ এর কারণ অস্পষ্ট। তবে হতে পারে বায়ু দূষণের ধারা পরিবর্তন হয়ে বর্তমানে তা আরও বিষাক্ত হয়েছে। ব্রিটিশ থোরাসিক সোসাইটির বিশেষজ্ঞ ড. রিনার্ড রাসেল বলেন, গবেষণা রিপোর্টের বিষয়টি খুবই আশ্চর্যজনক। এর নানাবিধ ব্যাখ্যা দেওয়া যায়। বলা চলে, বায়ূ-দূষণের ধারা পরিবর্তন হয়েছে। যাতে কালো-ধোঁয়া ও সালফার-ডাই-অক্সাইডের মাত্রা কম হওয়া সত্তে¡ও বিষাক্তের মাত্রা বেড়েছে। হতে পারে গত চল্লিশ বছরের ব্যবধানে লোকজন আগের তুলনায় বেশিমাত্রায় সংবেদনশীল হয়ে পড়েছে। তবে এ ব্যাপারে আরো নিবিড় গবেষণা হওয়া দরকার।
বায়ূ দূষণের ক্ষতিকর দিক নিয়ে আলোচনা করলে শারীরিক ক্ষতির কথাই অনেকে তুলে ধরেন। কিন্তু আপনি কি জানেন? দূষিত বায়ুর প্রভাব পড়ে আপনার মস্তিষ্কেও। কমে যায় জ্ঞানার্জনের ক্ষমতা? শুধু শারীরিক নয়, নানান মানসিক রোগও দেখা দিচ্ছে বায়ূ দূষণের প্রভাবে। স¤প্রতি চীনের একদল বিজ্ঞানীর গবেষণায় উঠে এসেছে সেই তথ্য। চীনের ফ্যামিলি প্যানেল স্টাডিজের অধীনে গোটা দেশের প্রায় বিশ হাজার মানুষের উপর এই সমীক্ষা চালানো হয়। এর মধ্যে ছিল বিভিন্ন ভাষা এবং গাণিতিক সংক্রান্ত প্রশ্ন। যে যে অঞ্চলে নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইড এবং সালফার ডাই অক্সাইডের পরিমাণ বেশি, মূলত সেখানেই এই পরীক্ষাগুলো করা হয়। গবেষণার পর রিপোর্টে বলা হয়, ‘শহরের দূষিত বায়ুতে বসবাসকারীদের জ্ঞানার্জনের ক্ষমতা অনেকাংশে কমে যাচ্ছে।’ গবেষণার সঙ্গে যুক্ত অধ্যাপক জি চেন বলেন, বিশ্বের পঁচানব্বই শতাংশ মান্ষু দূষিত বায়ূময় পরিবেশে বসবাস করছেন। এতে একজন মানুষ এক বছরে যতোটা জ্ঞানার্জন করতে পারেন, সেই পুরো ক্ষমতাটাই হারিয়ে ফেলছেন। তার মতে, তরুণদের তুলনায় বয়স্কদের ক্ষেত্রেই ক্ষতিটা বেশি হচ্ছে। বিশেষ করে চৌষট্রি বছরের বেশি যারা, সেসব পুরুষদের ক্ষেত্রে শিক্ষা বা জ্ঞানের পরিমাণ খুবই কমে যাচ্ছে। গবেষকরা বলেন, তরুণদের তুলনায় বয়স্করা সংসারের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত অনেক বেশি পরিমাণে নিয়ে থাকেন। তাই সেক্ষেত্রে ক্ষতিও বেশি হচ্ছে জাতির।
এদিকে ‘কারেন্ট সায়েন্স’ পত্রিকায় প্রকাশিত এক গবেষণাপত্র বলছে, বায়ূ দূষণের কারণে অন্য অসুখ-বিসুখের পাশাপাশি বাড়ছে অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিস নামক রোগের গতি। যার অর্থ, রক্তবাহী ধমনীতে চর্বি জমে রক্ত চলাচল কমে যাওয়া। বিশেষজ্ঞের মতে, ‘স্বাভাবিক নিয়মে বয়স বাড়লে, ওজন বেশি হলে এবং ভুল খাদ্যাভ্যাসের ফলে অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিস হয় ঠিকই। তবে বায়ূ দূষণ এই রোগের গতি আরও বাড়িয়ে দেয়। ফলে হৃদরোগ ও ব্রেইন স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে।’ বিশ্বব্যাপী সমীক্ষায় প্রকাশ, প্রতি এক লাখ মানুষের মধ্যে দু’হাজার সাত’শ পঞ্চাশ জন মারা যায় বায়ূ দূষণজনিত নানান শারীরিক সমস্যায়। বিজ্ঞানীরা প্রমাণ করেছেন- বাতাস দূষণ মানুষ ও পরিবেশের অন্য প্রাণীদের উপর কতটা ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে! গাড়ি ও কারখানার ধোঁয়ার পাশাপাশি বাড়িতে রান্নার কাজে ব্যবহৃত লাকড়ির চুলা বা কেরোসিন স্টোভের ধোঁয়াও আমাদের হৃদপিন্ড, ফুসফুস-সহ সামগ্রিক শরীরের পক্ষে মারাত্মক ক্ষতিকর। এতে ইস্কিমিক হার্ট ডিজিজের ঝুঁকি বাড়ে প্রায় পনের শতাংশ। জার্নাল অব আমেরিকান কলেজ অব কার্ডিয়োলজি’তে প্রকাশিত গবেষণাপত্রে আরও বলা হয়, এক নাগাড়ে দূষিত বায়ূতে বসবাস করতে থাকলে কয়েকদিনের মধ্যেই এক’শ জনের মধ্যে দশ জনের হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
বাতাসে ভাসমান কণা বা পার্টিকুলেট ম্যাটার সংক্ষেপে বলে পিএম। গবেষকরা লক্ষ্য করেন, এই সূ² ভাসমান কণা শারীরিক সমস্যার অন্যতম কারণ। বিশেষজ্ঞদের মতে, ‘গাড়ি ও কলকারখানার ধোঁয়ার পাশাপাশি জ্বালানির ধোঁয়াতেও থাকে এই সূ² ভাসমান কণা। এগুলোর মধ্যে অনেক ভাসমান কণা রয়েছে যেগুলো অত্যন্ত ছোট্ট (২.৫ মাইক্রন)। বিপদ ডেকে আনে এরাই। সূক্ষ¥ বস্তুকণা হলো বাতাসে ভেসে থাকা সব কঠিন ও তরল কণার সমষ্টি, যার অনেকই স্বাস্থ্যের বিপজ্জনক। এ জটিল মিশ্রণে জৈব ও অজৈব উভয় কণা অন্তর্ভুক্ত থাকে। যেমন-ধুলাবালু, পোলেন, ধোঁয়া থেকে সৃষ্ট কালো গুঁড়া, ধোঁয়া ও তরল ড্রপলেট ইত্যাদি। নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসের সময় এই ভাসমান কণাগুলো শ্বাসনালী দিয়ে সরাসরি শরীরে প্রবেশ করে। এমন দূষিত বাতাসের মধ্যে দীর্ঘদিন থাকলে হৃদরোগের ঝুঁকি থাকে। এদের আচমকা মৃত্যুর আশঙ্কা অনেক বেশি।’ গবেষকরা বলেন, পিএম ছাড়াও দূষিত বাতাসে থাকে নাইট্রোজেন, সালফার ও কার্বন মনোক্সাইড। এসব রাসায়নিক একই সঙ্গে ধমনীর ভিতরে লাইনিং-এর কার্যকারিতাকে নষ্ট করে। এর ফলে হৃদপিন্ড ও মস্তিষ্কের ধমনীতে কোলেস্টেরলের প্রলেপ জমে। ফলে প্রাথমিক ভাবে শ্বাসকষ্ট-সহ নানান উপসর্গ দেখা দেয়। পরবর্তীকালে হৃদরোগ এবং ব্রেইন স্ট্রোকের ঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে যায়। বাতাসের ভাসমান কণা হৃদরোগীদের ‘কার্ডিও রেসপিরেটরি ফেইলিওর’-এর ঝুঁকিও বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়।
এতোদিন প্রতিবেশী দেশ ভারতের দিল্লির নাম ছিল বায়ুদূষণের শীর্ষে। সেই দিল্লির চেয়ে দ্বিগুণের বেশি দূষিত এখন আমাদের এই ঢাকা শহর। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা সংস্থা ‘হেলথ ইফেক্টস ইনস্টিটিউট’ এবং ‘ইনস্টিটিউট ফর হেলথ মেট্রিক্স অ্যান্ড ইভালুয়েশন‘ স¤প্রতি বায়ুর মানের দিক থেকে এশিয়াকে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত অঞ্চল বলে ঘোষণা দিয়ে জানায়, ‘বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানে মানুষ এমন এক পরিবেশে বাস করছে, যেখানকার বাতাসের মান বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার এয়ার কোয়ালিটি গাইড লাইনে থাকা পিএম ২.৫ মাইক্রন স্তরের চেয়ে অনেক অনেক বেশি। জাতিসংঘের ডবিøউএইচও’র দেওয়া পরিসংখ্যান তথ্যমতে, বিশ্বব্যাপী প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৯ জন দূষিত বাতাসে শ্বাস নেন এবং বায়ু দূষণের কারণে প্রতি বছর প্রধানত নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশে আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের অকাল মৃত্যু ঘটে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, শুধু বাংলাদেশেই রান্নার ধোঁয়ায় ২০১৭ সালের এক বছরেই মারা গেছেন ১৮ হাজার মানুষ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডবিøউএইচও) বায়ুমান নির্দেশিকা অনুসারে, প্রতি ঘনমিটারে বার্ষিক পিএম ২.৫ উপস্থিতি ৫ মাইক্রোগ্রাম আর নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইডের উপস্থিতি ১০ মাইক্রোগ্রাম সহনীয় মাত্রা। দেখা যায়, দূষণকবলিত বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে এই মাত্রা প্রায় দ্বিগুণ। প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বের সবচেয়ে বড় বড় শহর ও শহরতলী এলাকাগুলোয় বায়ুমান সবচেয়ে খারাপ। এতে সাত হাজারেরও বেশি শহরের বায়ুদূষণ ও স্বাস্থ্যের ওপর এর প্রভাব পর্যালোচনা করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বে সবচেয়ে দূষিত বায়ুর শহরের তালিকায় রাজধানী ঢাকার অবস্থান পঞ্চম। অন্য এক বৈশ্বিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, দূষিত বায়ুর কারণে ২০১৯ সালে রাজধানীতে ২২ হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক দুটো সংগঠন-হেলথ ইফেক্টস ইনস্টিটিউট ও ইনস্টিটিউট ফর হেলথ মেট্রিকস অ্যান্ড ইভালুয়েশনের ‘এয়ার কোয়ালিটি অ্যান্ড হেলথ ইন সিটিস’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকার প্রতি ঘনমিটারের বাতাসে বার্ষিক গড় সূক্ষ¥ বস্তুকণার (পিএম২.৫) উপস্থিতি ৭১ দশমিক ৪ মাইক্রোগ্রাম আর নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইডের (এনও২) উপস্থিতি ২৩ দশমিক ৬ মাইক্রোগ্রাম।
এছাড়া ‘স্টেট অব গ্লোবাল এয়ারের’ মতে, ‘বাংলাদেশের প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষ বায়ুদূষণের মধ্যে বাস করছে।’ ঢাকাসহ বড় বা মাঝারি শহরের বাতাসে ভাসমাণ কণা বেশি রয়েছে। জীবাশ্ম জ্বালানি ও কাঠ পোড়ানো, ফিটনেসবিহীন গাড়ি থেকে নির্গত ধোঁয়া, ইটভাটা ও ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কারণে বাংলাদেশের শহরগুলোর খারাপ বায়ুমান প্রায়শই বৈশ্বিক শিরোনাম হচ্ছে। নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইডের মতো বায়ুদূষণ প্রধানত পুরোনো যানবাহন, বিদ্যুৎকেন্দ্র, শিল্পপ্রতিষ্ঠান এবং আবাসিকের রান্না ও কিছু গরম করার জন্য প্রায়শই পোড়ানো জ্বালানি থেকে সৃষ্টি হয়। যেহেতু শহরের বাসিন্দারা প্রচুর পুরনো যানবাহন চলে। অনেকে এমন ব্যস্ত সড়কের কাছাকাছি বসবাস করে থাকেন, তাই তারা প্রায়শই গ্রামীণ এলাকার বাসিন্দাদের তুলনায় অধিকহারে নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইডের দূষণের শিকার হচ্ছেন। এর ফলে ছোটদের শ্বাসনালীর সমস্যার ঝুঁকি বাড়ছে। বিশেষত, যারা বাড়ির একতলায় থাকেন, তারা বেশি দূষণের শিকার হচ্ছেন। বয়স্কদের ঝুঁকি আরও বেশি। বেশি বয়সে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমে যাওয়ায় বার বার সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে। বাড়ে হৃদরোগ এবং ব্রেইন স্ট্রোকের আশঙ্কাও। প্রায়ই দেখা যায়, রেগে গিয়ে চিৎকার করতে করতে কেউ হৃদরোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। কিংবা মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়ে অসুস্থ্য হয়ে পড়ছেন। এমন ঘটনা বাস্তবে অনেক ঘটতে পারে। যাদের বাড়ির আশেপাশের বাতাস দূষিত, তাদের কোনও কারণ ছাড়াই রক্তচাপ বেড়ে গিয়ে স্ট্রোকের ঝুঁকি তৈরি হয় বলে গবেষকরা ব্যাখ্যা করেন।
একথা ঠিক, নগর সভ্যতার ব্যাপ্তি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বায়ূ দূষণে নানান জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে। শহরে যানবাহন বেড়েছে। পাল্লা দিয়ে ধোঁয়াও বেড়েছে। সবচেয়ে উদ্বেগজনক দিক হলো বর্তমান বৈশি^ক জ¦ালানি সংকটকালে দাম বৃদ্ধির ফলে জ¦ালানি তেলে ব্যাপক ভেজাল দেওয়া হচ্ছে। দৃশ্যত: ভেজাল জ¦ালানিতে চলছে ঢাকা শহরের যানবাহনগুলো। সড়কে খেয়াল করলে দেখা যায়, পুরাতন আর নতুন গাড়ি বলে কথা নেই। সবগাড়িই আগের তুলনায় ব্যাপক আকারে সৃষ্টি করছে কালো ধোঁয়া। বৃষ্টি, বর্ষাকালের তুলনায় শুষ্ক মৌসুমে দূষণের মাত্রা স্বাভাবিক ভাবেই বেড়ে যায়। তাই আসন্ন শীতে ঢাকার এই বায়ূ দূষণের মাত্রা আরও বাড়তে পারে। দিনের পর দিন তবে কি বেড়েই চলবে ঢাকার এই বায়ূ দূষণ মাত্রার পরিমাণ? বায়ূদূষণ কমাতে সরকারের দরকার বায়ূ দূষণ রোধে আরও বাস্তব ও আন্তরিক উদ্যোগ জোরদার করা।
শেখ আনোয়ার: বিজ্ঞান লেখক ও গবেষক। এম.ফিল স্কলার, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।