টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ
আশা বাঁচিয়ে রাখতে দুরন্ত জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ
স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১:৩৪ পিএম, ২৯ অক্টোবর ২০২২ শনিবার
আগের ম্যাচের দুঃস্মৃতি ভুলে নতুনভাবে আত্মবিশ্বাসী হয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর অঙ্গীকার নিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার ঐতিহাসিক ব্রিজবেনে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে আগামীকাল দুরন্ত জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। সেমির আশা বাঁচিয়ে রাখতে এ ম্যাচে জয় পেতে মরিয়া বাংলাদেশ। বাংলাদেশ সময় সকাল ৯টায় শুরু হওয়া ম্যাচটি সরসারি সম্প্রচার করবে গাজী টিভি ও টি-স্পোর্টস চ্যানেল।
সুপার টুয়েলভে নিজেদের প্রথম ম্যাচে নেদারল্যান্ডসের কাছে ৯ রানে জয়ী হওয়া বাংলাদেশ পরের ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকা কাছে ১০৪ রানে রেকর্ড ব্যবধানে হারের লজ্জা পায় । আগামীকাল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হারলে টাইগারদের সেমিফাইনালে খেলার আশা কঠিন করে দিতে পারে।
বড় হারের ধাক্কা নিয়ে বাংলাদেশ তৃতীয় ম্যাচ খেলতে নামলেও আত্মবিশ্বাসের সাথে মাঠে নামবে জিম্বাবুয়ে। টুর্নামেন্টের ফেবারিট পাকিস্তানের বিপক্ষে আগের ম্যাচেই ১ রানের ঐতিহাসিক জয় পেয়েছে জিম্বাবুয়ে।
ক্রিকেটের কোন ফরম্যাটে বাংলাদেশের সাথে জিম্বাবুয়ের তুলনা হয় না বলেই কয়েক মাস আগেও ধারনা করা হচ্ছিলো। কিন্তু এই ফরম্যাটে হঠাৎ করেই পূর্ব আফ্রিকান দেশ জায়ান্ট কিলার হিসেবে আবির্ভূত হওয়ায় পরিস্থিতির পাল্টে গেছে। বছরের পর বছর সংগ্রাম-বিভিন্ন সমস্যা এবং দুর্বল ক্রিকেট সংস্কৃতির পরও পরিকল্পনার সাথে ঘরোয়া ক্রিকেটে অনেক শ্রম দিয়েছে জিম্বাবুয়ে। পরিশ্রমের ফল পাচ্ছে তারা। মাত্র তিন মাস আগে ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে বাংলাদেশকে হারানোর পর থেকে তাদের ক্রিকেট যেন নতুন উদ্যেমে শুরু হয়েছে।
এরপরও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম রাউন্ডে খেলতে হয়েছে জিম্বাবুয়েকে। গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে মূল পর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করা দলটি মূল পর্বে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে অল্পের জন্য হারের লজ্জা থেকে রক্ষা পায় জিম্বাবুয়ে। বৃষ্টির কারণে ম্যাচটি পরিত্যক্ত হয়ে যায়। তবে পরের ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে দলটির পারফরমেন্স বাংলাদেশের জন্য সতর্কবার্তা দিয়ে রেখেছে।
তবে জিম্বাবুয়ের দুর্দান্ত জয় ও আগের ম্যাচে বাংলাদেশের হারে চিন্তিত নন দলের টেকনিক্যাল পরামর্শদাতা শ্রীধরন শ্রীরাম। তিনি জানান, দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হারের পরও মানসিকভাবে শক্ত আছেন তারা।
শ্রীরাম আজ বলেন, ‘আমি মনে করি দলের মনোবল ভাল অবস্থায় আছে। আমরা বুঝতে পেরেছিলাম, ঐদিন দক্ষিণ আফ্রিকা সত্যিই ভালো খেলেছে। তারা খুব শক্তিশালী ছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘তিন নম্বরে নেমে দলকে এমন শক্ত অবস্থানে নিয়ে গেছেন রিলি রুশো। কুইন্টন ডি কক এবং রুশোর কাছ থেকে দারুন ইনিংস দেখেছি আমরা। এখান থেকে আমাদের এখান থেকে শিক্ষা নিতে হবে।’
শ্রীরাম আরও জানান, তার দল ভাল অবস্থায় আছে এবং আগামীকাল জিম্বাবুয়ের সাথে মুখোমুখি লড়তে প্রস্তুত।
তিনি বলেন, ‘২০০৭ সালেল ১৫ বছর পর সুপার টুয়েলভে আমরা প্রথম ম্যাচ জিতেছি-আমি মনে করি এটি চমৎকার কিছু । আমার মনে করি দলে ছেলেরাই এটা এনে দিয়েছে । দলের জন্য ছেলেদের প্রচেষ্টা এবং পুরো কৃতিত্ব তাদেরই ছিলো।’
শ্রীরাম আরো বলেন, ‘আমরা এক সাথে অনেক নয় একটি ম্যাচ নিয়েই ভাবতে চাই। বেশি ভাবতে চাই না। আমাদের পরবর্তী চ্যালেঞ্জ জিম্বাবুয়ে। আমাদের অবশ্যই একটি পরিকল্পনা আছে। আমরা জিম্বাবুয়েকে সম্মান করছি। পাকিস্তানের বিপক্ষে অসাধারণ পারফরমেন্স ছিলো তাদের। আমরা ঐ ম্যাচর প্রতিটি বল দেখেছি এবং পাকিস্তানের বিপক্ষে তারা যেভাবে খেলেছে-সেটি ছিলো অবিশ্বাস্য।’
এই ফরম্যাটে এখন পর্যন্ত ১৯ বার মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে। জয়ের পাল্লা ভারী টাইগারদের। ১২টিতে জিতেছে বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়ের জয় ৭টিতে।
সব মিলিয়ে ১৪১টি টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। সেখানে ৪৮টি ম্যাচে জিতেছে, ৯০টিতে হেরেছে তারা। বাকি তিনটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়।
বাংলাদেশ দল: সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), নাজমুল হোসেন শান্ত, সৌম্য সরকার, লিটন কুমার দাস, আফিফ হোসেন, ইয়াসির আলী চৌধুরি, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, নুরুল হাসান সোহান, মেহেদি হাসান মিরাজ, তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান, হাসান মাহমুদ, শরিফুল ইসলাম, নাসুম আহমেদ ও এবাদত হোসেন।
জিম্বাবুয়ে দল : ক্রেইগ আরভিন (অধিনায়ক), রায়ান বার্ল, রেগিস চাকাভা, টেন্ডাই চাতারা, ব্রাডলি ইভান্স, লুক জঙ্গি, ক্লাইভ মাডান্ডে, ওয়েসলি মাধেভেরে, ওয়েলিংটন মাসাকাদাজা, টনি মুনিয়োঙ্গা, ব্লেসিং মুজারাবানি, রিচার্ড এনগারাভা, সিকান্দার রাজা, মিল্টন শুম্বা ও শন উইলিয়ামস।