ফেসবুক লাইভে ৪ মাঝিকে খুনের রোমহর্ষক বর্ণনা দিলেন রোহিঙ্গা যুবক
ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, কক্সবাজার
প্রকাশিত: ০৩:২৫ পিএম, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২২ বুধবার
কক্সবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সম্প্রতি হত্যার ঘটনা বৃদ্ধি পাওয়ায় বেশ উত্তেজনা চলছে। ঠিক এই সময়ে উখিয়ার ক্যাম্পে এক মাসে চার মাঝিকে হত্যার বিষয়ে ফেসবুক লাইভে এসে রোমহর্ষক বর্ণনা দিলো মোহাম্মদ হাশিম (২০) নামের এক যুবক। নিজেকে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ‘ইসলামি মাহাজ’ নামে একটি সংগঠনের সদস্য বলে দাবি করেছেন তিনি। এ ছাড়া উখিয়ার ১৮নং ক্যাম্পে ৯৩ ব্লকের আব্দুল জাব্বারের পুত্র।
তার ফেসবুক লাইভের ভিডিওতে দেখা যায়, একটি অস্ত্র নিয়ে চার মাঝির মধ্যে কাকে কীভাবে হত্যা করেছিল, তার বর্ণনা দিচ্ছেন।
মোহাম্মদ হাশিম লাইভে বলেন, তার মতো ২৫ জন যুবককে অস্ত্র দিয়েছে ইসলামি সংগঠন মাহাজ। যাদের কাজ ছিল হত্যার মিশন বাস্তবায়ন। যার জন্য আমাদের দেওয়া হতো মোটা অঙ্কের টাকা।
আমাদের মূল কাজ ছিল যারা প্রত্যাবাসন নিয়ে কাজ করে তাদের হত্যা করা। সম্প্রতি সময় ৫-৬ দিনের মধ্যে আমরা ৩ মাঝিসহ এই সেচ্ছাসেবককে হত্যা করেছি।
লাইভে খুনের শিকার মাঝিদের নামও বলেছেন এই যুবক। তিনি বলেছেন, ১৮নং ক্যাম্পের হেড মাঝি জাফর, ৭নং ক্যাম্পের ইসমাইল, কুতুপালং এক্সটেনশন ক্যাম্প-৪ এইচ ব্লকের এরশাদ ও হেড মাঝি আজিমুল্লাহকে তারা হত্যা করেছেন।
একইভাবে লাইভে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী গ্রুপ ইসলামি মাহাজ সংগঠনের চার মুখপাত্রের নামও বলেন মোহাম্মদ হাশিম। তারা হলেন, জিম্মাদার সাহাব উদ্দিন, রহমত উল্লাহ, হেড মাঝি ভূঁইয়া, মৌলভী রফিক। এই চারজন এই সংগঠনের নেতৃত্ব দিতেন বলে জানান এই রোহিঙ্গা যুবক।
লাইভে মোহাম্মদ হাশিম আরও বলেন, তাদের সামনে আরও বড় মিশন ছিল। কিন্তু সে নিজের ভুল বুঝতে পেরেছে। তাই এই খারাপ জগৎ ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে চান।
এদিকে মোহাম্মদ হাশিমের সেই ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। এই ভিডিও প্রচারের পর থেকে ক্যাম্পে মাঝিসহ নেতৃস্থানীয় রোহিঙ্গাদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
গোয়েন্দা সংস্থার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, এই রোহিঙ্গা সংগঠন ইসলামি মাহাজ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সব রকমের অপরাধ করে থাকে। ক্যাম্পে বড় ধরনের নাশকতা করে এই সংগঠনের সদস্যরা। তাদের আটকের তৎপরতার কথা জানান এই কর্মকর্তা ।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নিরাপত্তায় নিয়োজিত ৮ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ বলেন, ভিডিওটা আমরা দেখেছি। এই যুবক যাদের নাম উল্লেখ করেছে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা ক্যাম্পে নিরাপত্তায় সবসময় প্রস্তুত।