বুধবার দুপুরে দেশে ফিরছে ইতিহাসগড়া মেয়েরা
স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১:৫৫ এএম, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২২ মঙ্গলবার
ষষ্ঠ নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জিতে বাংলাদেশকে গর্বিত করেছেন সাবিনারা। সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) নেপালকে ৩-১ গোলে হারিয়ে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ ফুটবল দল। দেশের এই গৌরব বয়ে আনা সাবিনাদের বিমানবন্দরে বড় অভ্যর্থনাই দেয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন।
বাফুফের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, আগামী ২১ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসে নেপাল থেকে ঢাকায় অবতরণ করবেন সাবিনারা। এমন অর্জনে খুশিতে আত্মহারা দেশের ফুটবল সমর্থকরা। এদিকে দেশকে দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে ট্রফি জেতানোয় সাবিনাদের বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফ) ভবন পর্যন্ত ছাদখোলা বাসে সংবর্ধনা দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল।
নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে নতুন ইতিহাস গড়ল বাংলাদেশ। নেপালকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো সাফ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে লাল সবুজের প্রতিনিধিরা। এর আগে ২০১৬ সালে শিরোপার খুব কাছে গিয়েও স্বপ্নভঙ্গ হয় সাবিনাদের। তবে এবার আর কোনো আক্ষেপ নয়, দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট জিতে নিয়েছে সাবিনা-সানজিদা ও মারিয়ারা।
কাঠমান্ডুর দশরথ রঙ্গশালা স্টেডিয়ামে সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ম্যাচটি জিতেছে ৩-১ গোলের ব্যবধানে। দলের হয়ে জোড়া গোল করেন কৃষ্ণা রানি সরকার। একটি গোল করেন শামসুন্নাহার জুনিয়র। প্রতিপক্ষের হয়ে একটি গোল শোধ করেন অনিতা বাসনেত।
এদিকে দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে বিজয় ছিনিয়ে আনায় সাবিনাদের মাঠে নেমে অভিনন্দন জানিয়েছেন বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। অভিনন্দন জানিয়েছেন জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। অভিনন্দন জানিয়েছেন মাশরাফী-তামিম ও মুশফিকরাও।
ফাইনালের লড়াইয়ে মাঠে নামার আগে নিজের ফেসবুক পেজে এক আবেগঘন স্ট্যাটাস দেন বাংলাদেশ নারী দলের ফুটবলার সানজিদা আক্তার। তিনি লেখেন, যারা আমাদের এই স্বপ্নকে আলিঙ্গন করতে উৎসুক হয়ে আছেন, সেই সকল স্বপ্নসারথির জন্য এটি আমরা জিততে চাই। নিরঙ্কুশ সমর্থনের প্রতিদান আমরা দিতে চাই। ছাদখোলা চ্যাম্পিয়ন বাসে ট্রফি নিয়ে না দাঁড়ালেও চলবে, সমাজের টিপ্পনীকে একপাশে রেখে যে মানুষগুলো আমাদের সবুজ ঘাস ছোঁয়াতে সাহায্য করেছে, তাদের জন্য এটি জিততে চাই।’
দেশের জন্য গৌরব বয়ে আনা সানজিদাদের এমন আক্ষেপ অপূর্ণ রাখতে চান না বাংলাদেশ যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল। সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সাবিনাদের অভিনন্দন জানিয়ে তিনি ছাদখোলা বাসে তাদের সংবর্ধনা দেয়ার কথা জানান।
তিনি বলেন, আপনারা দেখেছেন যে সানজিদা ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, তারা বিজয়ী হলে হয়তো ছাদখোলা কোনো বাসে তাদের ট্রফি নিয়ে আসা হবে না। তার সে আক্ষেপ দেখে আমাদের অন্তরে ব্যথা লেগেছে। আমাদের দেশে যদিও ছাদখোলা কোনো বাস নেই ঢাকায়। তারপরও আমরা তাদের জন্য একটা ব্যবস্থা করেছি। তাদেরকে ছাদখোলা বাসে বিমানবন্দর থেকেই সংবর্ধনা আমরা দেব। হযরত শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে বাফুফে ভবন পর্যন্ত তাদের আমরা নিয়ে যাব। তাদের মনের আশা পূরণ করব।
ইউরোপের ফুটবলে প্রায় দেখা যায় কোনো দেশ বা দল চ্যাম্পিয়ন হলে ট্রফি নিয়ে ছাদখোলা বাসে ফুটবলারদের উদযাপন করতে। সাম্প্রতিক সময়ে এশিয়া কাপ জয়ের পর শ্রীলঙ্কাকে এমনভাবে সমর্থকদের সঙ্গে বিজয় উল্লাস করতে দেখা গেছে।
প্রসঙ্গত, ২৩ বছর আগে আলফাজ-জুয়েলরা সাফ গেমসে চ্যাম্পিয়ন হয়ে দেশে ফিরেছিলেন। এরপর বাংলাদেশ সিনিয়র কোনো ফুটবল দল আর বিদেশের মাটি থেকে ট্রফি নিয়ে দেশে ফিরতে পারেননি। ২০০৩ সালে সাফ ফুটবলে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ঢাকাতেই।