প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে পরীক্ষার্থীসহ আটক তিন
সোহাগ হায়দার, পঞ্চগড়
প্রকাশিত: ০২:৪৯ পিএম, ৬ জুলাই ২০২২ বুধবার আপডেট: ০২:৪৯ পিএম, ৬ জুলাই ২০২২ বুধবার
পঞ্চগড়ে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে দুই পরীক্ষার্থীসহ তিন জনকে আটক করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (৫ জুলাই) জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে মৌখিক পরীক্ষা দেওয়ার পর একই দিন রাতে সেখান থেকে তাদের আটক করে পুলিশ। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে মামলার প্রক্রিয়া চলছে।
আটককৃতরা হলেন, পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলা সদরের বড়দাপ এলাকার কলিম উদ্দীনের ছেলে মোকসেদুর রহমান (২৮), একই উপজেলার ছোটদাপ এলাকার আব্দুল জলিলের ছেলে আহসান হাবিব (২৮) এবং ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গি এলাকার বাবর আলীর ছেলে বেলাল উদ্দীন (৩৮)। এদের মধ্যে মকসেদুর রহমান ও আহসান হাবিব শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার্থী এবং বেলাল উদ্দীন নিয়োগ পরীক্ষার জালিয়াতি চক্রের অন্যতম হোতা বলে জানা গেছে।
পুলিশ ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ বোর্ড সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার সকাল থেকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার জন্য মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হয়। এর মধ্যে নিয়োগ পরীক্ষার্থী মকসেদুর রহমান ও আহসান হাবিবের মৌখিক পরীক্ষার সময় হাতের লেখার সাথে তাদের লিখিত পরীক্ষার হাতের লেখার অমিল পাওয়া যায়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নিয়োগের জন্য লিখিত পরীক্ষা প্রক্সির মাধ্যমে অন্যের দ্বারা দেওয়া হয়েছিল এবং এজন্য তারা মোটা অংকের টাকাও লেনদেন করেছেন বলে স্বীকার করেন। তাদের অন্য কাউকে দিয়ে লিখিত পরীক্ষা দেওয়া এবং অবৈধ আর্থিক লেনদেনের সাথে মুল হোতা হিসেবে বালিয়া ডাঙ্গির বেলাল হোসেনও জড়িত। এরপর কৌশলে তাকেও ডেকে এনে তিন জনকে পুলিশের হাতে সোর্পদ করা হয়। চলতি প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের লিখিত পরীক্ষায় ইংরেজী এবং বাংলায় কয়েক লাইন হাতে লেখার কথা বলা হয়। নিয়োগ পরীক্ষায় প্রক্সি দেওয়াসহ যে কোন অনিয়ম ঠেকাতে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্নদের কাগজপত্র জমা নেওয়া এবং মৌখিক পরীক্ষাতেও একই ভাবে লেখতে বলা হয়। এই প্রক্রিয়ায় নিয়োগের মৌখিক পরীক্ষায় বোর্ডের চেয়ারম্যান ও জেলা প্রশাসকের কাছে জালিয়াতির ঘটনাটি ধরা পরে।
পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ মিঞা বলেন, পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে দুই পরীক্ষার্থীসহ তিন জন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আটক ছিল। পরে থানায় খবর দিয়ে তাদের পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। রাতে তাদের থানায় আনা হয়। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ বোর্ডের চেয়ারম্যান ও জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম বলেন, লিখিত পরীক্ষায় হাতের লেখার সাথে মৌখিক পরীক্ষা নেওয়ার সময় তাদের হাতের লেখা দেখে প্রাথমিকভাবে আমাদের সন্দেহ হয়। পরে কৌশলে জিজ্ঞাসাবাদে তারা অন্য কাউকে দিয়ে লিখিত পরীক্ষা দিয়েছিলেন এবং এজন্য তারা মোটা অংকের অর্থ লেনদেন করেছেন বলেও স্বীকার করেন। শান্তিপুর্নভাবে সকলের পরীক্ষা শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের আটকে রাখা হয়। পরে কৌশলে তাদেও সহযোগি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় এমন জালিয়াতির মুল হোতা বেলাল হোসেনকে ডেকে এনে তিন জনকেই পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়। আমরা শুরু থেকে সবাইকে জালিয়াতি না করার জন্য সতর্ক করে আসছি। তার পরেও এমন ঘটনা ঘটানো হলো।