কুমিল্লার বুড়িচংয়ে তিল চাষে স্বপ্ন বুনছেন কৃষকরা
বাসস
প্রকাশিত: ১২:৩৩ পিএম, ২ জুলাই ২০২২ শনিবার
জেলার বুড়িচংয়ে পতিত জমিতে তিল চাষ করে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। আগে যেখানে বছরে দু’বার ধান চাষ হতো। এখন সেসব জমিতে পুরো বছরজুড়ে ধানের সাথে তিলও চাষ হচ্ছে। কম বিনিয়োগে তিল চাষে অধিক মুনাফা পাচ্ছেন কৃষকরা। এসব কারণে এখন তিল চাষে স্বপ্ন দেখছেন বুড়িচং উপজেলার পাহাড়পুর এলাকার কৃষকরা। সম্প্রতি দেশে তিলের উচ্চ ফলনশীল নতুন নতুন জাত উদ্ভাবন ও সেইসঙ্গে কৃষি বিভাগ মাঠ পর্যায়ে তিল চাষের প্রতি কৃষকদের উদ্বুদ্ধকরণের ফলে তিল চাষের ব্যাপারে আবারও কৃষকদের মাঝে আগ্রহ বাড়ছে। তারই ফলশ্রুতিতে কয়েক বছর ধরে তিলের আবাদ বাড়তে শুরু করেছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, কুমিল্লা জেলায় মেঘনা, হোমনা, দাউদকান্দি ও তিতাস উপজেলায় তিল চাষ হচ্ছে। তবে চলতি বছর বুড়িচং উপজেলার সীমান্তবর্তী ২২ বিঘা জমিতে তিল চাষ হয়েছে। বাম্পার ফলন হওয়ার কারণে কৃষকরা উৎসাহিত হচ্ছেন তিল চাষে।
নতুন করে তিল চাষ বাড়ার কারণ হিসেবে কৃষকরা জানায়, এক সময় দেশি জাতের তিলের চাষ করে অন্যান্য ফসলের তুলনায় তেমন একটা লাভ হতো না। তাই এলাকার মানুষ তিলের আবাদ প্রায় ছেড়েই দিয়েছিল। বর্তমানে দেশে উচ্চ ফলনশীল তিলের জাত উদ্ভাবন হওয়ায় ও কৃষি বিভাগের তদারকিতে আবারও মানুষ তিল চাষের দিকে ঝুঁকে পড়েছে। চলতি মৌসুমে এলাকায় টি-৬ ও বারী তিল-৪ জাতের তিলের আবাদ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে সব জাতের তিলেরই বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।
বুড়িচং বাজারের ভুষিমাল ব্যবসায়ী আব্দুর রহিম জানান, বর্তমান বাজারে প্রতিমণ তিল ১ হাজার ৫ শত টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বুড়িচং উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোসা. আফরিণা আক্তার বাসসকে বলেন, একজন কৃষক জমিতে তিল চাষ করে একাধারে নানারকম উপকার পেয়ে থাকেন। যেমন- তিল গাছের যেসব পাতা জমিতে পড়ে তা পচে মাটির সাথে মিশে সবুজ সারের কাজ করে তাতে জমির উর্বরাশক্তি বৃদ্ধি পায়। একই জমিতে কয়েক বছর তিলের আবাদ করলে অন্যান্য ফসলের আবাদ করতে রাসায়নিক সারের প্রয়োজন হয় না। তিনি আরও জানান, এ গাছের কান্ড অর্থাৎ ডাঁটা জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা যায়। তিল থেকে ভোজ্য তেল ও খৈল পাওয়া যায়। এ ফসলে তেমন কোন রোগ-বালাই নেই বলে খুব কম খরচে ও সহজ পদ্ধতিতে আবাদ করা যায়। পানি জমে না, একদিকে ঢালু, দো-আঁশ মাটি ও একটু উঁচু জমিতে তিল ভালো জন্মে। তিল আবাদ করে একটু যত্ন নিলেই প্রতি হেক্টর জমি থেকে দেড় মেট্রিক টনেরও বেশি ফলন পাওয়া সম্ভব।